মোবাইল ফোন বা ইন্টারনেটের মাধ্যমে যোগাযোগে সরকারের আড়িপাতার ব্যবস্থা চালুর উদ্যোগকে সংবিধান ও মৌলিক অধিকার পরিপন্থি হিসেবে আখ্যায়িত করেছে বাংলাদেশ ন্যাশনাল আওয়ামী পার্টি (বাংলাদেশ ন্যাপ)। দলটি বলছে, সরকারের আড়িপাতার ব্যবস্থা সরকারকেও জিম্মি করতে পারে। শনিবার গণমাধ্যমে প্রেরিত এক বিবৃতিতে পার্টির চেয়ারম্যান জেবেল রহমান গানি ও মহাসচিব এম. গোলাম মোস্তফা ভুইয়া এ কথা বলেন। তারা বলেন, জাঁতি হিসেবে বাঙালির পরিপূর্ণ বিকাশের ক্ষেত্রে বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা যেখানে অপরিহার্য সেখানে ‘নজরদারি প্রযুক্তি’ বা ‘আড়িপাতা প্রযুক্তি’ প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি করবে এবং বাঙালির তৃতীয় জাগরণের পর্যায়ে বাধাগ্রস্ত হবে, যা বাঙালি জাতীয়তাবাদ বিকাশে প্রচণ্ড হুমকি। ন্যাপ নেতারা বলেন, ইসরায়েল থেকে বাংলাদেশ সরকারের ব্যাপক বিতর্কিত ‘নজরদারিপ্রযুক্তি' কেনা সংবিধানের গুরুতর লঙ্ঘন। এই প্রযুক্তি সংবাদপত্রের তথা গণমাধ্যমসহ সব ধরনের মত প্রকাশে ত্রাসের ভূমিকা গ্রহণ করবে। আড়িপাতার মতো ভয়ঙ্কর হাতিয়ার শুধুমাত্র বিরোধীদলের কণ্ঠরোধ করবে না, ভূ-রাজনীতির অপকৌশলের প্রয়োজনে সরকারকেও জিম্মি করে ফেলতে পারে। এই ভয়ঙ্কর প্রযুক্তি ব্যবহার হবে সবার জন্যই আত্মঘাতী। তারা বলেন, কার স্বার্থে, কী প্রেক্ষিতে, কী উদ্দেশ্যে নজরদারি প্রযুক্তি কেনা হয়েছে বা আড়িপাতার ব্যবস্থা করা হবে তা জনগণকে অবশ্যই অবহিত করতে হবে। আমাদের সংবিধান যেখানে তথ্যের ও যোগাযোগের গোপনীয়তা সুরক্ষা এবং বাক ও মত প্রকাশের স্বাধীনতা নিশ্চিত করেছে, সেখানে এ ধরনের প্রযুক্তি মৌলিক অধিকার হরণে বিরাট ঝুঁকি সৃষ্টি করবে। নেতৃদ্বয় বলেন, রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার দোহাই দিয়ে আইনসম্মতভাবে আড়িপাতার ব্যবস্থা চালু করা হলে এর অপব্যবহারের আশঙ্কা রয়েছে। আড়িপাতা ব্যবস্থা চালু হলে বিরোধীদের দমনে এটি সরকারের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহৃত হতে পারে। তবে রাষ্ট্রের নিরাপত্তা বা জনশৃঙ্খলার কারণে যদি বিশেষ ব্যক্তির ক্ষেত্রে আড়িপাতা হয় সেটি আদালতের মাধ্যমে হওয়া বাঞ্ছনীয়। তাছাড়া আড়িপাতার বিষয়টি সার্বিকভাবে সংবিধান প্রদত্ত মতপ্রকাশের স্বাধীনতাকেই ক্ষুণœ করবে। তারা বলেন, রাষ্ট্র্রের নিরাপত্তা ও জনশৃঙ্খলার স্বার্থে আড়িপাতা হলে সেটা বৃহৎ স্বার্থে মেনে নেওয়া যায়। কিন্তু তারও একটা কাঠামো থাকতে হবে। বেআইনিভাবে আড়িপাতা এখনো হচ্ছে। তবে এবার সেটি আইনের আওতায় আনার প্রচেষ্টা শুরু হয়েছে। অবস্থাদৃষ্টে মনে হচ্ছে সাংবিধানের চেয়েও কিছু আইন দেশে শক্তিশালী হয়ে উঠছে। তবে এগুলো শেষ পর্যন্ত টিকবে না। যারা করছেন বা করবেন তারা নিজেরাই এসব আত্মঘাতী কালো আইনের দ্বারা ক্ষতিগ্রস্ত হবেন।