মধ্যযুগের স্বাধীন সুলতানী শাসনামলে ঝিনাইদহ জেলার কালীগঞ্জ উপজেলার ৯ নং বারোবাজার ইউনিয়ন, ১০ নং কাষ্টভাঙ্গা ইউনিয়ন সহ আশেপাশের বেশ কয়েকটি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রাম নিয়ে ইতিহাস খ্যাত বিখ্যাত বন্দর শহর মোহাম্মদাবাদের অবস্থান ছিল। এক সময়ের প্রমত্ত ভৈরব নদের তীরে গড়ে উঠা শহরটির সুনাম ছড়িয়ে পড়েছিল পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তে শহরের বন্দর থেকে বাংলার বিখ্যাত মসলিন কাপড় সহ বিভিন্ন ধরণের পণ্য সামগ্রীী রপ্তানি হতো পৃথিবীর বিভিন্ন প্রান্তেশহরটি সুলতানদের টাকশাল ছিল।এই শহর থেকে খ্যাতনামা সকল সুলতানের নামে মুদ্রা জারি করা হয়েছিল। ১৯৯২-৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতাত্তিক বিভাগ ব্যাপক খননকার্য চালিয়ে তা প্রমান করে। এখানে আবিষ্কৃত বিভিন্ন ধরণের প্রত্নতাত্তিক বস্তু প্রমান করে আজকের বারোবাজার সুলতানী শাসনামলের বিখ্যাত বন্দর শহর মোহাম্মদাবাদ।
বারোবাজারে আবিষ্কৃত বিভিন্ন ধরণের প্রত্নতাতিœক খুলনা বিভাগীয় জাদুঘর ও বাগেরহাট ষাটগম্বুজ মসজিদ জাদুঘরে সর্বসাধারণের প্রদর্শনের জন্য সংরক্ষিত আছে।তবে অত্যন্ত পরিতাপের বিষয় এমন মহামূল্যবান প্রত্নতাতিœক শহরের অধিকাংশ স্থাপনা এলাকার বিভিন্ন স্বার্থনেশী ব্যক্তি দ্বারা ধ্বংস প্রাপ্ত হয়েছে।বাংলাদেশ সরকারের প্রত্নতাতিœক বিভাগের তালিকায় যে প্রত্নতাতিœক নিদর্শন গুলি আছে তাঁর অধিকাংশ যে কোন সময় বিলীন হয়ে যাবে।অথচ এমন মহামূল্যবান প্রত্নতাতিœক সম্পদ রক্ষায় সরকারের প্রত্নতাতিœক বিভাগের তেমন কোন সদিচ্ছা নেই।দায়সারা ভাবে একজন কর্মচারীর দায়িত্বে আছে বেশ কয়েক কিলোমিটার জুড়ে মহামূল্যবান ১৭টি প্রত্নতাতিœক নিদর্শন।এলাকার সাধারণ মানুষ এসব নিদর্শন গুলির উপরে টিনের ছাপড়া দিয়ে নিয়মিত নামাজ আদায় করে আসছেন।বারোবাজারের মহামূল্যবান প্রত্নতাতিœক শহরের উন্নয়নের বিষয়ে কথা হয় খুলনা বিভাগের প্রত্নতাতিœক অধিদপ্তরের পরিচালক আফরোজা খানম মিতা ম্যাডামের সঙ্গে, তিনি সরকারী তহবিল সংকটের কথা উল্লেখ করেন।বাজেট নেই, তাই তিনি কাজ করতে পারছেন না।বাজেট কবে আসবে তাও তিনি জানেন না।অথচ বারোবাজার হতে পারে একটি প্রত্নতাতিœক শহর কেন্দ্রিক পর্যটন শিল্পের উদাহরণ।বারোবাজারের প্রত্নতাতিœক শহরটি বিশ্ব ঐতিহ্যের সম্মানেও ভূষিত হতে পারেন বলে সুধীমহল মনে করেন।এমন মহামূল্যবান সম্পদ এভাবে চোখের সামনে নষ্ট হওয়াতে দেশ মহামূল্যবান সম্পদ হারাবেন বলেও তাঁরা মনে করেন।