হলুদ রঙের চোখ জুড়ানো বাহারী ফুলের রঙিলা চাঁদরে ঢাকা দিগন্তজোড়া সারি সারি সরিষার ক্ষেত। যে দিকে দু‘চোখ যায় সেদিকেই দেখা যায় শুধু সরিষার ফুল আর ফুল। রবি মৌসুমে মাঠের পর মাঠ সরিষার ফুল আর মৌমাছির গুঞ্জনে চারদিক মুখরিত হয়ে উঠে। এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় জামালপুরের সরিষাবাড়িতে সরিষার বাম্পার ফলন হলেও অনেক কৃষক হয়েছে সর্বহারা।
ব্রিটিশের শাসন আমল খেকেই এই এলাকায় প্রচুর পরিমানে সরিষার চাষ হয়। হয়তো এই কারণেই সেই সময়ের মানুষ এই উপজেলার নাম দিয়েছিলেন সরিষাবাড়ি। সরিষাবাড়ির সরিষার তেল আর সুমিষ্ট মধূ সকলের কাছেই সুপ্রিয় ও সমাদৃত। বিশেষ করে ঘানিতে ভাঙ্গানো তেল আর ক্ষেত হতে সংগৃহীত মধু।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, এ বছর আবহাওয়া অনুকুলে থাকায় সরিষার আবাদ ভালো হয়েছে। এ সময় ঝড়-বুষ্টি বাতাস না হলে সরিষার বাম্পার ফলন হবে। সেই সাথে বাজার মূল্য ভালো পেলে লাভবানও হবেন। এমনটাই আশা করছেন কৃষকেরা।
কামরাবাদ ইউনিয়নের শুয়াকৈর গ্রামের অনেক গরীব, খেটে খাওয়া বর্গাচাষীরা হয়ে পড়েছেন সর্বহারা। বীজ বপনের ১৫ দিন পর ডিলারের মেয়াদ উত্তীর্ণ বিষাক্ত কীট নাশক ওষুধ ব্যবারের ফলে ৫০ থেকে ৬০ বিঘা জমির সরিষা চাষ বিনষ্ট হয়েছে বলে অভিযোগ করেন। এ নিয়ে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকেরা বাদী হয়ে দোষী ডিলারের বিরুদ্ধে থানায় মামলাও দায়ের করেছেন বলে জানান ক্ষগিগ্রস্থ কৃষকেরা। রবি মৌসুমে নানা জাতের ফসল থাকতে কেন এই এলাকার কৃষকেরা সরিষা চাষের প্রতি এত আগ্রহ সে কথা জানতে তারা বলেন,যেহেতু সরিষা ক্ষেতে পর্যাপ্ত পরিমান সার ব্যবহার করা হয়। ইরি বোরো মৌসুমে এই সারটা আর লাগে না একই সাথে পর পর দুটি ফসল ঘরে তোলা যায়।
সরিষাবাড়ি উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, এ বছর কৃষকেরা বারি ১৪.১৭,১৮ ও বীনা ৪ ও ৯ জাতের সরিষার চাষ বেশী করেছেন। বিঘা প্রতি খরচ হয়েছে ৪ থেকে ৫ হাজার টাকা। লক্ষ্যমাত্রা ছিল ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর কিন্তু তার চেয়ে বেশী হয়েছে। এই উপজেলায় এবার ৪ হাজার ২৫০ হেক্টর জমিতে সরিষার চাষ করা হয়েছে। আমাদের এখন পর্যন্ত মাঠের অবস্থা ভালো। আমরা নিয়মিত পরামর্শ দিচ্ছি। তবে আবহাওয়া অনুকূলে থাবলে এ বছর সরিষার বাম্পার ফলন হবে। অপর দিতে ক্ষতিগ্রস্থ কৃষকদের নিয়ে আমরা চিন্তা ভাবনা করছি। ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে আলাপ আলোচনা করে দেখি তাদের জন্য কি করা যায়।