পাবনার চাটমোহরসহ চলনবিল অধ্যুষিত জনপদে জেঁকে বসেছে কনকনে শীত। শনিবার সকাল সকাল ১০টায় পর্যন্ত ঘনকুয়াশায় ঢাকা ছিল প্রকৃতি ও জনপদ। তাপমাত্রা কমে আসায় শীতে নাকাল এ জনপদের মানুষ। বিল এলাকার মানুষ খড়কুটো জ¦ালিয়ে শীত নিবারণের চেষ্টা করছেন। বেড়েছে ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ।
গত কয়েক দিন ধরে শীতের তীব্রতা বাড়ছে। শুক্রবার বিকেল থেকে শীত আর হালকা শৈত্যপ্রবাহে বিপাকে পড়েছেন মানুষ। শনিবার ভোর থেকে সকাল ১০টা পর্যন্ত কনকনে শীত আর ঘনকুয়াশার কারণে কাজে যেতে পারেননি অনেকেই। বিল অঞ্চলে আগাম বোরো আবাদের প্রস্তুতি চলছে। তৈরি করা হচ্ছে বীজতলা।
কৃষি শ্রমিক আকবর আলী,শাহাদতসহ অন্যরা জানান,কয়েক দিন ধরে কনকনে শীত অনুভূত হচ্ছে। বইছে ঠান্ডা বাতাস।
স্থানীয়রা জানান,আগের থেকে তাপমাত্রা অনেক নিচে নেমে এসেছে। শীতের মাত্রাও বাড়ছে। সন্ধ্যার পর থেকে উত্তরের হিমেল হাওয়ায় শীত নেমে আসে। দিনেও আগের মতো গরম নেই। বিকেল গড়ালেই ঠান্ডা লাগতে শুরু করে।
এদিকে দিন-রাতে তাপমাত্রা দুই রকম থাকায় পাল্লা দিয়ে বাড়ছে শীতজনিত রোগ। জ¦র-সর্দি-কাশি,শ্বাসকষ্ট,ডায়রিয়া,নিউমোনিয়াসহ ঠান্ডাজনিত রোগ নিয়ে হাসপাতালগুলোতে ভর্তি হচ্ছেন রোগীরা। উপজেলার স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে প্রতিদিন সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত রোগীর ভিড় বাড়ছে। এদের মধ্যে বেশির ভাগই শিশু। উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের চিকিৎসক ডাঃ মতিউর রহমান বলছেন,আবহাওয়া পরিবর্তনের কারণে রোগীর চাপ বেড়েছে। এমনিতে শীত মৌসুমে আবহাওয়া শুষ্ক থাকায় বাতাসে জীবাণুর পরিমাণ বেড়ে যায়। শীতজনিত রোগ হিসেবে সর্দি-কাশি,শ্বাসকষ্ট বেশি হয়ে থাকে। আর শিশু ও বয়োজ্যেষ্ঠরা শীতজনিত রোগে বেশি আক্রান্ত হন। তাই এ সময়টাতে বাড়তি সতর্কতা অবলম্বন করতে পারলে কিছুটা হলেও সুরক্ষা মিলবে।
এদিকে শীত নিবারণে সাশ্রয়ী মূল্যে গরম কাপড় কিনতে নিম্ন আয়ের মানুষেরা ফুটপাতের দোকানগুলোতে ভিড় জমাচ্ছেন। শীত যতই ঘনিয়ে আসছে দিন দিন ফুটপাতের গরম কাপড়ের দোকান গুলোতে ক্রেতাদের উপস্থিতিও বাড়ছে। সরকারিভাবে উপজেলার ১১টি ইউনিয়ন ও ১টি পৌরসভায় ৫ হাজার ৮৮০ কম্বল বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
শনিবার উপজেলার বিভিন্ন হাটবাজারে গিয়ে দেখা যায়,পুরনো কাপড়ের দোকানে ক্রেতাদের উপচে পরা ভিড়। ক্রেতা বিক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়,পুরনো কাপড়ের দোকানে হুড্ডি,কোট, জ্যাকেট,সোয়েটার,মাফলার,ক্যাপ,চাদর,পায়ের মোজাসহ সব ধরনের পোশাক রয়েছে। তবে বেশি বিক্রি হচ্ছে হুড্ডি। গত বছরের তুলনায় এবার দাম অনেকটা বেশি।
চাটমোহর পুরাতন বাজার এলাকার পুরনো গরম কাপড় ব্যবসায়ী মো. ময়লাল হোসেন ও আঃ বারী জানান,শীতের তীব্রতা বেড়ে যাবার কারণে বেচাকেনা বেড়েছে। একটি হুড্ডি ৩০০ থেকে ৬০০ টাকায় বিক্রি করছি।
ক্রেতা রাজিব হোসেন জানান,দুই থেকে তিন হাজার টাকা গরম কাপড় কিনলে পরিবারের সবার চাহিদা মোটামুটি পূরণ হয়ে যায়। অনেকেই হকার্স মার্কেটে ভিড় করছেন। এ বছর গরম কাপড়ের চাহিদা বেশি।