উত্তরাখণ্ডের জোশীমঠ শহরের একটা বড় অংশ সম্পূর্ণভাবে ধসে যেতে পারে বলে আশঙ্কা করছে ভারতীয় মহাকাশ গবেষণা কেন্দ্র ইসরো। কারণ কার্টোস্যাট উপগ্রহ থেকে তোলা ছবি বিশ্লেষণ করে তারা দেখেছেন, মাত্র ১২ দিনের মধ্যে হিমালয়ের ওই ছোট শহরটি পাঁচ সেন্টিমিটারেরও বেশি ধসে গেছে।গতবছরের এপ্রিল থেকে নভেম্বর পর্যন্ত ওই শহরটি নয় সেন্টিমিটার ডেবে গেছে বলেও জানিয়েছে ইসরোর অধীন ন্যাশনাল রিমোট সেন্সিং সেন্টার। ইসরোর বিজ্ঞানীরা জানিয়েছেন, ডিসেম্বরের শেষ সপ্তাহ থেকে জানুয়ারির প্রথম সপ্তাহের মধ্যে এমন কোনো ঘটনা ঘটেছে, যার ফলে দ্রুত ধসে যাচ্ছে গোটা জোশীমঠ শহর আর তার আশপাশের এলাকা। এদিকে এতদিন মনে করা হচ্ছিল যে ফাটল ধরে যাওয়া বাড়িগুলি ভেঙে ফেললেই বোধহয় সমস্যার সমাধান হবে, কিন্তু ইসরোর সর্বশেষ বিশ্লেষণ দেখে আশঙ্কা তৈরি হয়েছে যে আদৌ শহরটিকে রক্ষা করা কি সম্ভব হবে? পরিবেশবিদ বিমলেন্দু ঝা বৃহস্পতিবার একের পর এক টুইট করে সেই আশঙ্কাই প্রকাশ করেছেন। তিনি লিখেছেন, মেরামতের কোনো সুযোগই আর নেই, কোনো রিভার্স গিয়ার দেওয়াও সম্ভব নয়। তিনি প্রকৌশলীদের ওপরেই সব দোষ চাপিয়ে লিখেছেন, ইঞ্জিনিয়াররা না বোঝেন ভূবিজ্ঞান, না জানেন ভূগোল। কোন মাটি খোঁড়া যেতে পারে, সেটাও তারা জানেন না কারণ তাদের পাঠ্যক্রমে এগুলো শেখানোই হয় না। প্রকৌশলীদের দিকে ঝায়ের আঙুল তোলার কারণ, জোশীমঠের কিছুটা দূরে যে তপোবন বিষ্ণুগড় জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র তৈরি হচ্ছে, তারজন্য একটা ১২ কিলোমিটার দীর্ঘ সুড়ঙ্গ কাটতে গিয়ে বিস্ফোরণ ঘটানো হয়েছে, যার ফলে জোশীমঠের নীচে থাকা কোনো জলপ্রবাহ ফেটে গেছে বলে স্থানীয় অ্যাক্টিভিস্টরা মনে করছেন। যদিও ওই প্রকল্পটি নির্মাণ সংস্থা সরকারী জাতীয় তাপবিদ্যুৎ করপোরেশন এ দাবি অস্বীকার করেছে। কর্মকর্তারা বলেছেন, সুড়ঙ্গ কাঁটার সময় কোন বিস্ফোরক ব্যবহার করা হয় নি। এদিকে শুক্রবার সকাল থেকে জোশীমঠের দুটি হোটেল ভেঙে ফেলার কাজ শুরু হয়েছে। ওই দুটি হোটেল হেলে গিয়ে বিপজ্জনক ভাবে একে অপরের খুব কাছে চলে এসেছে। শহরের প্রায় ৭০০ টি বাড়িতে ইতিমধ্যেই বড় বড় ফাটল দেখা গেছে, সেখান থেকে বাসিন্দাদের সরিয়ে নেয়ার কাজও চলছে বলে শুক্রবার মন্ত্রীসভার এক বৈঠকের পরে জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী পুষ্কর সিং ধামি। সূত্র: বিবিসি