নিজের জন্মদাতা বাবা ও যে মায়ের পেটে দশ মাস দশ দিন ধরে তিল তিল করে বেড়ে উঠে এই পৃথিবীর আলো দেখে একটি সন্তান সেই বাবা মার নামটাই নিজের জীবন থেকে মুছে দিলো কেবল মাত্র একটি সরকারি চাকরির জন্য। এমন ঘটনা ঘটেছে কুষ্টিয়া জেলার দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপ নগর ইউনিয়নের সিরাজ নগর গ্রামে। মুক্তিযোদ্ধা চাচা আহসান হাবীব লাল মিয়াকে বাবা ও লাল মিয়ার স্ত্রী কে মা বানিয়ে বহাল তবিয়তে সরকারি উচ্চ পদে চাকরি করে যাচ্ছেন ঐ এলাকার আবুল কাসেমের ছেলে কামাল হোসেন। এলাকাবাসী জানান, আবুল কাশেমের ছেলে কামাল হোসেন ছোটবেলা থেকেই ছিলেন অনেক চালাক, তাই সে নিজের বাবা-মায়ের নাম সকল প্রকার কাগজপত্র থেকে বাদ দিয়ে অতিরিক্ত সুবিধা পাওয়ার লক্ষে ওই স্থানে নাম বসিয়েছে মুক্তিযোদ্ধা চাচা আহসান হাবীব লাল মিয়া ও লাল মিয়ার স্ত্রীর। আর এমন কর্মকা-ের ফলে কামাল হোসেনের জীবনের চাকা মোড় নিয়েছে উপরের দিকে, ফিরে তাকাতে হয়নি পেছনে, বিসিএস ৩৫ তম ব্যাচে সুপারিশ প্রাপ্ত হয়েই ঊর্ধ্বমুখে ঘোরতে শুরু করে কামাল হোসেনের ভাগ্যের চাকা। ২০১৬ সাল ৩৫ তম বিসিএস ক্যাডার সুপারিশ প্রাপ্ত হওয়ার পর সহকারী কমিশনার ভূমি হিসেবে সংশ্লিষ্ট দপ্তরে যোগদান করেন কামাল হোসেন। এখন বর্তমান তিনি খুলনা ডিসি অফিসে সিনিয়র সহকারী কমিশনার ও এক্সিকিউটিভ ম্যাজিস্ট্রেট (ভূমি অধিগ্রহণ শাখা)য় কর্মরত আছেন। ইতিমধ্যেই কামাল হোসেন নামে-বেনামে প্রায় কয়েক কোটি টাকার সম্পদ ক্রয় করেছেন। মুক্তিযোদ্ধার সন্তান না হয়েও মুক্তিযোদ্ধা চাচাকে বাবা বানিয়ে সরকারি সুযোগ-সুবিধা নিয়ে যে প্রতারণা করেছে কামাল হোসেন তা নিয়ে রীতিমতো হতবাক এলাকায় বসবাসরত জনগণ। এ বিষয়ে কামাল হোসেনের চাচা বীর মুক্তিযুদ্ধা আহসান হাবীব লাল মিয়ার সাথে কথা বললে তিনি জানান, কামাল হোসেন আমার ভাইয়ের ছেলে তাকে ছোটবেলা থেকে আমি দেখাশোনা করে আসছি। তার সকল প্রকার সার্টিফিকেটে বাবা-মা হিসাবে আমার নাম এবং আমার স্ত্রীর নাম দেওয়া আছে এটা বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পর্যন্ত জানেন। এদিকে লাল মিয়ার স্ত্রী জানান, কামাল আমার দেবরের ছেলে ছোটবেলা থেকে অভাব-অনটনের মধ্যে দিয়ে সে মানুষ হয়েছে তাই আমরা তাকে আমাদের ছেলে হিসেবে সব যায়গায় নাম দিয়ে আমাদের ক্ষমতাই চাকরিটা পাইয়ে দিয়েছি। অন্যদিকে সার্টিফিকেট ও ভোটার আইডি কার্ডে বাবা মায়ের নাম দেওয়ার বদলে চাচা-চাচীর নাম দেওয়ার কারণ জানতে চাইলে কামাল হোসেন জানান, যদি আপনাদের কাছে সঠিক তথ্য থাকে সেই অনুযায়ী আপনারা সংবাদ প্রকাশ করুন তাতে আমার কোন সমস্যা নেই। এ বিষয়ে দৌলতপুর উপজেলার ফিলিপনগর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান নইমুদ্দিন সেন্টু জানান, জন্মসূত্রে আমার বাড়ি ২ নাম্বার ওয়ার্ডে ও আহসান হাবীব লাল মিয়ার বাড়ি ৭ নম্বর ওয়ার্ডে।আমার জানামতে কামাল হোসেন আবুল কাসেমের ছেলে সে মুক্তিযোদ্ধা আহসান হাবীব লালমিয়ার সন্তান নয়।