মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া নৌরুটে দ্বিতীয়বারের মতো মেঘনা নদীতে ফেরি পারাপার কার্যক্রমের উদ্বোধন করেন মুন্সীগঞ্জ-৩ আসনের সংসদ সদস্য অ্যাডভোকেট মৃণাল কান্তি দাস।
এ নৌ-রুটে স্বর্ণচাপা, সন্ধ্যামালতী ও কর্ণফুলী নামে তিনটি ফেরি সার্ভিস দেওয়া হয়েছে।কিন্তু ফেরিঘাটে গাড়ি না আসায় ফেরিগুলোর স্টাফরা অলস সময় পার করছে।
আজ রোববার দুপুরে মেঘনা নদীর কিশোরঞ্জ এলাকায় দেখা যায়, ঘাটে ভেড়ানো রয়েছে স্বর্ণচাপা, সন্ধ্যা মালতী ও কর্ণফুলী। গেল ১৬ ডিসেম্বর সর্বশেষ মোটরসাইকেল নিয়ে কাজিপুরা ফেরিঘাট থেকে ছেড়ে যায় ফেরি সন্ধ্যামালতী। এরপর ঘাট থেকে আর কোনো ফেরি ছেড়ে যায়নি। ফেরি স্বর্ণচাপা, সন্ধ্যামালতী ও কর্ণফুলী ভেতরে ঢুকে দেখা যায়, গল্প করে অলস সময় পার করছেন চালকরা।
এদিকে ফেরি ঘাটে গাড়ি না আসার কারন, প্রচারণার অভাব বলে মনে করছেন মেঘনা নদীর দুপারের বাসিন্দারা। তারা বলেন, এ নৌ রুটে ফেরি চলাচল শুরু হইছে এ নিয়ে কর্তৃপক্ষের কোনো প্রচার-প্রচারণা নাই। রাস্তার মধ্যে কোন সাইনবোর্ডও দেওয়া হয় নাই। যার কারণে গাড়ি আসছে না। মেঘনা নদীতে ফেরি নিয়মিত সচল রাখার পাশাপাশি প্রচার-প্রচারণার দাবি জানান তারা।
ফেরি স্বর্ণচাঁপার মাস্টার শাহিনুর ইসলাম বলেন, আমরা সর্বক্ষণ আশায় থাকি গাড়ি আসবে। কিন্তু গাড়ি না আসায় ফেরিতে গল্প করে অলস সময় পার করছি।
বিআইডব্লিউটিসি সূত্রে জানা গেছে, মুন্সীগঞ্জ-গজারিয়া নৌপথে ফেরি চালু হওয়ায় দক্ষিণবঙ্গের ২১টি জেলার সঙ্গে চট্টগ্রামের দূরত্ব ৫০কিলোমিটার কমছে। পদ্মা সেতু হয়ে মুন্সীগঞ্জ শহরের ভেতর দিয়ে এ রুটে মোংলা ও পায়রা বন্দরে সহজে যাতায়াত করা যাবে। দেড় কিলোমিটার দূরত্বের এ নৌপথে ফেরি পারাপারে সময় লাগবে ২৫ থেকে ৩০ মিনিট। প্রতিটি ফেরির ধারণক্ষমতা ১০০ মেট্রিক টন।
গজারিয়া ঘাটের (বিআইডব্লিউটিসির) ব্যবস্থাপক মো. সিহাব বলেন, ফেরি চালাইতে আমাদের অনেক জ¦ালানি খরচ হয়। এখন আমাদের জ¦ালানি খরচ গাড়ি থেকে না উঠলে ফেরি চালাইতে পারব না। তারপরেও জনস্বার্থে আমরা ফেরি চলাচল শুরু করছি। এ ফেরি চলাচলের আগে ফেরিঘাটের দু-পাশের রাস্তা প্রশস্ত করা হলেও মুন্সীগঞ্জ শহর হতে যোগনীঘাট পর্যন্ত সড়ক অনেক সরু। যার কারণে এদিক দিয়ে গাড়ি আসছে না।
মুন্সীগঞ্জ সড়ক ও জনপদের নির্বাহী প্রকৌশলী দেওয়ান আবুল কাশেম মোহাম্মদ নাহীন রেজা বলেন, চরকিশোরগঞ্জ হতে মুন্সীগঞ্জ যোগণীঘাট পর্যন্ত যে রাস্তা, ওটা নারায়নগঞ্জ সড়ক ও জনপদ দেখে।ওই রাস্তাটি তারা প্রশস্তকরণ করেছে। বাকি যোগনীঘাট হতে মুন্সীগঞ্জ সুপার মার্কেট পর্যন্ত সড়কটি মুন্সীগঞ্জ পৌসভার।
এ ব্যাপারে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার প্রকৌশলী মোশাররফ হোসেন বলেন, এই সড়কের দু-পাশে অনেক স্থাপনা রয়েছে। ও গুলো ভাঙ্গতে পারলে সড়কটি প্রশস্তকরণ করা যেত। এ মুহুর্তে এ সড়কটি প্রশস্ত করার মতো অর্থ ও পরিকল্পনা আমাদের নেই।
উল্লেখ্য. ২০১৮ সালের ৪ জুন মেঘনা নদীতে স্বর্ণচাপা’ ও ‘সন্ধ্যামালতি’ নামের ছোট দুটি ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছিল। তবে সে সময় ঘাটের দুই পাড়ের সরু ও খানাখন্দে ভরা সড়ক এবং যাত্রী ও পর্যাপ্ত যানবাহন না থাকায় উদ্বোধনের ছয় মাসের মধ্যে ফেরি সার্ভিস বন্ধ হয়ে যায়। ফের দ্বিতীয় বারের মতো চলতি বছর গত ৯ নভেম্বর দীর্ঘ চার বছর পর এ নৌ-রুটে স্বর্ণচাপা, সন্ধ্যা মালতী ও কর্ণফুলী নামের তিনটি ফেরি সার্ভিস চালু করা হয়েছে।