ঝিনাইদহের শৈলকুপা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে স্বেচ্ছাসেবী ও আউট সোসিংয়ের হাসপাতালের কর্মীদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ। প্রতিদিন বিভিন্ন এলাকা থেকে শত শত মানুষ সেবা নিতে আসে এই উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে। এই সুযোগে স্বেচ্ছাসেবী ও আউট সোর্সিংয়ের কর্মীরা রোগীদের বিভিন্ন ভাবে হয়রানি করছে বলে অভিযোগ উঠেছে। দিন দিন রোগী হয়রানি বেড়ে গেলেও হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদসীনতায় স্বেচ্ছাসেবী ও আউট সোর্সিয়ের কর্মীরা বেপরোয়া হয়ে উঠেছে। তবে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ বলছে, স্বেচ্ছাসেবী ও আউট সোসিংয়ের কর্মীরা কোন বেতন পায় না।
মঙ্গলবার সকালে সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়,মাহফুজা ও খালেদা নামের দুই স্বেচ্ছাসেবী হাসপাতাল থেকে রোগী নিয়ে যাচ্ছে পরীক্ষা নিরীক্ষা করার জন্য হাসপাতালের সামনে প্রাইভেট ক্লিনিকে। অন্য কর্মীরা আউটডোরে ডাক্তারের রুম থেকে রোগী বের হওয়ার সাথে সাথে ফুসলিয়ে ভাল পরীক্ষা নিরীক্ষা করার নামে নিয়ে যাচ্ছে বিভিন্ন ক্লিনিকে। হাসপাতাল অনেকটা দখলে রেখে রোগীদের কব্জা করে রোগীদের ফুসলিয়ে এই সমস্থ স্বেচ্ছাসেবী ও আউটসোর্সিং কর্মীরা হাতিয়ে নিচ্ছে মোটা অংকের টাকা। হাসপাতালে ডিউটির নাম করে বসে থাকে আর কোন রোগী আসলে তার ইচ্ছামত ক্লিনিকে নিয়ে যায়। আবার সিজারিয়ান রোগী আসলে তাদের ভুলভাল বুঝিয়ে নিয়ে যাচ্ছে ক্লিনিকে অপারেশন করতে। এই হাসপাতালে স্বেচ্ছাসেবী ও আউট সোর্সিং কর্মীরা ডিউটির নামে মহিলা ওয়ার্ড়, পুরুষ ওয়ার্ড, ইমার্জেন্সিতে ও লেবার রুমের পাশে ঘুর ঘুর করছে। দীর্ঘদিন ধরে তরিকুল, সোহাগ, বিপুল, খালেদা ,রুপিয়া ,রাশিদা,মাহফুজা,লাইজু, সহ ডজন খানেক স্বেচ্ছাসেবী ও আউট সোর্সিয়ের নামে নিয়োগ নিয়ে সাধারণ গরীব রোগীদের সাথে প্রতারণা করে আসছে।
সেবা নিতে আসা বসন্তপুর গ্রামের রেনুকা বেগম বলেন, অসুস্থ শরীর নিয়ে ডাক্তার দেখাতে এসেছিলাম, ডাক্তার পরীক্ষা নীরিক্ষা দিয়েছে বিপুল নামে আউটসোর্সিং কর্মী আমাকে ক্লিনিকে নিয়ে গিয়ে আমার কাছ থেকে পরীক্ষার নামে ২০০০ হাজার টাকা নিল।পরে জানতে পারলাম এসব পরীক্ষা হাসপাতালে হয়।
মাঠপাড়া গ্রামের বাসিন্দা করিম উদ্দিন বলেন, মাস খানেক আগে সিজার করতে গিয়েছিলাম হাসপাতালে। ওখানে মাহফুজা নামে এক মহিলা বললো ডাক্তার নেই চলো ক্লিনিকে নিয়ে সিজার করে দিই তার কথামত অপারেসন করে আমার অনেক খরচ হয়ে গেল। এত টাকা এখন কোথায় পাই। দালালের অত্যাচারে আমরা অতিষ্ঠ সাধারণ মানুষ।
নুরজাহান প্রাইভেট ক্লিনিকের মালিক শওকত হোসেন বলেন, আউটসোর্সিয়ে নিয়োগপ্রাপ্তদের অত্যাচারে অতিষ্ঠ হয়ে উঠেছে সেবা নিতে আসা গরীব অসহায় রোগীরা। অপারেশন ও পরীক্ষা নিরীক্ষা করার নাম করে নিয়ে যায় তাদের পছন্দমত ক্লিনিকে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের উদাসীনতায় এসব কাজ করছে স্বেচ্ছাসেবী ও আউট সোর্সিয়ের কর্মীরা।
আউট সোর্সিয়ে নিয়োগপ্রাপ্ত জামিরুল ইসলাম বলেন, আমরা এ সমস্থ কাজের সাথে জড়িত না তবে স্বেচ্ছাসেবীদের মধ্যে কেউ এসব কাজের সাথে জড়িত থাকতে পারে।
সিজার রুমের দায়িত্বে থাকা স্বেচ্ছাসেবী ওয়ার্ড বয় বিপুল বলেন, আমি জোর করে কোন রোগী নিই না। রোগীদের প্রয়োজনে আমি কিছু রোগী নিয়ে যাই ক্লিনিকে। হাসপাতাল থেকে আমাদের কোন বেতন দেয় না।তাই কিছু রোগী বাইরে নিয়ে যায়।
উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা রাশেদ আল মামুন বলেন, কেউ যদি রোগী নিয়ে এমন প্রতারণা করে তবে বিষয়টি খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
এলাকাবাসীসহ ভূক্তভোগীদের দাবী যত দ্রুত সম্ভব এই সমস্থ স্বেচ্ছাসেবী ও আউটসোর্সিং কর্মীদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা সেইসাথে স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সেবার সুন্দর পরিবেশ ফিরিয়ে আনা হোক।