এবছর যে পরিমাণ শিক্ষার্থী এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে তার চেয়ে প্রায় ৭ লাখ বেশি আসন (সিট) রয়েছে এইচএসসির জন্য। সুনির্দিষ্ট নিয়মে প্রতিবারের মতো এবারের এইচএসসির ভর্তি পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। তাই যেসব শিক্ষার্থী এসএসসিতে উত্তীর্ণ হয়েছে তাদের ভর্তি পরীক্ষার প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হওয়ার কোনো সুযোগ নেই। সবাই সিট পাবে। সোমবার দুপুরে চাঁদপুর আউটার স্টেডিয়ামে আয়োজিত মুক্তিযুদ্ধের বিজয় মেলার উদ্বোধন শেষে সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনি এসব কথা বলেন। মন্ত্রী বলেন, আমাদের দেশের বেশ কিছু প্রতিষ্ঠান আছে যেগুলো এদেশের সেরা মেধাবীদের নিয়ে তাদের প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করে। মেধাবী শিক্ষার্থীগুলো যখন সবাই এক জায়গায় যায় তখন তাদের প্রচেষ্টায়, বাবা-মায়ের প্রচেষ্টায় ও শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের প্রচেষ্টায় আরও ভালো ফলাফল করে। সেক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠানের খুব মহত্ত্ব আছে বলে আমার মনে হয় না। ডা. দীপু মনি বলেন, ভর্তি প্রতিযোগিতায় ব্যর্থ হওয়ার সুযোগ নেই। অনেক সিট রয়েছে। আমাদের সব শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে প্রশিক্ষিত এবং যোগ্য শিক্ষক রয়েছে। সন্তানকে নামীদামী প্রতিষ্ঠানে ভর্তি করানোর চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ তার প্রতি খেয়াল রাখা। আমরা সবাই যদি আমাদের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করি তাহলে তারা তাদের ভবিষ্যৎ গড়তে পারবে। তিনি আরও বলেন, দেশের ৫০টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে একজন শিক্ষার্থীও পাস করতে পারল না কেন? সে বিষয়টি খতিয়ে দেখা হচ্ছে। তারা যাতে ভবিষ্যতে ব্যর্থ না হয় সেজন্য তাদের প্রয়োজন অনুযায়ী সাপোর্ট দেওয়ার চেষ্টা করছি। শিক্ষামন্ত্রী বলেন, বঙ্গবন্ধুকন্যা প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বের কারণে আজ বাংলাদেশের এত উন্নয়ন ও অগ্রগতি। কিন্তু দেশের যারা গুজব ছড়াচ্ছে, দেশকে অস্থিতিশীল করার চেষ্টা করছে এবং আবার নাশকতা করার পাঁয়তারা করছে, তাদের রুখে দিতে হবে। মন্ত্রী বলেন, আজ আমরা বিজয়মেলা মঞ্চ থেকে সেই প্রত্যয় ঘোষণা করতে চাই, যে লক্ষ্য নিয়ে মুক্তিয্দ্ধু হয়েছিল, ৩০ লাখ মানুষ অকাতরে প্রাণ দিলেন, এত নারী নির্যাতিত হলেন এবং দেশটা ধ্বংস্তূপে পরিণত হলো, সেই লক্ষ্য অর্জনের পথ থেকে আমরা কখনো বিচ্যুত হবো না। দীপু মনি বলেন, যার নেতৃত্বে দেশ পরিচালিত হচ্ছে, যিনি মায়ের মমতায় দেশটি পরিচালনা করছেন, যার মনের মধ্যে বীর মুক্তিযোদ্ধাদের প্রতি শ্রদ্ধা, এদেশের প্রতিটি মানুষের প্রতি ভালোবাসা, যিনি দারিদ্র্য বিমোচনে বিশ্বের সফল একজন রাষ্ট্রনায়ক, যিনি মানুষের এবং নারীর ক্ষমতায়নে, শিক্ষায় ও স্বাস্থ্যের অগ্রগতিতে, শিল্পায়নে, বিদ্যুৎ উৎপাদনে, যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে, দুর্যোগ মোকাবিলায়, বৈশ্বিক উষ্ণায়ন মোকাবিলায় বিশ্বের সফলতম একজন রাষ্ট্রনায়ক। তার হাতে আছে দেশ। অতএব আমাদের ভয়ের কিছু নেই। তিনি বলেন, আমাদের অতীতের গৌরবগাথা যেমন মনে রাখব, তেমনি অতীতে কার কী অপকর্ম ছিল, তাও যেন আমরা মনে রাখি। কোন অপশক্তি বার বার আমাদের পিছু টেনে ধরেছে, কারা আমাদের অগ্রগতিকে বার বার বাঁধাগ্রস্ত করে, কারা আমাদের মানুষের ওপর অত্যাচার নির্যাতন করেছে, তাদের চিনতে হবে এবং জানতে হবে। তাদের ব্যাপারে সতর্ক থাকতে হবে। প্রয়োজনে তাদের রুখে দিতে হবে এবং আমাদের উন্নয়ন ও অগ্রগতিকে এগিয়ে নিতে হবে। মেলা কমিটির চেয়ারম্যান যুদ্ধাহত বীর মুক্তিযোদ্ধা এম এ ওয়াদুদের সভাপতিত্বে বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন জেলা প্রশাসক কামরুল হাসান ও পুলিশ সুপার মো. মিলন মাহমুদ, জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ওচমান গণি পাটওয়ারী। মেলার মহাসচিব হারুন আল রশিদের সঞ্চালনায় শুভেচ্ছা বক্তব্য দেন চাঁদপুর পৌরসভার মেয়র মো. জিল্লুর রহমান জুয়েল। এর আগে স্থানীয় শিল্পীদের শত কণ্ঠে জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে শিক্ষামন্ত্রীসহ অতিথিরা জাতীয় পতাকা ও মুক্তিযোদ্ধা সংসদের পতাকা উত্তোলন করেন। পরে বেলুন ও ফেস্টুন উড়িয়ে মেলার সূচনা করেন তারা। এ ছাড়া মন্ত্রী অতিথিদের নিয়ে মেলায় স্থান পাওয়া বীর মুক্তিযোদ্ধাদের সংরক্ষিত স্মৃতি পরিদর্শন করেন।