পাবনার সুজানগরে দুর্বিষহ ভাসমান জীবনের অবসান ঘটেছে উপজেলার বিভিন্ন গ্রামের ৯৬টি ছিন্নমূল ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবারের। মুজিববর্ষ উপলক্ষে প্রতিটি পরিবার প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ২শতাংশ নিষ্কণ্টক জমি ও ১টি করে সেমিপাকা ঘর পাওয়ায় তাদের ভাসমান ওই জীবনের অবসান ঘটেছে। সেই সঙ্গে ওই সকল পরিবার স্থায়ীভাবে বসবাস করার সুযোগ পেয়ে তাদের সন্তানাদিকে লেখাপড়া শেখানোর পাশাপাশি ব্যবসা-বাণিজ্য করে হতদরিদ্র জীবনের মোড় ঘুরানোর চেষ্টা করছেন।
সুজানগর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ তরিকুল ইসলাম জানান, দরিদ্রবান্ধব, দেশ প্রেমিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার কার্যালয়ধীন আশ্রয়ণ প্রকল্পণ্ড প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ের আওতায় সমাজের হতদরিদ্র ভূমিহীন ও গৃহহীন ভাসমান পরিবারকে পুনর্বাসনের অংশ হিসেবে উপজেলার ভায়না, সাতবাড়ীয়া, মানিকহাট, সাগরকান্দী ও আহম্মদপুর ইউনিয়নে ৯৬টি সেমিপাকা ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এর মধ্যে ভায়না ইউনিয়নের হেমরাজপুর গ্রামে ২০টি, কাঠালবাড়ীয়া গ্রামে ১৩টি, মঠপাড়া গ্রামে ১৩টি, সাতবাড়ীয়া ইউনিয়নের কালিমন্দির এলাকায় ৭টি, কাকিয়ান গ্রামে ৬টি, মানিকহাট ইউনিয়নের গাবগাছি গ্রামে ২২টি, সাগরকান্দী ইউনিয়নের সিন্দুরিয়া বড়-রিয়া গ্রামে ১১টি ও আহম্মদপুর ইউনিয়নের নতুন বাজার এলাকায় ৪টি ঘর নির্মাণ করা হয়েছে। এ ছাড়া চতুর্থ পর্যায়ে উপজেলার ভায়না, সাতবাড়ীয়া এবং মানিকহাট ইউনিয়নে আরো ৫০টি ঘর নির্মাণাধীন রয়েছে। ইতোমধ্যে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সারাদেশে আনুষ্ঠানিকভাবে প্রথম, দ্বিতীয় ও তৃতীয় পর্যায়ে নির্মিত ঘর উদ্বোধন করার পর ওই ৯৬টি ঘরে ৯৬টি ভূমিহীন ও গৃহহীন পরিবার শান্তিপূর্ণভাবে এবং সুন্দর পরিবেশে বসবাস করছেন। তারা ২শতাংশ নিষ্কণ্টক জমির উপর নির্মিত দুই কক্ষ বিশিষ্ট ওই ঘরে বসবাসের সুবিধা ছাড়াও রান্না এবং বাথ রুমের সুবিধার পাশাপাশি আরও পাঁচ্ছেন নিরাপদ ও সুপেয় পানি পানের সুযোগ। হেমরাজপুর আশ্রয়ণ প্রকল্পের বাসিন্দা কাদের শেখ বলেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার দেওয়া উপহারের ওই ঘর পাওয়ার আগে আমার মতো ভূমিহীন ও গৃহহীন মানুষের স্থায়ী কোন ঠিকানা ছিলনা। আমরা কখনও মুজিব বাঁধের পাশে আবার কখনও আত্মীয়-স্বজনের বাড়িতে অনিশ্চিত মানবেতর জীবন যাপন করতাম। কিন্তু বর্তমানে আমরা প্রধানমন্ত্রীর দেওয়া উপহারের ঘরে স্থায়ীভাবে মাথা গোঁজার ঠাঁই পেয়ে সেই দুর্বিষহ ভাসমান অনিশ্চিত মানবেতর জীবন থেকে মুক্তি পেয়েছি। সেই সঙ্গে আমরা এখানে থেকে আমাদের সন্তানাদিকে স্থানীয় শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে লেখাপড়া শিখিয়ে মানুষ করার পাশাপাশি নিজেরা ব্যবসা বাণিজ্য করে স্বাবলম্বী হওয়ার চেষ্টা করছি।