খুলনার পাইকগাছায় ইট ভাটা-কয়লার চুল্লী ও টালি কারখানায় দেদারচ্ছে পুড়ছে কাঠ। নির্বিচারে উজাড় হচ্ছে বৃক্ষরাজীসহ খেজুর গাছ। উপজেলার হরিঢালী, কপিলমুনি ও রাড়-লী টালি কারখানায় ইট তৈরীতে নির্বাধায় পুড়ছে কাঠ। এদিকে বসে নেই উপজেলার ইট ভাঁটা গুলো। সমানতালে চাঁদখালী ইউনিয়নে প্রায় একশত চুল্লিতে কাঠ পুড়িয়ে বানানো হচ্ছে কয়লা। এ নিয়ে মিডিয়ায় বিভিন্ন সময় খবর প্রকাশ হয়। পরিবেশ অধিদপ্তর ভ্রাম্যমাণ আদালতের মাধ্যমে চাঁদখালীতে গত সেপ্টম্বর ৫টি কয়লার চুল্লী ধ্বংস করেন। অবৈধ চুল্লি ধ্বংস বা বন্ধে অভিযান পরিচালনা করেন খুলনা বিভাগীয় পরিবেশ অধিদপ্তরের উপণ্ডপরিচালক ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রট মো. আসিফুর রহমান। এসময়ে চুল্লির আগুন নেভানোর জন্য পার্শ্ববর্তী উপজেলা আশাশুনি ফায়ার সার্ভিস, স্থানীয় থানা পুলিশ ও আনসার সদস্যদের সহযোগিতা নেওয়া হয়। উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী অফিসার মমতাজ বেগম, জেলা সহকারী পরিচালক মো. আবু সাঈদ, জেলা পরিদর্শক মো. মারুফ বিল্লাহ ও উপজেলা এপিসি মো. আনোয়ার হোসেন প্রমুখ। এসময়ে স্কেভেটর দিয়ে ৫টি চুল্লী ধ্বংস করা হয়। চুল্লী গুলো বন্ধ করতে নির্দেশনা দেওয়া হয়। মানবিক কারণে ১ মাসের মধ্যে সম্পূর্ণ কার্যক্রম বন্ধ ও অপসারণ করার শর্তে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান শাহাজাদা ইলিয়াস মুচলিকা দেওয়ায় কর্তৃপক্ষ বিবেচনায় নেন। এক মাসের পরিবর্তে ৩ মাস সময় অতিবাহিত হলেও চুল্লী বন্ধ না করে উল্টো পুরোদমে চলছে। আর সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ নিরব। উল্লেখ্য, একটি চুল্লিতে প্রতিবার ২০০ থেকে ৩০০ মন পর্যন্ত কাঠ পোড়ানো হয়। প্রতিবার কমপক্ষে ২৫ হাজার মন কাঠ পোড়ানো হয়। প্রতিমাসে প্রত্যেকটি চুল্লিতে ৩ থেকে চারবার কাঠ পুড়িয়ে কয়লা করা হয়। ফলে প্রতিমাসে কয়লার চুল্লিতে ৮০ হাজার থেকে ১ লক্ষ মন কাঠ পোড়ানো হয়। ফলে ধ্বংস হচ্ছে প্রাকৃতি সহ সামাজিক বন। মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে পরিবেশের। বিষাক্ত ধোঁয়ায় এলাকায় বিভিন্ন রোগ ছড়িয়ে পড়ছে। কপিলমুনি হরিঢালী, রাড়-লী টালির কারখানায় চলছে কাঠ দিয়ে ইট পোড়ানোর মহাউৎসব। টালি বা ইট পোড়ানোর জন্য নেই কোনো ধরনের লাইসেন্স। কপিলমুনি ফাইভ স্টার টালি কারখানার মালিক কালিপদ পাল এর ভাই বলেন, চল্লিশ বছর ধরে কোনো লাইসেন্স ছাড়াই কারখানা চলছে। স্থানীয় নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি বলেন, টালির কারখানায় ইট পোড়ানোর বিষয়ে কেউ কোনো প্রতিবাদ করলে সে সব কিছু ম্যানেজ করে ফেলে, তাই আমরা কিছু বলতে সাহস পাইনা। তার থেকে নিরব থাকায় ভালো। নির্বিচারে বৃক্ষ নিধন, প্রকৃতি ধ্বংসসহ মানুষ স্বাস্থ্য ঝুঁকির মধ্যে থাকলেও অদৃশ্য কারণে কর্তৃপক্ষ্য নিরব। চাঁদখালী চুল্লী কারখানাসহ উপজেলার ইট ভাঁটা ও টালী কারখানায় সমানতালে কাঠ পোড়ানো হচ্ছে।