দীর্ঘ ৯বছর পর কাল শনিবার (৩ ডিসেম্বর) নোয়াখালীর সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের ত্রি-বার্ষিক সম্মেলন। ইতোমধ্যে সম্মেলনকে ঘিরে গেইট, পোষ্টার, পেষ্টুন, ব্যানার ও বিলবোর্ডে চেয়ে গেছে সেনবাগ পৌরশহর সহ উপজেলা আনাছে কানাছে। সম্মেলনকে কেন্দ্র করে পাড়া,মহল্লা হাট বাজারের চায়ের দোকানে ও আড্ডায় নানা গুনঞ্জন চলছে কে হচ্ছে আওয়ামী লীগের সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদক। এখানে সভাপতি হিসাবে নোয়াখালী-২ সেনবাগ আসনের এমপি আলহাজ্ব মোরশেদ আলম ও উপজেলা চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আহম্দে চৌধুরী এবং সেক্রেটারী হিসেবে শিল্পপতি লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিকের নাম বেশ আলোচিত হচ্ছে। ছাড়াও বাহাব উল্লাহ বাহার, শওকত হোসেন কানন, গোলাম কবির, আবু জাফর টিপু ও আলী আক্কাস রতনের নামও শোনা যাচ্ছে।
ত্রি-বার্ষিক সম্মেলনে প্রধান অতিথি থাকার কথা রয়েছে আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদর হুইপ আবু সাঈদ আল মাহমুদ স্বপন, বিশেষ অতিথি আওয়ামী লীগের কৃষি ও সমবায় সম্পাদক ফরিদুন্নাহার লাইলী এবং আওয়ামী লীগের ত্র্যান ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক সুজিত রায় নন্দী সহ জেলা ও উপজেলা পর্যায়ের নেতাকর্মীরা। জানাগেছে, বিগত ২৬ এপ্রিল ২২ইং মঙ্গলবার সন্ধ্যায় নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আনম খায়রুল আলম চৌধুরী সেলিম, যুগ্ম আহ্বায়ক অ্যাডভোকেট শিহাব উদ্দিন শাহীন ও মোঃ সহিদ উল্যাহ খান সোহেল স্বাক্ষরিত এক পত্রে
নোয়াখালী-২ সেনবাগ সোনাইমুড়ী আংশিক আসনের এমপির আলহাজ্ব মোরশেদ আলমকে আহ্বায়ক ও সেনবাগ উপজেলার পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ্ব জাফর আহম্মদ চৌধুরীকে যুগ্ম আহ্বায়ক এবং নোয়াখালী জেলা আওয়ামী লীগের সাবেক শিল্পও বানিজ্য বিষয়ক সম্পাদক শিল্পপতি লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিক, সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক বাহার উল্লাহ বাহার, সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সম্মেলন প্রস্তুতি পরিষদের আহ্বায়ক শওকত হোসেন কানন এবং সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর টিপুকে যুগ্ম আহ্বায়ক করে ৬৩ সদস্য বিশিষ্ঠ আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করে।
এরপর ওই কমিটি থেকে উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সভাপতি আলহাজ্ব জাফর আহম্মদ চৌধুরী ও সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাবেক সেক্রেটারী আবু জাফর টিপু পদত্যাগ করেন। এরপর শিল্পপতি লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিককে যুগ্ম আহ্বায়ক করে কমিটি ঘোষণা করা হয়। এরপর কমিটির আহ্বায়ক এমপি মোরশেদ আলম ও যুগ্ম আহ্বায়ক লায়ন জাহাঙ্গীর আলম মানিকের নেতৃত্বে কাউন্সিলের মাধ্যমে একটি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের ১৩৫০০ কাউন্সিলরের মাধ্যমে ৯০টি ওয়ার্ডের সভাপতি ও সম্পাদক নির্বাচন করা হয়। ওই কাউন্সিলরের মাধ্যমে ইউনিয়ন সম্মেলন শেষ করে ৩০ ডিসেম্বর উপজেলা সম্মেলন করার কথা থাকলেও ওই সম্মেলন এগিয়ে ৩ডিসেম্বর নির্ধারণ করা হয়। এতে ৩ ডিসেম্বরের সম্মেলন কাউন্সিলদের ভোটাভুটিতে না হয়ে প্রস্তাব সমর্থনের ভিত্তিতে হচ্ছে বলে একাধিক সুত্র নিশ্চিত করেছেন।
৩ডিসেম্বরের সম্মেলনে স্থানীয় এমপি আলহাজ্ব মোরশেদ আলম সভাপতি নির্বাচিত হচ্ছেন এটি অনেকটা নিশ্চিত। তবে,সম্মেলনে সেক্রেটারী পদ নিয়ে শুরু হয়েছে নানা গুঞ্জন। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচনে মনোনয়ন নিয়ে রাজনীতিন কারণে এখানে জনপ্রিয় অর্থ ও বিত্তশালী নেতাদের বাদ দিয়ে তুলণামূলক দূর্ভল নেতাকে সেক্রেটারী বানানো হবে বলে এমন গুঞ্জন বর্তমানে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেজবুক সহ পুরো সেনবাগ জুড়ে সর্বত্র আলোচিত হচ্ছে। তবে, পদ প্রত্যাশিরাও তাদের কাঙ্খিত পদ পেতে কেন্দ্রীয় নেতাদের দারস্ত হচ্ছেন বলে শোনা যাচ্ছে। উল্লেখ্য ২০১৩ সালে কাউন্সিলদের প্রত্যক্ষ ভোটাভুটিতে আলহাজ্ব জাফর আহম্মদ চৌধুরী সভাপতি ও আবু জাফর টিপু সেনবাগ উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়েছিলেন। এরপর তাদের দুইজনের অনুসারিদের কমিটিতে স্থান দেওয়া নিয়ে দ্ব›েদ্ধর কারণে ওই সময় পূনাঙ্গ কমিটির ঘোষণা করা হয়নি। এরপর সাধারণ সম্পাদক আবু জাফর টিপু ২০১৫ সালের ২৯ জানুয়ারী তাকে পদ থেকে অব্যহতি অথবা সভাপতি জাফর আহম্মদ চৌধুরী বহিস্কার করার দাবী জানিয়ে জেলা ও কেন্দ্রীয় কমিটির নিকট পদত্যাগ পত্র প্রেরণ করলে সেনবাগে শুরু হয় নেতৃত্বে শুন্যতা। দীঘ ৯ বছর যাবত বেশ কয়েক বার আওয়ামী লীগের সম্মেলন করার জন্য প্রস্তুতি পরিষদ ও আহ্বায়ক কমিটি গঠন করা হলেও কোন কমিটির আলোর মুখ দেখিনি।
অবশেষে আগামী শনিবার ৩ডিসেম্বর সেনবাগ সরকারি পাইলট উচ্চবিদ্যালয় মাঠে সম্মেলন অনুষ্ঠানের সকল প্রস্তুতি সম্পন্ন হয়েছে।