দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তর যশোরের কেশবপুর উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজার, গ্রাম ও সড়কের গুরুত্বপূর্ণ স্থানে প্রায় ৭ কোটি টাকা ব্যয়ে ৮৯০টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করেছে। সঠিক রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে এর অধিকাংশ নষ্ট হয়ে যাওয়ায় আলো থেকে বঞ্চিত হচ্ছে জনগণ। রাতের অন্ধকারে নির্বিঘেœ চলাচল করতে ওইসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। সন্ধ্যা হওয়ার সাথে সাথে স্বয়ংক্রিয়ভাবে লাইটগুলো জ¦লে উঠতো। আবার সকালের আলোতে নিভে যেত। এগুলি রক্ষণাবেক্ষনের কোন উদ্যোগ না থাকায় আবারো গ্রামঞ্চলের পাড়া মহল্লা অন্ধকারাচ্ছন্ন হয়ে পড়েছে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার কার্যালয় থেকে দূর্যোগ ব্যবস্থাপনা অধিদপ্তরের আওতাধীন ২০১৭-২০১৮ অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো সংস্কার (কাবিখা) প্রকল্পের ১ কোটি ১৮ লাখ ৭৯ হাজার ৫৬০ টাকা খরচে ১৪৯টি ও একই অর্থবছরে গ্রামীণ অবকাঠামো রক্ষণাবেক্ষণ (টিআর) প্রকল্পের ৮ লাখ ৪৮ হাজার ৫৪০ টাকা খরচে ১১টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করে। যেখানে প্রতিটা লাইটে গড়ে খরচ হয় ৭৯ হাজার ৫৫০ টাকা ৬২ পয়সা। ২০১৮-২০১৯ অর্থবছরে কাবিখার ১ কোটি ৫৪ লাখ ২৮ হাজার টাকা খরচে ২০০টি এবং টিআর এর ১ কোটি ৪৩ লাখ ৪৮ হাজার ৪০ টাকা খরচে ১৮৬টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। যার গড়ে প্রতিটা লাইটে খরচ হয় ৭৭ হাজার ১৪০ টাকা। সর্বশেষ গত ২০১৯-২০২০ অর্থবছরে কাবিখার ১ কোটি ৩৩ লাখ ৪৫ হাজার ২২০ টাকা খরচে ১৭৩টি এবং টিআর এর ১ কোটি ৩১ লাখ ৯০ হাজার ৯৪০ টাকা খরচে ১৭১টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। যেখানে গড়ে প্রতিটা লাইটে খরচ দেখানো হয়েছে ৭৭ হাজার ১৪০ টাকা। গত ৩ অর্থ বছরে সবমিলিয়ে ৬ কোটি ৯০ লাখ ৪০ হাজার ৩০০ টাকা খরচে ৮৯০টি সোলার স্ট্রিট লাইট স্থাপন করা হয়। সব গুলো লাইট বসানোর কাজ করে ঢাকার শ্যামলীর এক্সপার্ট রিনিউয়েবল এনার্জি অ্যান্ড ইঞ্জিনিয়ারিং লিমিটেড নামে একটি কো¤পানি। প্রতি অর্থ বছরে বরাদ্ধকৃত স্ট্রিট লাইটের জন্য ৩ বছর মেয়াদী কোম্পানি কর্তৃক মেরামত করার কথা ছিলো। তবে রক্ষণাবেক্ষণের অভাবে স্থাপন করা অধিকাংশ সোলার স্ট্রিট লাইট নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। এ ছাড়া অনেক স্ট্রিট লাইটের সোলার প্যানেল ও ব্যাটারি চুরি হয়ে গেছে। রাতে ওইসব স্থানে আলোর অভাবে বেড়েছে জনদুর্ভোগ।
এক্সপার্ট গ্রুপের ফাউন্ডার এবং ম্যানেজিং ডিরেক্টর সাংবাদিকদের বলেন ,এনএইচ রিমন, তারা ইতোমধ্যে ৩ বছর মেয়াদ শেষ হওয়া লাইটগুলো আবেদনের মাধ্যমে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন অফিসকে জানিয়ে দিয়েছে। যে গুলোর মেয়াদ আছে অফিস সেগুলো মেরামতের জন্য বললে মেরামত করে দেওয়া হবে।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (অতিরিক্ত দায়িত্ব) শুভাগত বিশ্বাস বলেন, সোলার প্যানেলের উপর ময়লা পড়া ও ছায়াযুক্ত স্থানে লাইট স্থাপন করায় ব্যাটারিতে চার্জ না হওয়ায় অনেক স্ট্রিট লাইট নষ্ট হয়ে পড়ে আছে। কোন অর্থ বরাদ্দ না থাকায় নষ্ট হওয়া লাইটগুলো মেরামত করা সম্ভব হচ্ছে না।