পিরোজপুরে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন সহ দেড়শত জনের নামে বিস্ফোরক আইনে মামলা দায়ের করা হয়েছে। জেলা ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারন সম্পাদক মো. আবু নাইম বাদী হয়ে ওই মামলা দায়ের করেন। ওই মামলায় থানা পুলিশ জেলা ছাত্রদলের সভাপতি মো. হাসান আল মামুন সহ বিএনপি ও ছাত্রদলের ১১ নেতা-কর্মীকে গ্রেপ্তার করেছেন। গ্রেপ্তারকৃতদের রোববার (২৫ ডিসেম্বর) দুুপরে আদালতে সোপর্দ করা হয়েছে।
গত শনিবার (২৪ ডিসেম্বর) রাতে দায়ের হওয়া মামলা সূত্রে জানা গেছে, ওই দিন সকাল সাড়ে ১১টার দিকে আ.লীগের কেন্দ্রীয় কমিটির সম্মেলনকে স্বাগত জানিয়ে জেলা ছাত্রলীগের উদ্যোগে একটি মিছিল বের করা হয়। ওই মিছিলটি জেলা কালেক্টর স্কুলের মুল গেইটে (পুরতন জেলখানা) পৌঁছলে জেলা বিএনপি’র দলীয় কার্যালয় থেকে বিএনপি-জামায়াতের নেতা-কর্মীরা মিছিল নিয়ে বের হয়। এ সময় তাদের (ছাত্রলীগ) হত্যার উদ্দেশ্যে জেলা বিএনপির আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেনের নির্দেশে জেলা বিএনপির যুগ্ম সাধারন সম্পাদক শেখ রিয়াজ উদ্দিন রানা সহ আসামিরা তাদের (ছাত্রলীগ) উপর বোমা হামলা করে।
পিরোজপুর জেলা বিএনপি’র আহ্বায়ক অধ্যক্ষ আলমগীর হোসেন বলেন, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচীর অংশ হিসাবে ওই দিন সকাল ১১টার দিকে বিএনপির নেতা-কর্মীরা দলীয় কার্যালয়ে জড়ো হতে থাকে। পথে বিভিন্ন স্থানে নেতা-কর্মীদের উপর হামলা চালিয়ে আহত করা হয়। পরে আবারও তারা বিএনপি অফিসে আগ্নেয় অস্ত্র, বোমা ও দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা চালিয়ে ভাংচুর করা হয়। এ সময় ছাত্রলীগের ছোঁড়া গুলিতে এক ছাত্রদল নেতা গুলিবিদ্ধ সহ অর্ধশত নেতা-কর্মীকে আহত হয়েছেন আহতরা জেলা হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে গেলে সেখানেও তাদের উপর হামলা সহ তাদের চিকিৎসা নিতে দেয়া হয় নি।
জেলা ছাত্রদলের সাধারন সম্পাদক শেখ বদিউজ্জান রুবেল জানান, বিএনপির কেন্দ্রীয় কর্মসূচীতে বাধা দিতে জেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মো. অনিরুজ্জামান অনিক ও সাধারন সম্পাদক মো. ইফতেখার মাহমুদ সজল অতর্কিত গুলি ও বোমা হামলা চালায়। এতে ছাত্রদলের এক নেতা গুলিবিদ্ধ সহ অর্ধশত নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন। শাসক দলের যে কোন হামলা বা মামলাকে উপেক্ষা করে ছাত্রদল রাজপথের ফয়সালার মাধ্যমে খালেদা জিয়াকে মুক্তি ও তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনা সহ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের দাবীর আন্দোলনকে সফল করবে।
জেলা ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক মো. ইফতেখার মাহমুদ সজল তার বিরুদ্ধে গুলি ও বোমা হামলার অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, বোমা ও অগ্নি সংযোগের মাধ্যমে ক্ষতি করা বিএনপি জামায়াতের কাজ। আমরা (ছাত্রলীগ) সেখানে কোন ধরনের হমলা করি নি। বরং তারা আমাদের উপর বোমা হামলা করেছে। এতে ছাত্রলীগের ৮ নেতা-কর্মী আহত হয়েছেন।
পিরোজপুর সদর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) আ.জ.ম মাসুদুজ্জামান জানান, বিএনপির বিরুদ্ধে বোমা হামলার অভিযোগে ৬৯ জনকে নামীয় এবং ৭০-৮০ জনকে অজ্ঞাত করে একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। ওই মামলায় বিএনপি-জামায়াতের ১১নেতা-কর্মীকে আটক করা হয়েছে।
উল্লেখ্য, বিএনপির কেন্দ্র ঘোষিত বিক্ষোভ সমাবেশকে কেন্দ্র করে ছাত্রলীগ ও বিএনপির মধ্যে সংঘর্ষ হয়। ওই সংঘর্ষে উভয় দলের কমপক্ষে ৩০ নেতা-কর্মী আহত সহ বিএনপির দলীয় কার্যালয়ে হামলা করা হয়েছে।