পাবনার চাটমোহর উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের চরপাড়া এলাকায় পানি উন্নয়ন বোর্ডের বরোপিট জলকর নিয়ে বিবাদমান দু’পক্ষের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে। বর্তমানে ভোগদখলকারী সুফলভোগিরা জলকর থেকে তাদেরকে উচ্ছেদের অপচেষ্টার প্রতিবাদে বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভা করেছেন। অপরপক্ষ নতুন করে জলকরের লীজ নিতে বর্তমান ভোগদখলকারী সুফলকোগিদের বাদ দিয়ে নতুন সদস্যদের তালিকা করে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে দাখিল করেছেন। বিষয়টি জানার পর এলাকায় ক্ষোভ ও উত্তেজনার সৃষ্টি হয়েছে।
এঘটনার প্রতিবাদে বুধবার জলকর এলাকায় বর্তমান ভোগদখলকারী সুফলভোগিরা বিক্ষোভ মিছিল করেছন। এরআগে গত মঙ্গলবারও (২০ ডিসেম্বর) তারা বিক্ষোভ মিছিল ও প্রতিবাদ সভার পাশাপাশি সংবাদ সম্মেলন করে যে কোন মূল্যে জলকরের দখল বজায় রাখার কথা বলেছেন। সুফলভোগি মোঃ সিরাজুল ইসলামের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় বক্তব্য দেন,ইউপি সদস্য মোতালেব হোসেন,আওয়ামী লীগ নেতা সোলায়মান হোসেন,আফসার সরদার,জয়নাল সরকার,রাশিদুল হক,আকাব সরদার প্রমুখ।
জানা গেছে,উপজেলার গুনাইগাছা ইউনিয়নের মথুরাপুর বাবর আলীর বাড়ি হতে চরপাড়া মফিজ প্রামানিকের বাড়ি পর্যন্ত পাউবো'র বরোপিট জলকরটি ২৭ জন সুফলভোগি দীর্ঘদিন ধরে ভোগদখল করে আসছে। কিন্তু দলনেতা মোঃ আলী আশরাফ কাউকে না জানিয়ে গুনাইগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান নুরুল ইসলাম ও তার ছেলে জাহাঙ্গীর হোসেনসহ এলাকার প্রভাবশালী ব্যক্তিদের সাথে যোগসাজসে পূর্বের সফলভোগিদের বাদ দিয়ে নতুনভাবে সুফলভোগির তালিকা করে তা অনুমোদন নিয়ে জলকর জবরদখলের অপচেষ্টা চালাচ্ছেন। তারা আগের সুফলভোগিদের উচ্ছেদর পাঁয়তারা করছেন।
বর্তমান সদস্যরা বলেন,আমরা মাছ চাষ করেছি। আগামী চৈত্র মাস পর্যন্ত লীজের মেয়াদ রয়েছে এবং আমরাই জলকরের সুফলভোগি। তারা বিগত ২০১৬ সাল হতে অদ্যাবধি সরকারি রাজস্ব প্রদান করে ভোগ দখল করে আসছেন। সুফলভোগি সদস্যরা জানান,দলনেতা আলী আশরাফ তাদের দেনা-পাওনা না বুঝিয়ে দিয়ে নানা তালবাহানা করছেন। তারা আরো অভিযোগ করেন নতুন তালিকাতে জলাশয়ের নিকটবর্তী সদস্যদের বাদ দিয়ে স্বচ্ছল,প্রভাবশালী,বিত্তবান ও জলাশয় হতে ২ থেকে ৫ কি.মি. দূরের লোকজনকে সুফলভোগী করা হয়েছে। যা অবৈধ।
জলকরের বর্তমান ভোগদখলকারী সুফলভোগিদের পক্ষে মঙ্গলবার (২০ ডিসেম্বর) পাবনা জেলা প্রশাসক বরাবর অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়েছে।
দলনেতা আলী আশরাফ বলেন,যারা নিজেদের দখলকারী সুফলভোগি বলছেন,তাদের কোন কাগজপত্র নেই। নিয়মতান্ত্রিকভাবে নতুন সদস্য করে জলকর লীজ নেওয়া হচ্ছে। কাউকে জলকর থেকে উচ্ছেদের চেষ্টা করা হচ্ছেনা। জলকর আমাদের দখলেই রয়েছে।
এ ব্যাপারে গুনাইগাছা ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান ও ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি মোঃ নুরুল ইসলাম জানান,কথিত সুফলভোগিদের অভিযোগ মিথ্যে। আলী আশরাফের পক্ষে সকল কাগজপত্র সঠিক আছে। যারা অভিযোগ করেছে,তারাই জলকর দখলের অপচেষ্টা করছেন।