রাজশাহীর বাঘা পৌর নির্বাচনে নাতী বৌ শিরিনা বানুর ঘাড়ে ভর করে ভোট দিলেন ৮২ বছরের বৃদ্ধা কমেলা বেওয়া। বৃহস্পতিবার (২৯ ডিসেম্বর) বেলা সাড়ে ১১টায় বাঘা মডেল উচ্চবিদ্যালয় কেন্দ্রে ভোট দেন তিনি।
এ সময় কথা হয় কমেলা বেওয়ার সাথে। তিনি জানান, জীবনে এই বয়সে এসে মেশিনের সাহায্যে ভোট দিতে পেরে নিজেকে আনন্দিত মনে করেছেন তিনি। কারণ হিসেবে বলেন, এই বয়সে ভোট দিতে পারব এমনটা আশা করিনি। বয়সের ভারে ঠিকভাবে কথা বলতে পারছেনা। তার বাড়ি বাঘা পৌরসভার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের চক আহমদপুর গ্রামে। শিরিনা বানু একই গ্রামের চাচী শাশুড়ি রাবিয়া বেওয়া (৭০) ও ননদ নাজমা বেওয়াকে (৬৫) সাথে নিয়ে ভোট দিতে নিয়ে যেতে দেখা যায়। তারা লাঠির উপর ভর করে ভোট কেন্দ্রে আসেন।
কমেলা বেগমের স্বামী মারা গেছেন ২৫ বছর আগে। জাতীয় ও স্থানীয় নির্বাচনে কতবার ভোট দিয়েছেন তা বয়সের ভারে জানাতে পারেনি কমেলা বেওয়া। তার দুই ছেলে ও তিন মেয়ের অনেক আগেই বিয়ে দিয়েছেন। আর এভাবে ভোট দেওয়ার সৌভাগ্য আসবে না বলেও হতাশা প্রকাশ করেন তিনি। যে কোন সময় সৃষ্টি কর্তা নিয়ে নিবে। এই ওয়ার্ডে মোট ভোটার সংখ্যা ৩ হাজার ৫৬।
বাঘা মডেল উচ্চবিদ্যালয় ভোট কেন্দ্রে প্রিজাইজিং অফিসার ও উপজেলা পল্লী উন্নয়ন অফিসার এমরান আলী বলেন, সুষ্ট সুন্দরভাবে ভোট গ্রহণ অনুষ্ঠিত হচ্ছে। এই কেন্দ্রে বেলা ১১টা পর্যন্ত ২৫ শতাংশ ভোট পড়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে একই কেন্দ্রে উত্তর মিলিকবাঘা গ্রামের ৮৫ বছরের বৃদ্ধ হামিদ মন্ডল তার নাতী রানা আহম্মেদের ঘাড়ে ও লাঠির উপর ভর করে ভোট দিয়ে বাড়ি ফিরতে দেখা গেছে। তার দুই ছেলে দুই মেয়ে রয়েছে। অনেক আগেই তাদের বিয়ে দেওয়া হয়েছে। আগামীতে ভোট দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আল্লাহ বাচিয়ে রাখলে ভোট দিব।
অপর দিকে বাঘা পৌরসভার ৮ নম্বর ওয়ার্ডের মুর্শিদপুর গ্রামের সামসুন্নাহারের চাচী শাশুড়ি গেদেজান বেওয়া (৭৫) মুর্শিদপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ভোট কেন্দ্রে ভোট দিয়ে ফেরার পথে কথা হলে তিনি জানান, আমার চাচী শাশুড়ির বয়স হয়েছে, একা চলাফেরা করতে পারেনা। তাই শাশুড়িকে সাথে নিয়ে এসে নিজেও ভোট দিলাম শাশুড়ি ভোট দিলেন।
এদিকে ইভিএমের সেন্সর ঠিকমতো কাজ না করা, আঙুলের ছাপ না মেলায় এবং এনআইডি কার্ডের নম্বরের সঙ্গে ভোটার তালিকার নম্বরের মিল না থাকায় কিছুটা সমস্যা দেখা দেয় বলে জানান ভোট কেন্দ্রের দায়িত্বপ্রাপ্ত কর্মকর্তারা।