ঘন কুয়াশায় সাড়ে দশ ঘণ্টা দৌলতদিয়া-পাটুরিয়ায় নৌরুটে ফেরি চলাচল বন্ধ ছিলো। এ সময় প্রচণ্ড ঠাণ্ডার মধ্যে ভোগান্তিতে পড়েন চালক ও যাত্রীরা। বিআইডব্লিউটিসি দৌলতদিয়া ঘাট শাখার সহকারী ব্যবস্থাপক মো. আলিম দাঈয়ান জানান, গত শনিবার সন্ধ্যা থেকেই কুয়াশার ঘনত্ব বাড়তে থাকে। রাত সাড়ে ১০টার দিকে নদী পথ অস্পষ্ট হয়ে যায়। সে সময় নৌ দুর্ঘটনা এড়াতে ফেরি চলাচল বন্ধ করে দেওয়া হয়। কুয়াশা কেটে গেলে গতকাল রোববার সকাল ৯টা থেকে ফেরি চলাচল আবার শুরু হয়। তিনি বলেন, “ফেরি বন্ধ হওয়ার পর জানতে পারি কুয়াশার কারণে পথ হারিয়ে মাঝ নদীতে পরাণ, বীরশ্রেষ্ঠ মতিউর রহমান, শাহ মকদুম ও হাসনাহেনা ফেরি আটকা পড়েছে। সারারাত সেগুলো মাঝ নদীতে আটকে ছিলো। সকালে কুয়াশা কেটে যাওয়ার পর পাড়ে ভিড়ে।” সকাল ৮টায় দৌলতদিয়া ফেরিঘাটে গিয়ে দেখা যায়, ঘন কুয়াশার কারণে একটু দূরেও কিছু দেখা যাচ্ছে না। ফেরি বন্ধ থাকায় ঘাটের জিরো পয়েন্ট থেকে ঢাকাণ্ডখুলনা মহাসড়কের প্রায় দেড় কিলোমিটার এলাকায় দুই লাইনে যাত্রীবাহী পরিবহন ও পণ্যবাহী ট্রাকের দীর্ঘ লাইন তৈরি হয়েছে। তীব্র শীতে সারারাত আটকে থাকা চালক ও যাত্রীরা তাদের ভোগান্তির কথা জানান। যশোর থেকে আসা ট্রাক চালক মোজাম্মল হোসেন বলেন, “ঠাণ্ডায় সারারাত আটকে আছি ভাই, একটুও ঘুমাতে পারি নাই। কি যে কষ্ট সেটা বলে বুঝানো যাবে না। এখানে সেতু দরকার, তাছাড়া মানুষের এই ভোগান্তি যাবে না।” ফরিদপুর থেকে আসা আরেক ট্রাক চালক আজিজ মণ্ডল বলেন, “গত শনিবার রাত ১১টায় ঘাটে এসে শুনি ফেরি বন্ধ, তখন থেকে বসে আছি। ফেরি বন্ধ না থাকলে এতক্ষণে ঢাকায় পৌঁছে মাললামাল আনলোড করে ঘুম দিতাম।” রাবেয়া পরিবহনের যাত্রী সাদিয়া আফরিন বলেন, “সকালে ঘাটে আসার পর বাস আর যাচ্ছে না। প্রথমে ভেবেছি জ্যাম বোধ হয়। পরে শুনলাম, কুয়াশায় ফেরি বন্ধ। প্রচণ্ড শীতে কষ্টতো হচ্ছেই, কিন্তু কি করার আছে।” আরিফুল ইসলাম নামের আরেক যাত্রী বলেন, পদ্মা সেতু চালু হওয়ার পর গোপালগঞ্জ, শরীয়তপুর, মাদারীপুর, বরিশালসহ বেশ কয়েকটি অঞ্চলের মানুষদের সুবিধা হয়েছে। কিন্তু রাজবাড়ী কুষ্টিয়া ও মাগুরার লোকজন এখনও ভোগান্তিতে পড়েন ফেরি ঘাটে এসে। “এই ভোগান্তি থেকে মুক্তি পেতে দৌলতদিয়া-পাটুরিয়া নৌরুটে দ্বিতীয় পদ্মা সেতু দরকার।”