ঘরহীনদের ঘর নির্মাণ, প্রতিবন্ধীদের হুইল চেয়ার, গরীব শিক্ষার্থীদের অর্থ সহায়তা, রক্তদান, পাখির অভয়াশ্রম, প্রতিভাবানদের পুরস্কার দেওয়া, অক্সিজেন সিলিন্ডার পৌঁছে দেওয়াসহ অসংখ্য মানবিক কাজ করছেন একটি ফেসবুক গ্রুপ।
উপজেলার ছোট ভাটপাড়া গ্রামের হতদরিদ্র আব্বাস আলী বলেন, আমি দরিদ্র মানুষ। ২০২১ সালের ১৩ আগস্ট ঘরে আগুন লেগে সবকিছু পুড়ে ছাই হয়ে যায়। ছোট ছোট ৩ সন্তান নিয়ে খোলা আকাশের নিচে পলিথিন টানিয়ে রাতে থাকতাম। খবর পেয়ে কালীগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা গ্রুপের কয়েকজন সদস্য আমার বাড়িতে ছুটে আসেন। তারা আমার পরিবারের অসহায় অবস্থা দেখে নিজেদের গাঁটের টাকায় বাড়ি করে দেন। কমলাপুর গ্রামের রুহুল আমিন বলেন, ধার দেনা করে একটি ইজিবাইক কিনেছিলাম। তা দিয়ে সংসার চালাতাম। কিন্তু ২০২১ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি শহরের চিনিকল এলাকা থেকে ইজিবাইকটি চুরি হয়ে যায়। এতে আমি পরিবার নিয়ে পথে বসি। কান্না ছাড়া কোনো উপায় ছিল না। আমার পারিবারিক দুরাবস্থা দেখে কালীগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা গ্রুপ ৯ মার্চ নতুন ইজিবাইক কিনে দেয়। কাষ্টভাঙ্গা গ্রামের মাসুদ হোসেন বলেন, করোনাকালে আমার স্ত্রী ফেরদৌসি বেগম ও মেয়ে সানজিদা খাতুন করোনায় আক্রান্ত হয়। তখন পরিবারে মহাকষ্ট নেমে আসে। ওই সময় মানুষ মহামারি থেকে বাঁচতে চরম ভয়ের মধ্যে ছিল। আক্রান্তদের পরিবারের ধারে কাছেও যেত না। স্ত্রী ও সন্তানের শ্বাসকষ্ট শুরু হলে কালীগঞ্জের আঞ্চলিক ভাষা গ্রুপের সদস্যরা বিনামূল্যে অক্সিজেনের সিলিন্ডার বাড়িতে দিয়ে যান। বাকুলিয়া গ্রামের প্রতিবন্ধী তানজির হোসেনের চায়ের দোকানে আগুন লেগে পুড়ে গেলে নগদ ২০ হাজার টাকা দেয়।
কালীগঞ্জ আঞ্চলিক ভাষা গ্রুপের অ্যাডমিন শাহরিয়ার আলম সোহাগ বলেন, ‘আঞ্চলিক ভাষায় গড়ি মানবিক বন্ধন’ স্লোগানে গ্রুপটি পথচলা। কালীগঞ্জ আঞ্চলিক ভাষা গ্রুপ মাতৃভাষাকে সম্মান দেখিয়ে গ্রুপের এমন নাম তারা দেন। প্রথম দিকে অল্প সংখ্যক সদস্যদের নিয়ে পথচলা শুরু। এখন তাদের সদস্য সংখ্যা ৬১ হাজারে দাঁড়িয়েছে।