নদী বেষ্টিত জেলার মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলার আন্তঃজেলা ডাকাত দলের সদস্যদের সহযোগিতা করার অভিযোগে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের পাঁচজন নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিঃস্কার করা হয়েছে।
অতিসম্প্রতি থানা পুলিশের অভিযানে গ্রেপ্তারকৃত আন্তঃজেলা ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ান জিজ্ঞাসাবাদে ওই পাঁচজনকে নিয়ে পুলিশের কাছে চাঞ্চল্যকর তথ্য দিয়েছেন। এরপরই তাদের দল থেকে বহিঃস্কার করা হয়। রোববার দিবাগত রাতে তথ্যের সত্যতা নিশ্চিত করে মেহেন্দিগঞ্জ উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি কামাল উদ্দিন খান বলেন, জরুরী সভার মাধ্যমে অনৈতিক কর্মকান্ডের সাথে জড়িত থাকায় পাঁচ নেতাকর্মীকে দল থেকে বহিঃস্কার করা হয়েছে।
বহিঃস্কৃতরা হলেন-উপজেলার দড়িরচর খাজুরিয়া ইউনিয়ন আওয়ামী লীগের সভাপতি সালাম দেওয়ান, ৮ নম্বর ওয়ার্ড আওয়ামী লীগের সভাপতি ও ইউপি সদস্য শহীদ দেওয়ান, ইউনিয়ন যুবলীগের আহ্বায়ক ও ৭ নম্বর ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য মোশারফ আকন, দলীয় কর্মী বাচ্চু মিয়া ও কাশেম দেওয়ান।
থানা পুলিশ সূত্রে জানা গেছে, মেহেন্দিগঞ্জের মেঘনা নদী থেকে ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ানকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের কাছে সে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়েছেন। এতে তাদের (ডাকাত) গডফাদার হিসেবে বহিঃস্কৃত উল্লিখিত আওয়ামী লীগ ও যুবলীগ নেতাদের নাম প্রকাশ করেন। নাঈম পুলিশকে জানিয়েছেন, ক্ষমতাসীন দলের ওইসহ নেতাদের ডাকাতির ভাগ দিতে হয়। তবে যেসব নেতাদের বিরুদ্ধে এমন অভিযোগ করা হয়েছে, তারা সেটি অস্বীকার করে দাবি করেন মেহেন্দিগঞ্জ থানার ওসির সাথে তাদের বিরোধ আর রাজনৈতিক প্রতিপক্ষের ষড়যন্ত্রের কারণে এসব মিথ্যা তথ্য ছড়ানো হয়েছে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, মেহেন্দিগঞ্জ ও হিজলা উপজেলায় বছরজুড়েই ডাকাতি সংঘঠিত হয়ে আসছে। সম্প্রতি ডাকাতদের বিরুদ্ধে বিশেষ অভিযানে নামে পুলিশ। ফলশ্রুতিতে চলতি মাসের প্রথমার্ধে আন্তঃজেলা ডাকাত দলের ছয় সদস্য গ্রেপ্তার হন। পরবর্তীতে তাদের দেয়া তথ্যের ভিত্তিতে গত ৭ ডিসেম্বর ডাকাত দলের প্রধান নাঈম দেওয়ানকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ। মেহেন্দিগঞ্জের দড়িরচর খাজুরিয়া এলাকার বাসিন্দা নাঈমের বিরুদ্ধে বরিশালের বিভিন্ন থানায় হত্যা ও ডাকাতির ১৪টি মামলা রয়েছে।
সূত্রমতে, নাঈমকে গ্রেপ্তারের পর পুলিশের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ও স্থানীয় সাংবাদিকদের সামনে আনা হয়। এ সময় নাঈম নানা প্রশ্নের উত্তরে ডাকাতির গডফাদার হিসেবে আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের উল্লিখিত পাঁচ নেতার নাম বলেন। নাঈম বলেন, এসব নেতাদের নিয়মিত ডাকাতির ভাগ দেয়ার পাশাপাশি প্রতি মাসে টাকা দিতে হয়।
এ ব্যাপারে জেলা পুলিশ সুপার মোঃ ওয়াহিদুল ইসলাম বিপিএম বলেন, আন্তঃজেলা ডাকাত সর্দার নাঈমকে এখন পর্যন্ত জিজ্ঞাসাবাদ শেষ হয়নি। তাকে রিমান্ডে আনার জন্য আদালতে আবেদন জানানো হয়েছে। রিমান্ড মঞ্জুর হলে অভিযোগ সম্পর্কে আরও স্পষ্ট তথ্য পাওয়া যাবে।