বাগেরহাটের শরণখোলায় সোনালী ধানের শীষে দুলছে কৃষকের স্বপ্ন। মাঠজুড়ে নতুন ধানের মৌ মৌ গন্ধে এখন চারদিক মুখরিত হয়ে উঠছে। বাম্পার ফলন ও দাম ভালো থাকায় কৃষকদের চোখে মুখে হাসির ঝিলিক দেখা গেছে। কৃষকরা ধান কাটা মাড়াই এবং গোলায় তুলতে ব্যস্ত সময় পার করছেন। পাশাপাশি ঘরে ঘরে চলছে নবান্নের উৎসব।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্র জানায় এ বছর উপজেলায় প্রায় ৭০ হাজার বিঘা জমিতে আমনের চাষ হয়েছে। ধানের মধ্যে রয়েছে ব্রি ধান ৩৫, ৫২, ৪৯, ৭১, ৭৩, ৮৭, ৭৬ সহ বিভিন্ন জাতের ধান। চলতি এ মৌসুমে ৫০ জন চাষীকে প্রদর্শণী দেওয়া হয়েছে। এ ছাড়া ৬৫০ জনকে প্রনোদনা হিসেবে ২০ কেজি সার ও ৫ কেজি করে ধান দেয়া হয়েছে। ৩০০ কৃষককে বীজ সহায়তা দেয়া হয়েছে।
সরেজমিন পরিদর্শণ কালে উপজেলার দক্ষিণ কদমতলা গ্রামের সফল চাষী নজরুল ইসলাম মোল্লা জানায়, তিনি ২ শতাধিক বিঘা জমিতে ধান রোপন করেছেন। এবছর যে ফসল হয়েছে তা গত তিন চার বছরেও হয়নি বলে জানান। তিনি ইতোমধ্যে ৩০/৩৫ বিঘা জমির ধান কর্তন করে মাড়াই করেছেন। প্রতি বিঘায় প্রায় ২০ মন ধান হয়েছে। তিনি বলেন এ বছর জমিতে পোকার আক্রমণ কম ছিল। এ ছাড়া উপজেলার দক্ষিণ রাজাপুর গ্রামের হাসেম হাওলাদার, লাকুরতলা গ্রামের এমাদুল হাওলাদার, খাদা গ্রামের বাদল আকন বলেন বাম্পার ফলনের কথা। উত্তর কদমতলা আইপিএম কৃষক ক্লাবের সভাপতি মিজানুর রহমান বলেন, আগের চেয়ে কৃষকরা উপজেলা কৃষি অধিদপ্তরসহ এনজিওদের চাষাবাদের উপর বিভিন্ন ভাবে প্রশিক্ষণ পেয়ে সোনার ফসল ঘরে তুলতে অনেক সচেতন হয়েছেন। যে কারণে পোকা মাকড় প্রতিরোধসহ অধিক ফলনে অগ্রনি ভূমিকা পালন করছে। তারই সুফল বাম্পার ফলন। বিগত কয়েক বছরের চেয়ে এ বছর কৃষকরা আশানুরূপ ফসল পেয়েছে।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ও রায়েন্দা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আলহাজ¦ আজমল হোসেন মুক্তা ও খোন্তাকাটা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান জাকির হোসেন খান মহিউদ্দিন বলেন মাঠ শুকিয়ে যাওয়ার পর পরই ঘূর্ণিঝড় সিত্রাং ছিল আমাদের জন্য আর্শিবাদ। বৃষ্টির কারণে ফসল ভালো হওয়ায় এ বছর বাম্পার ফলন হয়েছে। এ রকম ফলন দুই চার বছরে আমরা দেখিনি। এজন্য আল্লাহর কাছে লাখো শুকুর।
উপজেলা কৃষি অফিসার দেবব্রত সরকার এ প্রতিনিধিকে জানায়, আমন ধান চাষে এবছর আবহাওয়া অনুকূলে ও পোকামাকড়ের আক্রমণ কম থাকায় সুপার বাম্পার ফলন হয়েছে পোকামাকড় প্রতিরোধে ও আশানুরূপ ফসল পাওয়ার লক্ষ্যে কৃষকদের সচেতনতা বৃদ্ধির জন্য বিভিন্ন পদক্ষেপ গ্রহণ করা হয়। এ বছর বাম্পার ফলনের পাশাপাশি ধানের মূল্য ভালো থাকায় কৃষকদের মুখে হাসি ফুটছে।