পাবর্ত্য জেলা খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্পে সম্ভাবনার নতুর দ্বার উন্মোচিত হলো সবুজ অরণ্য আর নীল জলাশয়ে ঘেরা নবনির্মিত ‘মানিকছড়ি ডিসি পার্ক’এর অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন এর মধ্য দিয়ে।।
সোমাবর সকাল ১০টায় পার্কের মূল পটক সংলগ্নে নির্মিত কটেজ ও অভ্যন্তরে নির্মিত ‘অরণ্যকুঠির’ রিসোর্টের নাম ফলক উন্মোচন ও ফিতা কেটে পার্কের বিভিন্ন অবকাঠামোগত উন্নয়ন কাজের উদ্বোধন করেন খাগড়াছড়ি জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস। উদ্বোধন শেষে পার্কের দৃষ্টিনন্দন লেক, সিঁড়ি, বিশ্রামাগার, কটেজ ও অরণ্যকুঠির রিসোর্টসহ নানা অবকাঠামো পরিদর্শন করেন। পরে উপজেলা প্রশাসন আয়োজিত উদ্বোধনী সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান উপভোগ শেষে বক্তব্য রাখেন জেলা প্রশাসক।
এসময় জেলা প্রশাসক প্রতাপ চন্দ্র বিশ্বাস বলেন, ‘উপজেলার এই প্রত্যন্ত জনপদে বেদখলে থাকা বিশাল সরকারি সম্পত্তি উদ্ধার ও এটিকে রাষ্ট্রীয় সম্পদে পরিণত করে পর্যটক বান্ধব প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছে। পার্কের সুন্দর্যবর্ধনে ইতোমধ্যে বেশকিছু অবকাঠামো নির্মাণ করা হয়েছে। ভবিষ্যতে যাতে এই পার্কটি জেলার অন্যতম পার্ক হিসেবে পরিচিতি পায় সে লক্ষে কাজ করছে জেলা প্রশাসন। পার্কটিকে পর্যটনবান্ধব করতে পরিকল্পনা অনুযায়ী মাস্টারপ্লান প্রস্তুত করা হয়েছে। এই পর্যটন শিল্পকে ঘিরে পরিকল্পিত মাস্টারপ্লান বাস্তবায়ন হলে খাগড়াছড়ির পর্যটন শিল্পে এটি নতুন চমক হিসেবে ভ্রমণপিপাসু মানুষের নজর কাড়বে’।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে মানিকছড়ি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা রক্তিম চৌধুরী, সহকারি কমিশনার (ভূমি) রুম্পা ঘোষ, থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. শাহনূর আলম, ইউপি চেয়ারম্যান শফিকুর রহমান ফারুক, আবুল কালাম আজাদ, ক্যয়জরী মহাজন, আবদুর রহিম ও সরকারি বিভিন্ন দফ্তরের প্রধান, ইউপি সচিবগণসহ জনপ্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।
উল্লেখ্য, ৩ যুগের অধিক সময় বেদখলে থাকা জেলার মানিকছড়ি উপজেলার ডলু এলাকার ১৪০.২০একর সবুজ অরণ্যেঘেরা পাহাড়ের ডালে-অপডালে ৬.৪৪ একর নিচু ভূমিতে রয়েছে ৩টি লেক, সহ¯্রাধিক রাবার গাছ, আম, জাম কাঠাঁলসহ নানা প্রজাতির অসংখ্য ফলদ-বনজ বৃক্ষরাজির সমাহার। যেদিকে দৃষ্টি যাবে নয়নজুড়িয়ে আসবে যে কারো।
এছাড়া পাহাড়ে আঁড়ালে আঁড়ালে লেকের পাড়ে দেখা মিলবে বনো ডাহুক, পানি ও আকাশে দেখা মিলবে পাতিহাঁসের টহল, মাঝে মাঝে কানে ভেসে আসবে হরিণের ডাক। এ ছাড়া বানর, হনুমান, গন্ধকগোকুলসহ বিরল প্রজাতির প্রাণির অস্তিত্ব রয়েছে এই অঘোর বনে। এ যেন এক অচেনা পরিবেশে প্রশান্তির ছায়া। পর্যটক বিশ্লেষকরা বলছেন, এই বিশাল অরণ্যে প্রাকৃতিক সম্পদকে অপরিবর্তিত রেখে বিশ্বমানের ইকোটোরিজাম জোন হিসেবে এই ডিসি পার্ককে গড়ে তোলা গেলে এটি হবে পার্বত্য জেলার অন্যতম পর্যটনকেন্দ্র।