মেট্রোরেল করতে গিয়ে সরকার দুই হাজার কোটি লোপাট করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু।
তিনি বলেছেন, আওয়ামী লীগ এত উন্নয়ন করেছে, তারপরও তাদের ভয়। কারণ জনগণের উন্নয়ন হয়নি, উন্নয়ন হয়েছে তাদের। এখন শুন্যের ওপর রেলগাড়ি (মেট্রোরেল)চালু করেছে। কিন্তু এই রেলগাড়ি করতে গিয়ে প্রায় ২ হাজার কোটি টাকা লোপাট হয়েছে। এখন জনগণ ফূর্তিতে মেট্রোরেলে চড়ছে, কিছুদিন পর আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। আওয়ামী লীগ যদি উন্নয়ন করে থাকে তাহলে নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার দিতে তারা ভয় পায় কেন? তারা জনগণ নয়, পুলিশ বাহিনীর ওপর ভর করে রাজনীতি করছে।
বুধবার (১১ জানুয়ারি) দুপুরে রংপুর নগরীর গ্রা- হোটেল মোড়ে বিএনপির দলীয় কার্যালয়ের সামনে গণঅবস্থান কর্মসূচিতে এসব কথা বলেন তিনি। সরকারের পদত্যাগ, সংসদ বাতিল, নির্দলীয় নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকারের অধীনে নির্বাচনসহ ১০ দফা দাবিতে বিভাগীয় এই গণঅবস্থান কর্মসূচি পালন করে বিএনপি।
জনগণের ভোটাধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য নিরপেক্ষ তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা ফিরিয়ে আনতে আমরা সরকারকে বাধ্য করব। আমাদের আন্দোলনে জনগণ সঙ্গে আছে। এই সরকারকে জনগণের আন্দোলনের কাছে মাথা নত করতে হবে। জনতার কাছে মাথা নত করে আইয়ুব, ইয়াহিয়া, এরশাদ সরকার আর টিকে থাকতে পারেনি, সুতরাং আওয়ামী লীগ সরকারও টিকতে পারবে না।
এর আগে সকাল ১০টার পর থেকে রংপুর ও আশপাশের জেলা থেকে বিএনপি, ছাত্রদল, যুবদল ও স্বেচ্ছাসেবক দল, কৃষক দল, মহিলা দল, ওলামা দলসহ অন্যান্য অঙ্গ সংগঠনের নেতাকর্মীরা ছোট-ছোট মিছিল নিয়ে রংপুর নগরীর গ্রান্ড হোটেল মোড়ে বিএনপির কার্যালয়ের সামনে আসতে শুরু করে। গণঅবস্থান কর্মসূচিতে অংশ নিতে আসা নেতাকর্মীদের উপস্থিতি বিএনপির কার্যালয় থেকে শাপলা চত্বর ও জাহাজ কোম্পানি মোড় পর্যন্ত ছাড়িয়ে যায়। তাদের হাতে ছিল কারাবন্দি নেতাদের মুক্তি চেয়ে ব্যানার, ফেস্টুন, জাতীয় পতাকা ও দলীয় পতাকা। কর্মসূচি চলাকালে জাসাস এর শিল্পীরা সঙ্গীত পরিবেশন করেন। এ সময় দলীয় নেতাদের বক্তব্য আর শিল্পীদের সঙ্গীতে স্লোগানে স্লোগানে উজ্জ্বীবিত হয়ে উঠেন নেতাকর্মী ও সমর্থকরা।
সমাবেশে রংপুর মহানগর বিএনপির আহ্বায়ক সামসুজ্জামান সামুর সভাপত্বিতে আরও বক্তব্য রাখেন, বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব ও এমপি সাবেক হারুন অর রশিদ, রংপুর বিভাগীয় সাংগঠনিক সম্পাদক ও সাবেক উপমন্ত্রী অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলুসহ কেন্দ্রীয় ও আট জেলা থেকে আগত নেতৃবৃন্দ। এছাড়াও বক্তব্য দেন রংপুর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক সাইফুল ইসলাম, মহানগরের সদস্য সচিব মাহফুজ উন-নবী ডনসহ আরো অনেকে।
এদিকে বিএনপির গণঅবস্থান কর্মসূচি ঘিরে যেকোনো ধরণের নাশকতা, সহিংসতা ও অরাজকতা মোকাবিলায় প্রস্তুত রয়েছে ক্ষমতাসীন দলের নেতাকর্মীরা। সকাল থেকে রংপুর জেলা ও মহানগর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা নগরীর বঙ্গবন্ধু ম্যুরাল চত্বর, প্রেসক্লাব চত্বর, জাহাজ কোম্পানি মোড়ে অবস্থান করেন। সতর্ক অবস্থানে ছিল আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরাও। নগরীর মোড়ে মোড়ে পুলিশের পাশাপাশি সাদা পোশাকে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যদের টহল দিতে দেখা যায়।
অন্যদিকে গণঅবস্থান কর্মসূচির কারণে শাপলা চত্বর থেকে জাহাজ কোম্পানি মোড় পর্যন্ত সড়কের এক পাশের যান চলাচলে বিঘœ সৃষ্টি হওয়াতে সড়কে তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়। এতে ভোগান্তিতে পড়েন সাধারণ মানুষজন।