খুলনার রূপসা উপজেলাধীন জাবুসায় আম্পান প্রকল্পের দুই কিলোমিটার সড়কের কার্পেটিং কাজে ব্যাপক অনিয়মের অভিযোগ উঠেছে। দীর্ঘদিন পর ১ কোটি ৮৫ লাখ টাকা ব্যায়ে সড়কে শুরু হয়েছে কার্পেটিং কাজ। নৈহাটী ইউনিয়নের জাবুসা চৌরাস্তা মোড় থেকে জাবুসা বাজারস্থ নারানখালি ব্রীজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার সড়কে রাস্তার (পিচ ঢালাই) কাজ শুরু হলেও শুরুতে চলছে শুভংকরের ফাঁকি। স্থানীয়দের অভিযোগ রাতের আঁধারে অন্য রাস্তার পুরাতন পিচ ও পাথর (ওয়েস্টেজ) ডাম্পিং গাড়িতে এনে সদ্য কাঁচামালের সাথে মিশিয়ে মেশিনে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা ভিডিও ফুঁটেজে ধারণকৃত রয়েছে। ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের তদারকির অভাবেই মেসার্স আকন ট্রের্ডিং এ- কোং মেসার্স এস আর ট্রেডার্স ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে ইচ্ছামত রাস্তার কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। উপজেলা প্রকৌশল অধিদপ্তরের দেয়া তথ্য মতে, আম্পান প্রকল্পের রূপসা উপজেলাধীন নৈহাটী ইউনিয়নের জাবুসা চৌরাস্তা মোড় থেকে জাবুসা (দক্ষিণপাড়া) বাজারস্থ নারানখালি ব্রীজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তার কার্পেটিং (পিচ ঢালাই) কাজ শুরু হয়েছে। যার নির্মাণ ব্যয় ধরা হয়েছে এক কোটি ৮৫ লাখ টাকা। রাস্তাটি চওড়া হবে ৫ দশমিক ৫ মিটার। তফসীল অনুযায়ী রাস্তা দেড় ইঞ্চি পুরু হতে হবে। মেসার্স আকন ট্রের্ডিং এ- কোং মেসার্স এসএর ট্রেডার্স ঠিাকাদারী প্রতিষ্ঠান যৌথভাবে আম্পান প্রকল্পের এ কাজটি পেয়েছে। স্থানীয়দের অভিযোগ, জাবুসা চৌরাস্তা মোড় থেকে জাবুসা (দক্ষিণপাড়া) বাজারস্থ নারানখালি ব্রীজ পর্যন্ত দুই কিলোমিটার রাস্তা কার্পেটিং করতে ইলাইপুর পঁয়তের পোল নামক স্থানে স্থাপন করা হয়েছে কাঁচামাল সামগ্রি মেশানো ঢালাই মেশিন। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এশর্তে স্থানীয় একাধিকজন বলেন, ঘাটভোগ ইউনিয়নের নারিকেলি চাঁদপুর গ্রামে পুরাতন রাস্তার কার্পেটিং (পিচ ও পাথর মেশানো) এনে পিচ ও পাথর রাতের আঁধারে ডাম্পিং গাড়িতে এনে সদ্যকাঁচামাল সামগ্রির সাথে মিশিয়ে ঢালাই মেশিনে দিয়ে রাস্তা নির্মাণ কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। যা দেখার কেউ নেই।
ঠিকাদারের কর্মচারী মোঃ রফিক মীর বলেন, ঢালাই মেশিনের কাঁচামাল সামগ্রি ডাম্পিং ট্রাকে আনা নেওয়া হয়। ডাম্পিং ট্রাক যাওয়া-আসার জন্য অন্য একটা রাস্তার উঠানো কার্পেটিং (পিচ ও পাথর) এখানে এনে দেওয়া হয়েছে। যাতে ডাম্পিং গাড়ি যাওয়া আসায় সমস্যা না হয়। অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান। জাবুসা দক্ষিণপাড়া গ্রামের বাসিন্দা মোঃ রাসেল শেখ বলেন, প্রায় ছয় থেকে সাত মাস পরে রাস্তায় কার্পেটিং এর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু রাস্তা যেভাবে করার কথা সেইভাবে হচ্ছে। তিনি বলেন, অনেক আগে যখন রাস্তার কাজ শুরু হয় তখন ঠিকাদারদের অনিয়ম দেখে এলাকাবাসীর তোপের মুখে কাজ বন্ধ হয়ে যায়। দুই একদিন রাস্তায় কার্পেটিং এর কাজ শুরু হয়েছে। কিন্তু রাস্তার কাজ হচ্ছে নিম্নমানের। যা কোনো অফিসার এসে তদারকি করছে না। ফলে ঠিকাদার তার ইচ্ছামত কাজ করে যাচ্ছে। স্থানীয় আরেক বাসিন্দা মোঃ ওমর আলী বলেন, ‘রাস্তার কাজ সঠিকভাবে হচ্ছে না। দেড় ইঞ্চি পুরু করে রাস্তা করতে হবে কিন্তু সেইভাবে কাজ হচ্ছে না। কেউ রাস্তার কাজের তদারকিও করছে না। একইভাবে আরো অনেকে অভিযোগ করেন। আবার অনেকে রাস্তার কাজে অনিয়মের কথা বলতে পাঁচ্ছে ভয়।
মেসার্স এস আর ট্রেডার্সের স্বত্তাধিকারী ঠিকাদার শহিদুল ইসলাম সোহেল বলেন, তফসীল অনুযায়ী সড়কের কাজ চলছে। তবে সড়ক নির্মাণ কাজে অনিয়মের বিষয়ে তিনি সদোত্তর না দিয়ে বিভিন্ন জনের পরিচয় দেন। পরিশেষে তিনি কৌশলে এড়িয়ে যান।
উপজেলা প্রকৌশলী এস এম ওয়াহিদুজ্জামান বলেন, খুলনা জেলা অফিসের লোকজন কাজ নিয়মিত তদরাকি করছেন। নির্মাণ কাজে অনিয়মের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, তফসীল অনুযায়ী সড়কের কাজ করতে হবে।