লটারির টিকিটের মতো লাইগা গেলেই ভাগ্য বাদল। পরিবর্তন হবে সামাজিক, রাজনৈতিক ও আর্থিক অবস্থান। বিত্ত বৈভবে ভরে উঠবে চারিদিক। পদ যেন এখন সোনার হরিণ। আর এই সোনার হরিণকে ধরতে আওয়ামী লীগের অনেক নেতা দৌড়ঝাঁপ করছেন বলে জানিয়েছেন পৌরবাসী।
আসন্ন কোটালীপাড়া পৌরসভার নির্বাচনে মেয়র পদে মনোনয়ন লাভের আশায় সম্ভব্য মেয়র প্রার্থীরা এখন ঢাকায় অবস্থান করছেন। ঢাকায় থেকে কেন্দ্রীয় নেতাদের দ্বারে দ্বারে ঘুরছেন। মনোনয়ন প্রত্যাশীদের ব্যানার, পোষ্টার, ফেস্টুনে ছেয়ে গেছে গোটা পৌর এলাকা। সম্ভাব্য অনেক প্রার্থীই বর্তমান সরকারের বিভিন্ন উন্নয়নের চিত্র তুলে ধরে বিলবোর্ড টানিয়েছেন। অনেকেই আবার সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে প্রচারণা করছেন। এসব প্রার্থীরা পৌর এলাকার বিভিন্ন ধর্মীয় ও সামাজিক অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে নিজেদেরকে তুলে ধরার চেষ্টা করছেন।
এবারের পৌর নির্বাচনে মেয়র পদে যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা হলেন, বর্তমান পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী কামাল হোসেন শেখ, সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়মী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ এম অহিদুল ইসলাম, উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন খান, উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান হাজরা, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান আবদুল খালেক হাওলাদার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি এস এম হুমায়ুন কবিন, পৌর আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও প্যানেল মেয়র এস এম মিজানুর রহমান মিঠু, আওয়ামী লীগ নেতা অ্যাডভোকেট দেলোয়ার হোসেন সরদার, উপজেলা স্বেচ্ছাসেবক লীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক ও আওয়ামী লীগ নেতা হাবিবুর রহমান মুকুল, উপজেলা আওয়ামী লীগের সদস্য ডা. মোঃ আলীউজ্জামান শেখ, জেলা কৃষক লীগের সহ-সভাপতি ও ব্যবসায়ী মোস্তফা কামাল, উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু প্রমুখ।
বর্তমান পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়ামী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হাজী কামাল হোসেন শেখ বলেন, কোটালীপাড়া পৌরসভা গঠনের পরে আমিই প্রথম চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয়েছিলাম। আমার সময়েই এ পৌরসভায় অবকাঠামোগত সকল উন্নয়ন হয়েছে। বিগত ৫বছর আগে আমি আওয়ামী লীগের মনোনয়ন নিয়ে মেয়র নির্বাচিত হয়ে একটি আধুনিক পৌরসভা গঠন করেছি। পৌরসভার সকল নাগরিক সেবা আমি জনগনের দোরগোড়ায় পৌছে দিয়েছি। করোনার কারণে আমি অনেক উন্নয়নমূলক কাজ শেষ করতে পারিনি। আমাকে যদি এবার মনোনয়ন দেওয়া হয় তাহলে নির্বাচিত হয়ে উন্নয়নমূলক অসমাপ্ত কাজগুলো শেষ করবো।
সাবেক পৌর মেয়র ও উপজেলা আওয়মী লীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক এইচ এম অহিদুল ইসলাম বলেন, আমি পর পর দুই বার এ পৌরসভায় মেয়র নির্বাচিত হয়েছিলাম। এই দুই বারে আমি মসজিদ-মন্দির, রাস্তা-ঘাট, পৌর মার্কেট, পৌর বাসস্ট্যান্ডসহ পৌরসভার ব্যাপক উন্নয়ন করেছি। আশা করছি আমার কাজের মূল্যায়ণ হিসেবে নেত্রী আমাকে মনোনয়ন দিবেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সিনিয়র সদস্য ও বিশিষ্ট ব্যবসায়ী জাহাঙ্গীর হোসেন খান বলেন, আমি দীর্ঘদিন ধরে আওয়ামী রাজনীতির সাথে যুক্ত থেকে বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করে আসছি। আশা করছি মাননীয় প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মনোনয়ন দিবেন।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক ও উপজেলা পরিষদের সাবেক ভাইস চেয়ারম্যান মতিয়ার রহমান হাজরা বলেন, আমি কোটালীপাড়া উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান থাকা অবস্থায় অনেক সেবামূলক কাজ করেছি। আমার বিশ^াস মানবতার জননী শেখ হাসিনা আমার কাজের মূল্যায়ণ করবেন।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও সাবেক জেলা পরিষদ সদস্য নজরুল ইসলাম হাজরা মন্নু বলেন, আমি উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ও শেখ লুৎফর রহমান আদর্শ সরকারি কলেজের ভিপি ছিলাম। জেলা পরিষদের গত নির্বাচনে সদস্য নির্বাচিত হয়ে অনেক উন্নয়নমূলক কাজ করেছি। এই কাজের মূল্যায়ণ হিসেবে দল যদি আমাকে মনোনয়ন দেয় তাহলে আমি মেয়র নির্বাচিত হয়ে স্মার্ট পৌরসভা গঠন করবো।
নাম প্রকাশ না করা শর্তে কোটালীপাড়া পৌরসভার ৯নং ওয়ার্ডের কয়েকজন ভোটার বলেন, কোটালীপাড়া পৌরসভায় আওয়ামী লীগ যাকে মনোনয়ন দিবেন তিনিই নিশ্চিত মেয়র নির্বাচিত হবেন। এখানে আওয়ামী লীগ ছাড়া অন্য কোন দলের কোন প্রার্থী নেই। এ পৌরসভা বা উপজেলায় যারা মেয়র ও চেয়ারম্যান নির্বাচিত হয় তাদের আর পিছনে ফিরে তাকাতে হয় না। বিত্ত বৈভবে ভরে উঠবে চারিদিক। এখানে যারা আওয়ামী লীগের মনোনয়ন পায় তারাই বিনা প্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হয়। আর নির্বাচিত হয়ে এ সকল প্রার্থীরা ভোটারদের মূল্যায়ণ করে না। তাই আমরা চাই এখানে উন্মুক্ত নির্বাচন হোক। আর উন্মুক্ত নির্বাচন হলে মেয়র পদে নির্বাচনের জন্য যাদের নাম শোনা যাচ্ছে তারা অনেকেই প্রার্থী হবেন না।
উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ভবেন্দ্রনাথ বিশ^াস বলেন, কোটালীপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি, প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নির্বাচনী এলাকা। এখানে আমাদের নেত্রী যাকে মনোনয়ন দিবেন তিনিই নির্বাচিত হবেন। আর যিনি মনোনয়ন পাবেন আমরা সকলে মিলে তার পক্ষে কাজ করবো।