পাবনার চাটমোহর উপজেলার বরদানগর আব্বাসিয়া দাখিল মাদ্রাসায় সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির অভিযোগ ওঠার পর মাদ্রাসার সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম ব্যাকডেটে একটি রেজুলেশন তৈরি করেছেন মর্মে একাধিক সূত্রে জানা গেছে। সেখানে মাদ্রাসার পুরাতন খাতা বিক্রির বিষয়টি উল্লেখ করে শাক দিয়ে মাছ ঢাকার অপচেষ্টা করা হয়েছে। এদিকে গত ৩ জানুয়ারি সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির বিষয়ে এলাকাবাসী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগ দিলেও এখন পর্যন্ত কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এলাকাবাসীর অভিযোগ মাদ্রাসার সুপার মোঃ সাইদুল ইসলামের নির্দেশে শিক্ষক রাকিবুল ইসলাম গত ৩০ ডিসেম্বর গভীর রাতে মাদ্রাসার পিয়ন মোঃ আঃ আজিজ ও নৈশপ্রহরী মোঃ তৈয়ব আলীর সহযোগিতায় মাদ্রাসায় সংরক্ষিত সরকারি পাঠ্যবই বিক্রি করেন বলে অভিযোগ। রাতের আঁধারে এভাবে পাঠ্যবই বিক্রির বিষয়টি জানাজানি হলে এলাকাবাসী নৈশপ্রহরী মোঃ তৈয়ব আলীকে জিজ্ঞাসাবাদ করলে নৈশপ্রহরী বই বিক্রির বিষয়টি নিশ্চিত করেন।
এলাকাবাসীর অভিযোগ,মাদ্রাসার শিক্ষার্থীর সংখ্যা খুবই কম। অথচ সুপার উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসে প্রতিবছর মিথ্যে তথ্য দিয়ে অতিরিক্ত বই বরাদ্দ নিয়ে আসেন। প্রাপ্ত বইয়ের সিংহভাগ বিতরণ করা হয়না। তদন্ত করলেই এর সত্যতা মিলবে। এলাকাবাসী জানান,৩০/৪০ মণ বই বিক্রি করা হয়েছে।
এদিকে গত ৩ জানুয়ারি এলাকার অর্ধশতাধিক সচেতন ব্যক্তি মাদ্রাসায় সংরক্ষিত সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির বিষয়ে চাটমোহর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার নিকট লিখিত অভিযোগ করেছেন। এলাকাবাসী সরেজমিন তদন্তপূর্বক সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির সাথে জড়িত দোষী সুপারসহ অন্যান্যের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করার দাবি জানিয়েছেন। কিন্তু আজ অবধি কোন পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
এদিকে বরদানগর আব্বাসিয়া দাখিল মাদ্রাসার একাধিক শিক্ষকের কোন শিক্ষক নিবন্ধন নেই। ভুয়া নিবন্ধন দিয়ে বছরের পর বছর চাকুরি করে সরকারি টাকা আত্মসাৎ করছেন। মাদ্রাসার সুপার সাইদুল ইসলামের যোগসাজসে ভুয়া নিবন্ধনধারী শিক্ষকরা দিব্যি চাকুরি করে যাচ্ছেন। সংশ্লিষ্টরা জানার পরও কোন ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি বলে জানা যায়। বই বিক্রির পর বিষয়টি নিয়ে এলাকাবাসী সোচ্চার হলে মাদ্রাসার সুপার মোঃ সাইদুল ইসলাম ব্যাক ডেটে একটি রেজুলেশন তৈরি করেছে বলে একাধিক সূত্র জানায়। রেজুলেশন পুরাতন খাতা বিক্রির বিষয়টি উল্লেখ করা হয়েছে। বই বিক্রির সাথে মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতিও জড়িত বলে এলাকাবাসীর অভিযোগ।
বই বিক্রির বিষয়ে মাদ্রাসার সুপার মোঃ সাইদুল ইসলামের কাছে জানতে চাইলে তিনি বলেন,কোন বই বিক্রি করা হয়নি। পুরাতন খাতা বিক্রি করা হয়েছে। গভীর রাতে কেন সেটা বিক্রি করা হলো-এমন প্রশ্নের তিনি কোন সদুত্তর দিতে পারেননি।
মাদ্রাসার এডহক কমিটির সভাপতি মোঃ শওকত রানা বলেন,বই বিক্রির ঘটনা সত্য নয়,পুরাতন খাতা বিক্রি করা হয়েছে।
উপজেলা অ্যাকাডেমিক সুপারভাইজার মোঃ গোলাম মোস্তফা বলেন,সরকারি পাঠ্যবই বিক্রির কোন বিধান বা নির্দেশনা নেই। যদি তারা সরকারি পাঠ্যবই বিক্রি করে তাহলে তদন্তপূর্বক ব্যবস্থা গ্রহণ করা দরকার।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোঃ মগরেব আলী বলেন,আমি এলাকার লোকজনের মারফত জানতে পেরেছি বিষয়টি। পরে শুনেছি পুরাতন খাতা বিক্রি করা হয়েছে।