যশোরের মণিরামপুরের রোহিতা ইউনিয়নে তিন দিনের ব্যবধানে ফের ডাকাতি সংগঠিত হয়েছে। এবার মাদ্রাসা পড়-য়া ছেলের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে ফের মাকে চোখ বেঁধে এ দুর্ধষ ডাকাতি হয়। এর আগে গত শুক্রবার একই ইউনিয়নের কোদলাপাড়া গ্রামে বেকারি ব্যবসায়ী মশিয়ারের বাড়ি ও ২৯ অক্টোবর নালের কান্দা গ্রামের কাশেম আলীর বাড়িতে ডাকাতি হয়।
রোববার রাত ১টার দিকে এ ইউনিয়নের সরসকাটি গ্রামের মোতালেব হোসেনের বাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। এ সময় সংঘবদ্ধ সশস্ত্র ডাকাতদল অস্ত্রের মুখে জিম্মি করে মোতালেব হোসেনের বাড়ি থেকে নগদ ৬০ হাজার টাকা ও স্বর্ণালংকার লুট করে। খবর পেয়ে পুলিশ ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছে। এ ঘটনার পর এলাকার মানুষের মাঝে ডাকাত আতঙ্ক বিরাজ করছে। তবে, পুলিশের দাবি এটি ডাকাতি নয়; চুরি। এদিকে একের পর এক ডাকাতি সংগঠিত হওয়ায় পুলিশের ভূমিকা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে।
সরসকাটি গ্রামের মোতালেব হোসেনের স্ত্রী নাজমা বেগম জানায়, তার স্বামী মোতালেব হোসেন ঢাকায় চাকরি করেন। ৮ম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে ইয়াসিন আরাফাত নয়নকে নিয়ে বাড়িতে থাকেন। রোববার রাত ১টার দিকে গ্রিলের তালা ভেঙে মূখে কালো কাপড় ও হাত-পায়ে কারো মোজা পরিহিত ৬-৭ জন ঘরে প্রবেশ করে। তারা ছেলের মাথায় পিস্তল ঠেকিয়ে জিম্মি করে ফেলে। এ সময় তাকে নিয়ে মাথায় পিস্তল ঠেকানো ছেলেকে দেখিয়ে ড্রয়ারের চাবি নেয়। তিনি দিতে না চাইলে তার হাতে লাঠি দিয়ে আঘাত করে। এরপর তিনি চাবি দিয়ে দিলে ৬০ হাজার টাকা ও ৪ আনা ওজনের স্বর্ণের কানের দুল নিয়ে যায়।
সরসকাটি ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য বিল্লাল হোসেন জানায়, ইউনিয়নে একরে পর ডাকাতি হওয়ার পর নিজেরাও মোড়ে মোড়ে পাহারা দেয়। এরইমধ্যে রাত ১টার দিকে মাঠ দিয়ে ৬-৭ জনের মুখোশধারী ডাকাত দল গ্রামের মোতালেব হোসেনের বাড়ির গেটের তালা ভেঙে ডাকাতি করেছে।
এদিকে এ নিয়ে গত এক মাসে রোহিতা ইউনিয়নে তিনটি ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে। শুক্রবার রাতে একই ইউনিয়নের কোদলাপাড়া গ্রামের মশিয়ার রহমানের বাড়িতে ডাকাতি সংঘটিত হয়। তাছাড়া, ভান্ডারি মোড় সংলগ্ন আবুল কাশেমের বাড়িতেও ডাকাতির ঘটনা ঘটে। গত ১৬ নভেম্বর পৌর এলাকার বিজয়রামপুর গ্রামের মাসুদ রায়হান লিটন নামে এক ব্যবসায়ী বাড়ি যাওয়ার পথে যশোর পল্লী বিদ্যুৎ সমিতি-২ এর সামনে পৌছুলে মুখোশধারি দুই অস্ত্রধারি বেকি দিয়ে কোপ দিয়ে ব্যাগ ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এক পর্যায় লিটন বেকি ধরে ফেলে তাদের সাথে ধস্তাাধস্তি করলে তাকে জখম করে বেকি ফেলে পালিয়ে যায়। এ ইউনিয়নটিতে পর পর তিনটি ডাকাতির ঘটনায় এলাকার সাধারণ মানুষকে ভাবিয়ে তুলেছে।
স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান হাফিজ উদ্দিন বলেন, পুলিশ ডিউটিরত অবস্থায় কিভাবে ডাকাতি হচ্ছে এটা ভাববার বিষয়। ডাকাতি ঠেকাতে প্রশাসন কোন কাজ করতে পারছে না।
থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) শেখ মনিরুজ্জামান সরসকাটি মোতালেব হোসেনের বাড়ির ঘটনাকে বিচ্ছিন্ন ঘটনা দাবী করে বলেন, খবর পেয়ে তারা ওই বাড়িতে পরিদর্শনে যান। তদন্ত করে যা মনে হয়েছে সেটি চুরির ঘটনা।