নওগাঁর নিয়ামতপুরে কোর্টের আদেশ অমান্য করে বরেন্দ্র বহুমুখী উন্নয়ন প্রকল্প বিএমডিএ এর একটি গভীর নলকূপের সেঁচ এলাকায় রাতের আঁধারে অবৈধ অগভীর নলকূপ খনন করার অভিযোগ করা হয়েছে।
উপজেলার চন্দননগর ইউনিয়নের নটিপুকুর মৌজায় ২০০৩ সালে বিএমডিএ কয়েক লক্ষ টাকা ব্যয় করে একটি গভীর নলকূপ স্থাপন করে। এই নলকূপের আওতায় কমপক্ষে তিনশ’ বিঘা জমিতে সেঁচ দেয়া হয়। এর এক হাজার সাতশ’ ফুটের মধ্যে কোন অগভীর নলকূপ স্থাপন নিষিদ্ধ করা হয়। কিন্তু উপজেলা সেঁচ কমিটি সম্প্রতি এই গভীর নলকূপ থেকে মাত্র আটশ’ ফুটের মধ্যে একটি বিদ্যুৎচালিত অগভীর নলকূপ এসটিডব্লিউ বসানোর অনুমোদন দেয়। বিষয়টি জানতে পেরে ওই গভীর নলকূপের অপারেটর নটিপুকুর গ্রামের মৃত জুলু মোল্লার ছেলে হযরত আলী ওই এসটিডব্লিউ এর অনুমোদন বাতিলের আবেদন জানান। গভীর নলকূপের সেঁচ এলাকায় অন্য কোন অগভীর নলকূপ স্থাপন করা হলে সরকারের রাজস্ব কম হবে উল্লেখ করে বিএমডিএ গত ৪ ডিসেম্বর অগভীর নলকূপের অনুমোদন বাতিল করে। কিন্তু উপজেলার ছাতড়া গ্রামের মৃত আশরাফ আলীর ছেলে ইউনুস আলী (৫০) ও ভুদু (৪৫) এবং ধর্মপুর গ্রামের মৃত মোবারক আলীর ছেলে নয়ন (৩২) সেখানে অগভীর নলকূপ স্থাপনের উদ্যোগ নেন। ওই গভীর নলকূপের অপারেটর হযরত আলী তাদের বিরুদ্ধে নওগাঁর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিষ্ট্রেটের আদালতে একটি নিষেধাজ্ঞার মামলা দায়ের করলে বিজ্ঞ বিচারক ওই স্থানে শান্তি-শৃঙ্খলা বজায় রাখার জন্য নিয়ামতপুর থানা পুলিশকে নির্দেশ দেন। থানার এসআই আরিফুল ইসলাম এ ব্যাপারে গত ৫ ডিসেম্বর উভয়পক্ষকে নোটিশ দেন। অপারেটর হযরত আলী অভিযোগ করেন যে, বিএমডিএ এর এবং কোর্টের আদেশ অমান্য করে প্রতিপক্ষরা গত ১০ ও ১১ ডিসেম্বর গভীর রাতে সেখানে অগভীর নলকূপটির খনন কাজ করে। এ ব্যাপারে ৯৯৯ নম্বরে কল করলে পুলিশ এসে খনন কাজ বন্ধ করে দেন। কিন্তু পরবর্তীতে আবার তারা খনন সম্পন্ন করে। তিনি অবিলম্বে এই অবৈধ অগভীর নলকূপটি অপসারণের দাবী জানান।
জানতে চাইলে অভিযুক্ত নয়ন জানান, তারা প্রকল্পের অনুমোদন নিয়েই অগভীর নলকূপটি খনন করেছেন। কিন্তু রাতের আঁধারে খননের ব্যাপারে তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
বিএমডিএ এর নিয়ামতপুর জোনের সহকারী প্রকৌশলী হারুন-অর-রশিদ জানান, ভূলক্রমে উপজেলা সেঁচ কমিটি ওই অগভীর নলকূপের অনুমোদন দিলেও পরে তা বাতিল করা হয়। ওই স্থানে এসটিডব্লিউ এর বিদ্যুৎ সংযোগ না দেয়ার জন্য গত ৪ ডিসেম্বর পল্লী বিদ্যুতের নিয়ামতপুর জোনাল অফিসের ডেপুটি জেনারেল ম্যানেজার বরাবর একটি পত্রও দেয়া হয়েছে। তবে এটি অপসারণের উদ্যোগ নেয়া হবে কিনা সে ব্যাপারে তিনি কিছু বলতে পারেননি।
নিয়ামতপুর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) মো: আসাদুজ্জামান জানান, কোর্টের নিষেধাজ্ঞার চিঠি পাবার পরও সেখানে অগভীর নলকূপ খননের খবর পাবার সাথে সাথেই গভীর রাতে থানা পুলিশ ঘটনাস্থলে গিয়ে কাজ বন্ধ করে দেয়। এখন এ বিষয়ে আদালতই পরবর্তী সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবেন।