মঙ্গলবার বিকেলে যশোরের কেশবপুরের হাসানপুর বাজারে হাসানপুর ইউনিয়ন পরিষদের সরকার দলীয় চেয়ারম্যান তৌহিদুজ্জামান তৌহিদ এর ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার প্রতিবাদে অনাস্থা আনা ৭ ইউপি সদস্যের আয়োজনে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছে। অপরদিকে চেয়ার¤্রানের পক্ষ নিয়ে বুলবুল হোসেন নামের একজন ইউপি মেম্বার এর নের্তৃত্বে ১৫ /২০ জন তাদের উপর চড়াও হয় এবং উত্তেজনা দেখা দেয়। খবর পেয়ে বিট পুৃলিশ অফিসার এস আই বিদুস কুমার ঘঁনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনেন। পরবর্তীতে সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
অভিযোগ পাঠকালে ইউপি মেম্বার হেকমত আলী উল্লেখ করেন যে, কেশবপুর শহরের বাসিন্দা দলিল লেখক তৌহিদুজ্জামান নৌকা প্রতিক নিয়ে হাসানপুর ইউনিয়নে বিজয়ী হন। তিনি হাসানপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানের দায়িত্ব গ্রহণের পর থেকে ব্যাপক অনিয়ম, দুর্নীতি ও সরকারি রাজস্ব আত্মসাত করে চলেছেন। যার কারণে ইউনিয়নবাসি অতিষ্ঠ। নিয়ম নীতির তোয়াক্কা না করে তিনিস্বেচ্ছাচারিতার মাধ্যমে চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালনের নামে একনায়কতন্ত্র কায়েম করে চলেছেন। তিনি ইউনিয়ন পরিষদে ঠিকমত অফিস করেন না বলেই জনগণকে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে। ইউনিয়ন পরিষদের মাসিক, ত্রৈমাসিক বা ষান্মাসিকসহ কোন সভা তিনি করেন না। এমনকি পরিষদের উন্নয়নমূলক কর্মকা-ে নিজের ইচ্ছামত প্রকল্প গ্রহণ করে নিজেই বাস্তবায়নের নামে আত্মসাত করছেন। সরকারের অতি-দরিদ্রদের জন্য কর্মসৃজন কর্মসূচীর ৩ দিনের কাজ কম করে তিনি ওই ইউনিয়নের ২৪৯ জন শ্রমিকের (দৈনিক ৪‘শ টাকা হারে) ৯৯ হাজার ৬‘শ টাকা আত্মসাত করেছেন। ফলে ইউনিয়নে কর্মসৃজন কর্মসূচীর কাজ মুখ থুবড়ে পড়ার উপক্রম হয়েছে। এমনকি ইউনিয়ন পরিষদের আদায়কৃত রাজস্ব ব্যাংকে জমা রাখার নিয়ম থাকলেও তিনি তা অমান্য করে স্বাধীনভাবে খরচ করে চলেছেন। ফলে ইউপি সদস্যরা সরকারি ভাতা থেকে দীর্ঘদিন বঞ্চিত রয়েছেন। তিনি পরিষদের সনদ বা প্রত্যয়ন থেকে আদায়কৃত অর্থ রশিদ ছাড়াই প্রদান করে আত্মসাত করছেন।
ওই দুর্নীতিবাজ চেয়ারম্যান ইউনিয়নের জন্য বরাদ্দকৃত ১৬২টি ভিজিডি কার্ডের মধ্যে মেম্বারদের জন্য ২টি করে রেখে অবশিষ্ট কার্ড উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ও উপজেলা মহিলা বিষয়ক কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে হাতিয়ে নিয়ে মোটা অংকের টাকায় হতদরিদ্রদের মাঝে বিতরণ করেছেন। ইউনিয়ন পরিষদের মহিলা উদ্যোক্তা মাতৃত্বকালিন ছুটিতে থাকা অবস্থায় তার স্থালে চেয়ারম্যানের এক নিকটাতœীয়কে নিয়োগ দিয়েছেন। ফলে গোপণ ওয়েব সাইটটি বাইরে প্রকাশ হয়ে ইউনিয়ন পরিষদের গোপনীয়তা নষ্ট হচ্ছে। সরকারের এলজিএসপি, টিআর, কাবিখা, কাবিটার বরাদ্দের সিংহভাগই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নাম ভাঙিয়ে হাতিয়ে নিয়ে আত্মসাত করে চলেছেন।
অনুমতি ছাড়া কোন জনগণ চেয়ারম্যানের সাথে সাক্ষাত করতে পারে না। এতে প্রবীন আওয়ামী লীগের মধ্যে ক্ষোভ বিরাজ করছে।
অনাস্থাপত্রে ও সাংবাদিক সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন ইউনিয়নের ১নং প্যানেল চেয়ারম্যান আবদুর রশিদ, মেম্বার এসএম হেকমত আলী, কল্লোল কুমার দাস, আরফাজুল সরদার, কামরুজ্জামান, আশরাফুজ্জামান ও রুবিয়া খাতুন।