বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের (বিএনপি) চেয়ারপার্সন বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক উপদেষ্টা, প্রতিমন্ত্রী উকিল আবদুস সাত্তার ভূঁইয়াকে সরাইলে অবাঞ্চিত ঘোষণা করেছেন স্থানীয় বিএনপি ও এর অঙ্গসংগঠন। এর আগে গত ১ জানুয়ারি সাত্তারকে দলের সকল পদ থেকে বহিস্কার করেছেন কেন্দ্রীয় বিএনপি। সোমবার সরাইল প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এ ঘোষণা দিয়েছেন তারা। প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মদ মাহবুব খানের সঞ্চালনায় ও সভাপতি মো. আইয়ুব খানের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন সরাইল উপজেলা বিএনপি’র সম্পাদক এড. মো. নুরূজ্জামান লস্কর তপু। লিখিত বক্তব্যে তিনি বলেন, দলীয় সিদ্ধান্ত অমান্য ও শৃঙ্খলা পরিপন্থী কর্মকা-ে লিপ্ত থাকায় বিএনপি’র চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা কাউন্সিলের সদস্য সাত্তারকে দল থেকে অব্যাহতি ও বহিস্কার করা হয়েছে। অনলাইন মিডিয়ার মাধ্যমে বিষয়টি নিশ্চিত হয়েছি। গত রোববার জেলা নির্বাচন অফিস থেকে সাত্তারের পক্ষে জনৈক ব্যক্তি আগামী উপনির্বাচনে অংশগ্রহণ করতে মনোনয়ন ফরম সংগ্রহ করেন। ফলে বিএনপি’র ঘাঁটি খ্যাত সরাইল উপজেলার মানুষের মনে তীব্র ক্ষোভ তৈরী হয়েছে। এখানে জিয়ার সৈনিকদের অর্জনের ফসল হিসাবেই সাত্তার ৪ বার এমপি ও তিন দপ্তরে প্রতিমন্ত্রী হতে পেরেছেন। সাত্তার নিজের স্বার্থ চরিতার্থ করতে শেষ বয়সে অনৈতিক সুযোগ সুবিধার আশায় স্বেচ্ছাচারিতার আশ্রয় নিয়েছেন। দলীয় শৃঙ্খলা বিরোধী কাজ করেছেন। আমরা সরাইল উপজেলা বিএনপি ও অঙ্গসংগঠন আবদুস সাত্তারকে সরাইলে অবাঞ্চিত ঘোষণা করলাম। সরাইলে উনাকে প্রতিহত করার ঘোষণাও দিয়েছেন। তিনি বলেন, স্বার্থপর, লোভী, নির্লজ্জ আত্মকেন্দ্রিক সাত্তারকে আমরা সামাজিক ও রাজনৈতিক ভাবে বয়কট করলাম। জনশ্রƒতি আছে লোভের বশবতি হয়ে সাত্তারের ছেলে মাঈনুল হাসান তুষারের মাধ্যমে সরকারের সাথে আঁতাত করেছেন। ১৯৭৯ সালে সাত্তার দলের বিরূদ্ধে গিয়ে নির্বাচন করেছিলেন। জীবনের শেষ সময়ে তিনি আবার ৪৩ বছর আগের পুনরাবৃত্তি ঘটিয়েছেন। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা বিএনপির সভাপতি মো. আনিছুল ইসলাম ঠাকুর বলেন, সাত্তার সাহেবের সকল অর্জনের পেছনে রয়েছে সরাইল বিএনপি’র সকল শ্রেণির নেতা কর্মীদের অক্লান্ত শ্রম। তাই সবার পক্ষ থেকে ওঁর এহেন নেক্কারজনক কর্মকান্ডের তীব্র নিন্দা জানাচ্ছি। শহীদ জিয়া, বেগম খালেদা জিয়া ও তারেক জিয়ার ঘাঁটি এই সরাইলে সাত্তারের আর স্থান নেই। উনি এখন আর বিএনপি পরিবারের কেউ না। উনি পদত্যাগ করেছেন শুনেছি। কিন্তু পদত্যাগ পত্রের কপিটি সরাইল উপজেলা বিএনপিকে দেননি। মানুষ উনাকে ভোট দিতেন, নাকি বিএনপিকে ভোট দিতেন তা এবার প্রমাণ হবে। বিএনপি’র কোন নেতা কর্মী ওঁর পক্ষে ভোট চাইলে তার বিরূদ্ধে দলের গঠনতন্ত্র অনুযায়ী ব্যবস্থা নেয়া হবে। সুবিধাবাদী সাত্তারের বিরূদ্ধে সকলকে ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। গত বছরের ২৯ আগস্ট বিএনপি’র একটি কর্মসূচিতে আবদুস সাত্তারকে ব্যানারে প্রধান অতিথি করা হয়েছিল। তিনি আসেননি। এসেছিলেন ব্যারিষ্টার রূমিন ফারহানা। রাজনৈতিক মামলায় দলের নেতা কর্মীরা কারাবরণ করেছেন। সাত্তার সাহেব কোন দিন তাদের দেখতেও যাননি। তিনি কি ব্যক্তির ভোট পান? নাকি দলের ভোটে নির্বাচিত হন। তা এবার বুঝিয়ে দেব। আগামী উপনির্বাচন কেমন হবে? আদৌ হবে কিনা। তাও বলতে পারছি না। নির্বাচন হলে সাত্তার সাহেবকে হিসাব বুঝিয়ে দিবেন সরাইলবাসী। সংবাদ সম্মেলনে অন্যান্যের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন-উপজেলা যুবদলের আহ্বায়ক আবু সুফিয়ান সিদ্দিকি, সদস্য সচিব মো. নুরে আলম, স্বেচ্ছাসেবক দলের আহ্বায়ক মেহেদী হাসান পলাশ, যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রবিউল আলম, কৃষক দলের যুগ্ম আহ্বায়ক মো. রোমান, ছাত্রদলের আহ্বায়ক জামাল লস্কর ও সদস্য সচিব মীর ওয়ালিদ প্রমূখ।