ডাকাতি ঘটনার এক মাস পর রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাট পৌরসভার বর্তমান চার ওয়ার্ড কাউন্সিলসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে মামলা করেছেন কেশরহাটের এফ.জে এন্টার প্রাইজ মোটরসাইকেল শোরুমে ম্যানেজার মো. মাহমুদ ইসলাম।
রাজশাহীর মোহনপুর থানার বিজ্ঞ আমলী আদালতে মামলা দায়ের পর আদালত থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে এজাহার করে তদন্ত প্রতিবেদন দেওয়ায় জন্য মোহনপুর থানাকে নির্দেশ দিয়েছেন। মোহনপুর থানা পুলিশ মামলাটি এজাহার ভুক্ত করে মামলার তদন্ত কাজ শুরু করেছে। কিন্তু ঘটনার প্রায় এক মাস পর মামলাটি দায়ের করায় কেশরহাটের স্থানীয় ব্যবসায়ী, জন প্রতিনিধি ও সাধারণ জনগণের মধ্যে মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ২৯ অক্টোবর রাত ৯ টা ৫০ মিনিটে মোটরসাইকেল শোরুম থেকে আনুমানিক একশত গজ দুরে রাজশাহী-নওগাঁ মহাসড়কের কেশরহাট ব্রীজের উপর উপর্যুক্ত আসামীরাসহ অজ্ঞাত আরো ৪-৫ জন আসামি পথ রোধ করে মামলার বাদী মাহমুদ ইসলামকে মারপিট করে জখম করে কাপড়ের ব্যাগে থাকা ১৭ লাখ ৩০ হাজার টাকা কেড়ে নেয়। কিন্তু ঘটনার প্রায় এক মাস পর গত ১ ডিসেম্বর আদালতে মামলাটি করা হয়েছে। মামলাটি তদন্ত প্রতিবেদনের জন্য মোহনপুর থানায় আসে গত ১২ ডিসেম্বর। ওই দিন রাতে মোহনপুর থানায় নিয়মিত মামলা হিসেবে এজাহার ভুক্ত করে তদন্ত শুরু করে পুলিশ।
রাজশাহীর মোহনপুর উপজেলার কেশরহাটে গিয়ে স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, কেশরহাট পৌরসভার বর্তমান কাউন্সিল সাহের আলীর সাথে এফ.জে এন্টারপ্রাইজ মোটরসাইকেল শোরুমে মালিক জামাল হোসেনের কেশরহাট বাজারে জায়গা জমি নিয়ে বিরোধ চলছে। বর্তমানের বিরোধটি বিদ্যমান রয়েছে। ওই জমি সংক্রান্ত বিষয় নিয়ে সংবাদ সম্মেলন করেছিলেন কাউন্সিল মো. সাহের আলী। ওই সংবাদ সম্মেলনে তিন কাউন্সিল উপস্থিত ছিলেন। তাই তাদের বিরুদ্ধে ডাকাতির মামলা করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন একাধিক ব্যক্তি।
অনুসন্ধানে ঘটনার স্থানের আশে পাশের একাধিক ব্যবসায়ী সাথে কথা বলে জানা যায়, ঘটনার দিন ছিল শনিবার। ওই দিন হাটবার ছিল। প্রতিদিনের মত তারাও দোকানে ছিলেন। কিন্তু ডাকাতির ঘটনা সম্পর্কে কিছু জানেন না ব্যবসায়ীরা। ব্যবসায়ীরা আরো বলেন, আদালতে মামলার পর শুনেছি এখানে ডাকাতি হয়েছে। কখন হয়েছে, কিভাবে হয়েছে তা আমরা জানি না।
ঘটনার বিষয়টি মোহনপুর থানা পুলিশও জানতেন না। আদালতের মাধ্যমে থানায় মামলা আসলে পুলিশ বিষয়টি জানতে পারেন পুলিশ। কেশহরহাট একটি ব্যাণিজিক এলাকা। কিন্তু ঘটনাটি দীর্ঘ এক মাস সকলের অগসরে ছিলো। ডাকাতি মামলার অনুসন্ধানে ঘটনাটি পুরোটাই উল্টো। আসল ঘটনাটা কি তা নিয়ে ব্যবসায়ীদের মিশ্র প্রতিক্রিয়া বিরাজ করছে। ব্যবসায়ীরা সঠিক তদন্ত করে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন।
মামলায় তাদেরকে সাক্ষী করা হয়েছে, তাদের নামের সাথে পিতার নামের মিল পাওয়া যাচ্ছে না।
কেশরহাট পৌরসভার মেয়র শহিদুজ্জামান শহীদের সাথে যোগাযোগ করলে তিনি বলেন, ডাকাতি মামলার বিষয়ে কিছুই জানেন না।
কেশরহাট পৌরসভার যে ওয়ার্ডে ডাকাতির ঘটনা ঘটেছে ওই ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিল মো. কফিল উদ্দিনের সাথে কথা বলে জানা গেছে, তিনি আদালতে মামলা হওয়ায় পর লোকমুখে শুনেছেন। ঘটনার পর মোটরসাইকেল শোরুমের মালিক ডাকাতির বিষয়ে জানিয়েছেন কি-না জানতে চাইলে তিনি বলেন, এখন পর্যন্ত শোরুমের পক্ষ থেকে আমাকে কিছু জানানো হয়নি।
কেশরহাটের এফ জে এন্টারপ্রাইজ মোটরসাইকেল শোরুমের মালিক জামাল হোসেন ও ম্যানেজার মাহমুদ ইসলামের সাথে একাধিক বার বক্তব্য নিতে গেলে তারা বলেন, যেহতু আদালতে মামলা রয়েছে। কোন কিছু জানতে চাইলে আদালত অথবা মোহনপুর থানা পুলিশের কাছ থেকে তথ্য নিতে পারেন। আমরা আপনার কাছে বক্তব্য দিতে বাধ্য নয়।
মোহনপুর থানার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা সাব-ইন্সপেক্টর (নিরস্ত্র) মো. সাখাওয়াত হোসেন বলেন, আদালত তদন্ত প্রতিবেদন চেয়েছেন। বিষয়টি নিয়ে তদন্ত করা হচ্ছে। তদন্তের সার্থে এই মুহুর্তে মিডিয়ার কাছে তথ্য দেওয়া যাবে না। তবে সঠিকভাবে তদন্ত করে, সঠক প্রতিবেদন আদালতে প্রেরণ করা হবে।