জিংক মানবদেহের জন্য একটি অত্যবশ্যকীয় অনুপুষ্টি। যার অভাবে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা কমে যায়। কিন্তু আমাদের শরীরে দৈনিক যতটুকু জিংকের প্রয়োজন তা কোনোভাবেই স¤পূর্ণ পূরণ হয় না। কারণ, যেসব খাবারে জিংক আছে তা আমরা প্রতিদিন প্রয়োজনমতো খেতে পারি না। যেমন, লাল মাংস, কলিজা, বিবিধ প্রকারের বীজ, শামুক, বাদাম, দুধ, ডিম, ডাল ও চিংড়ি মাছ ইত্যাদি। দৈনন্দিন স্বাভাবিক খাবারের মাধ্যমে আমরা আমাদের দৈনিক জিংকের চাহিদার সর্বোচ্চ ৫০% পূরণ করতে পারি। তাই প্রতিদিন আমাদের শরীরে জিংকের ঘাটতি থেকেই যাচ্ছে। জিংক শিশুদের শারীরিক বৃদ্ধি ও মেধার বিকাশ ঘটায়, ক্ষুধামন্দা দূর ও স্মৃতিশক্তি বৃদ্ধি করে। এছাড়াও নারীদের প্রজনন ক্ষমতা বৃদ্ধি সহ বয়ষ্কদের কর্মক্ষমতা ও রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। অন্যদিকে জিংকের অভাবে আমাদের শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা ক্রমান্নয়ে কমে যাচ্ছে। এবং আমরা অতি সহজে বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছি। এ থেকে মানুষকে রক্ষা করতে বাংলাদেশের বিজ্ঞানীগণ (বায়োফর্টিফিকেশনের মাধ্যমে) জিংক সমৃদ্ধ ধানের জাত (ব্রি ধান-৭৪, ব্রি ধান-৮৪, বঙ্গবন্ধু ১০০) আবিষ্কার করেছে।
এসব ধান চাষে কৃষকদের উদ্ভুদ্ধ করতেই আনÍর্জাতিক সংস্থা হারভেষ্টপ্লাস এর সহযোগীতায় বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা সোসাইটি ডেভেলপমেন্ট কমিটি (এসডিসি) “ডেলিভারি অব বায়োফার্টিফাইড জিংক রাইস ইন বাংলাদেশ” প্রকল্পের আওতায় ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলায় বিভিন্ন কাজ করে চলেছে। সংস্থাটি জিংক ধান চাষে কৃষকদেরকে উৎসাহিত করতে দুই উপজেলায় মাইকিং, লিফলেট বিতরন ও ভিডিও প্রদর্শন করছে। সেইসাথেই কৃষক, বীজ বিক্রেতা, বীজ কো¤পানী ও শিক্ষকদের নিয়ে প্রচার প্রচারনা সহ নানা কর্মশালা ও মাঠ সমাবেশ চালিয়ে যাচ্ছে।
সংস্থাটির মাঠ পর্ষায়ের কর্মকর্তারা জুয়েল রানা জানায়, জিংক চালের ভাত খেতে অত্যন্ত সুস্বাদু। এ ধানের ফলনও বেশ ভালো। ইতোমধ্যে সংস্থাটি বোরো মৌসুমে এ ধানের চাষ ছড়িয়ে দিতে ঝিনাইদহ সদর ও কালীগঞ্জ উপজেলার কৃষকদের মাঝে বিনামূল্যে বীজ প্রদানসহ অনেকগুলো প্রদর্শনী প্লট দিয়েছে। যেখানে তাদের পক্ষ থেকে কৃষকদেরকে দিক নির্দেশনা দেয়া হচ্ছে। এ ধান যেহেতু মানুষের জন্য খুব উপকারী, তাই এ ধানের চাল আগামীতে খুব জনপ্রিয় হবে বলে আশা করছেন সংস্থাটি।