দস্যুমুক্ত করতে র্যাবের লং রেঞ্জ পেট্রোল দল এখন শরনখোলার সুন্দরবনে অভিযান চালাচ্ছে। বিশেষ আভিযানিক দলটি রোববার (২৫ ডিসেম্বর) সকালে “এলিট টাইগার্স” ট্রলারযোগে শরনখোলা রেঞ্জ সংলগ্ন লোকালয়ে এসে পৌছায়। র্যাবের অভিযানে টিকতে না পেরে পালিয়ে যাওয়ার সময় বনদস্যু মাসুম ফরাজী (৪৫) পাথরঘাটা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন চরদুয়ানী এলাকায় আটক হয়েছে বলে জেলেরা জানিয়েছেন।
আভিযানিক দলটি উপস্থিত দরিদ্র জেলেদের মধ্যে কম্বল বিতরণ এবং তাদের নিরাপত্তার আশ্বস্থতা প্রদান করে। এ সময় র্যাব-৬ এর অধিনায়ক লেঃ কর্নেল মোসতাক আহম্মেদ, কোম্পানি কমান্ডার এসপি মোঃ বদরুদ্দোজা, স্কোয়াড কমান্ডার গোলাম রহমান ও আবুল কালাম আজাদ উপস্থিত ছিলেন।
র্যাব-৬ এর কোম্পানি কমান্ডার পুলিশ সুপার মোঃ বদরুদ্দোজা জানান, এ অভিযানের মাধ্যমে সাম্প্রতিক নব্য বনদস্যুদের চি্িহৃত করে তাদের আইনের আওতায় আনা, দস্যূমুক্ত সুন্দরবনের স্থায়িত্ব রক্ষার জন্য নৌ-পুলিশ, বনবিভাগ এবং কোস্ট গার্ডের সাথে সমন্বয় সাধন, মাঠ পর্যায়ে সুন্দরবনে অভিযান পরিচালনার স্থান রেকি করা, আত্মসমর্পনকৃত বনদ্যুদের সাথে সমন্বয় করা, সুন্দরবনে র্যাবের উপস্থিতি ও কার্যক্রম সম্পর্কে জানান দেয়া, জরুরি প্রয়োজনে বনদস্যুদের বিরুদ্ধে ঝটিকা অভিযান পরিচালানা করা, মৎস্যজীবিদের নিরাপত্তা বিষয়ক তথ্য সংগ্রহ ও নিরাপত্তার আশ্বস্থতা প্রদান করেন।
র্যাবের অধিনায়ক সাংবাদিকদের বলেন, ২০১৮ সালের ১ নভেম্বের প্রধানমন্ত্রী সুন্দরবনকে দস্যুমুক্ত ঘোষনা করেন। ওই সময় দস্যুদের ৩২৬টি পরিবারকে সরকারের পক্ষ থেকে পুনঃর্বাসন করা হয়। এরপর দুই একটি বিচ্ছিন্ন ঘটনা ঘটলে র্যাব কঠোরভাবে তা দমন করেছে। সম্প্রতি নব্য দস্যুদলটি মাছ ধরা মৌসুমে দস্যুতা শুরু করলে তাদের নিচিহৃ করতে র্যাবও দ্রুত কার্যক্রম শুরু করেছে। সুন্দরবন পুরোপুরি দস্যুমুক্ত না হওয়া পর্যন্ত র্যাবের এ অভিযান অব্যাহত থাকবে। এব্যাপরে জেলেদের কাছ থেকে তথ্য সংগ্রহ করা হচ্ছে। অভিযানে র্যাবের গোয়েন্দা শাখার একটি দল, ছদ্দবেশী একটি দল এবং লং রেঞ্জ পেট্রোল দল পৃথকভাবে কাজ করছে। অচিরেই তাদের সফলতা আসবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন।
এদিকে র্যাবের অভিযানে টিকতে না পেরে পালিয়ে যাওয়ার সময় বনদস্যু মাসুম ফরাজী (৪৫) পাথরঘাটা উপজেলার সুন্দরবন সংলগ্ন চরদুয়ানী এলাকায় আটক হয়েছে বলে জেলেরা জানায়। মাসুম ফরাজী শরণখোলা উপজেলার খুড়িয়াখালী গ্রামের মকবুল ফরাজীর পুত্র। সে সাবেক বনদস্যু বাদল বাহীনির সদস্য ছিল।
উল্লেখ্য গত ১৫ ডিসেম্বর রাতে নয়ন বাহীনি নামের একটি নব্য বনদস্যুদল সুন্দরবনের চাঁদপাই রেঞ্জের বেড়ীর খাল ও হরমাল খাল এলাকা থেকে ১৫ জেলেকে মুক্তিপনের দাবীতে অপহরণ করে। অপহরনের ৬ দিন পর মুক্তিপন দিয়েদস্যুদের কবল থেকে অপহৃত জেলেরা ছাড়া পায়। এ বিষয় নিয়ে বিভিন্ন সংবাদ মাধ্যমে খবর প্রকাশিত হলে আইনশৃঙ্খলা বাহীনি তৎপড় হয়।