সারিয়াকান্দি (বগুড়া) প্রতিনিধি বগুড়ার সারিয়াকান্দিতে যমুনা নদীর চরাঞ্চলে ভূট্টা চাষের বিপ্লব ঘটেছে। গত ৫ বছর আগেই ভূট্টা চাষ হয়েছিল প্রায় দেড় হাজার হেক্টর জমিতে। এখন সেখানে চরে চাষ হচ্ছে প্রায় সাড়ে ৬ হাজার হেক্টর জমিতে। খরচ কম লাভ বেশি হওয়ায় অধিকাংশ চাষিরা ঝুঁকছেন এ ফসলের দিকে। চরের মাঠে মাঠে সবুজ ভূট্টা গাছে ভরে ওঠেছে। এরইমধ্যে ভূট্টা গাছে মোচা বের হয়েছে। সে মোচায় ভেতর সোনালি ভূট্টা দানা সবুজ গাছে দোল খাচ্ছে। এতে চাষিদের মনে আশার আলো দানাবেধে ওঠতে শুরু করেছে।
জানা যায়, সারিয়াকান্দির বাঙালি ও যমুনা নদীর বিভিন্ন চর রয়েছে। এসব চরে বন্যার পর চাষিরা হরেক রকমের ফসলের চাষাবাদ করে থাকেন। এমন কোনো ফসল নেই যে চরের চাষিরা তা করেন না। এ মৌসুমেও চারদিকে সবুজের সমারোহে ভরে উঠেছে চরের উর্বর জমি। তবে ক’ বছর আগেই চরের চাষিদের কাছে প্রিয় ছিল মরিচ চাষ। কিন্তু কৃষকরা যখন মরিচ ফসল বাজারে তোলেন তখন দাম থাকে না। পরে দাম বাড়লেও কৃষকরা দাম না পাওয়ায় মরিচ চাষের নিরুৎসাহী হয়েছেন। এখন সে স্থান দখল করে নিচ্ছে ভূট্টা ফসল। এ ফসলে খরচও কম কিন্তু বাজারে দাম বেশি পাওয়ায় অধিক হারে ঝুকছেন ভূট্টা চাষে। গত ২০১৯ সালে এখানে চাষ হয়েছিল মাত্র দেড় হাজার হেক্টর জমিতে। আবার গত বছর চাষ হয় সেখানে ৩ হাজার ৪৫০ হেক্টর জমিতে। এবার সেখানে চাষ হয়েছে এক লাফে দ্বিগুন। অর্থাৎ ৬ হাজার ৫ শ হেক্টর জমিতে এ পর্যন্ত ভূট্টার চাষ হয়েছে। উপজেলা কৃষি অফিসের মাঠ পর্যায়ের কর্মকর্তারা বলছেন, এর চাষ এ বছর আরো বাড়তে পারে। কর্ণিবাড়ী ইউনিয়নের ছোনপাচা চরের আয়েন উদ্দিন বলেন, আমি ৮ বিঘা জমিতে ভূট্টার আবাদ করেছি। প্রতি বিঘায় সেচ, সার ও অন্যান্য খরচ বাবদ পড়েছে প্রায় ১৫ হাজার টাকা। সেখানে প্রতি মণ ভূট্টা বেচতে পারবো ১৪ শ’ থেকে ১৫শ টাকা। একই চরের ফরিদ মন্ডল চাষ করেছেন ১০০ বিঘার বেশি জমিতে। তার সাথে কথা হয় গত কাল, এ সময় তিনি বলেন, প্রতি বিঘায় জমি থেকে ভূট্টার আশা করছেন ৫০ থেকে ৬০ মণ। সোনালী ভূট্টা বিক্রি করে মোটা অংকের নগদ টাকা ঘরে উঠবে আশা করেন ফরিদ মন্ডল। তিনি বলেন, চরে ভূট্টা চাষে বিপ্লব ঘটেছে। উপজেলা কৃষি অফিসার আবদুল হালিম বলেন, চরের চাষিরা ফসল চাষে আধুনিকতার ছোঁয়া লেগেছে। সেখানে যান্ত্রিক পদ্ধতিতে চাষাবাদ করায় যে কোন ফসল ভালো উৎপাদন করতে পাড়ছেন। ভূট্টা চাষ করে চরের চাষিরা অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী হবেন।