বরিশালের বাবুগঞ্জে শতবছরের পুরানো একটি পানি প্রবাহের নালা স্থানীয়দের আবেদনের প্রেক্ষিতে উদ্ধারে গেলে উপজেলা প্রশাসন, পুলিশ ও স্থানীয়দের উপরে হামলা চালায় স্থানীয় বীর-মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম ওরফে সত্তার দালালের পুত্র ও তাদের ভাড়া করা একটি সন্ত্রাসী বাহীনি। এ সময় পরিস্থিতি উত্তাপ্ত করতে মুক্তিযোদ্ধা হালিম ওরফে সত্তার পুত্ররা এবং তাদের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা ককটেল বোমা ফাটিয়ে ঘটনাস্থলে আতঙ্ক সৃষ্টি করে নালা কাটার কাজে বাঁধা প্রদান করেন। জানা গেছে,বাবুগঞ্জ উপজেলার চাঁদপাশা ইউনিয়নের ১ নং ওয়ার্ডের আরজি কালিকাপুর গ্রামের মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম ওরফে সত্তার এর বাড়ির পাশের একটি পানি প্রবাহের নালা বাড়ির সামনের খালের সাথে যুক্ত হয়েছে। যার মাধ্যমে নালার অপর প্রান্তের প্রায় ষাট একর জমির ফসলের জন্য পানি সেচের কাজে ব্যবহার করা হত। প্রায় শত বছরের পুরনো ওই নালাটি আবদুল হালিম ওরফে সত্তার এর পরিবার কালে কালে দখল করে মুরগির খামার নির্মাণ,মাটি ভরাট,গাছ রোপনও পুকুর নির্মাণ করে নালা বন্ধ করে দেয়। ফলে স্থানীয়দের প্রায় ষাট একর ফসলি জমি অনাবাদী হয়ে যায়। নালা বন্ধ করার ফলে বর্ষা মৌসুমে ওই জমিতে পানি জমে জলাবন্ধ হয়ে থাকে ফলে প্রায় ষাট একর জমি পতিত হয়ে থাকে। এ ঘটনায় স্থানীয় ভূক্তভোগী প্রায় শতাধিক পরিবার এ অবস্থা নিরশনের লক্ষে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার এর কাছে আবেদন করেন। ইউএনও আবেদনের বিপরীতে একাধিবার সরেজমিনে পরিদর্শণ করেন স্থানীয়দের স্বার্থে বন্ধ নালাটি মুক্তিযোদ্ধা পরিবারটিকে খুলে দিতে অনুরোধ করে। কিন্তু তারা কর্নপাত করেনি। এমনকি স্থানীয় ইউপি সদস্য মোঃ হাজী মেসলে উদ্দিনসহ লোকজনকে নালা কাটায় বাঁধা প্রদান করে। এ ঘটনার পরে সোমবার দুপুরে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নুসরাত ফাতিমা পুলিশ ফোর্স নিয়ে ঘটনাস্থলে গিয়ে বন্ধ করা নালা স্থানীয়দের কাটার অনুমতি দিলে তাতে বাঁধ সাজে মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম ওরফে সত্তার এর স্ত্রী মাসুমা বেগম,ছেলে মাহামুদ, রিগান ও মাহিন। এ সময় তারা দলবল নিয়ে নালা খনন কাজে আসা স্থানীয়দের উপর লাঠিসোটা নিয়ে হামলা করেন। হামলার সময় ইউএনও এর সাথে আসা পুলিশ সদস্যরা বাধা দিলে তাদের উপর হামলার চেষ্টা করে। হামলার সময় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম এর বসত ঘরের উপর থেকে প্রশাসনকে লক্ষ্য করে ইট পাটকেল নিক্ষেপ এবং একটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায়। এ ঘটনায় পুলিশ তাৎক্ষনিক অভিযান চালিয়ে ৭ জনকে আটক করেন। আটক ব্যক্তিরা হলেন রিগান-২২,মাহিন-১৯,মাহামুদ-২৬,জুনায়েদ হোসেন-১৯, অপু-১৭,আসিকুজ্জামান-২০,নাইম হাসান-২৬। এদের মধ্যে নাইম হাসান-২৬ ও মাহিন-১৯কে ৩ মাসের কারাদ- প্রদান করেন ভ্রাম্যমান আদালতের নির্বাহী ম্যাজিষ্ট্রেট নুসরাত ফাতিমা। বাকিদের মুচলেখা নিয়ে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
এ ঘটনায় মুক্তিযোদ্ধা আবদুল হালিম বলেন, জমি ব্যতিত পাশের অন্যত্র অব্যবহৃত জমি থেকেও ওই পানি নিস্কাশনের ব্যবস্থা করা যেত। কিন্তু স্থানীয়দের ইন্ধনে উদ্দেশ্যে প্রণোদিতভাবে আমাদের ভিটা বাড়ি নষ্ট করে ড্রেননির্মাণ করা হয়েছে। এবং পরিবারের সদস্যদের উপর ইউএনও হামলা চালিয়ে ও আমার নিরপরাদ সন্তানদের সাজা দিয়েছে। স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান বীরমুক্তিযোদ্ধা দেলোয়ার হোসেন রাঢ়ী বলেন,জনগনের স্বার্থে শতবছরের পুরানো নালাটি খনন করায় স্থায়ীয় শতাধিক কৃষকের ষাট একর সম্পত্তি আবাদ যোগ্য হবে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত ফাতিমা বলেন, স্থানীয়দের আবেদনের ভিত্তিতে সজগনের স্বার্থে প্রায় ষাট একর ফসলি জমি রক্ষায় এ ড্রেন খনন করা হয়েছে। এ সময় সরকারী কাজে বাঁধা ,ককটেল বোমা নিক্ষেপ ও প্রশাসনের উপর হামলার চেষ্টা করায় ঘটনা স্থল থেকে ৭ জনকে আটক করা হয়েছে। পরে ২ জনকে ৩ মাসের সাজা প্রদান কর হয়েছে। বাকিদের মুচলেকা রেকে মুক্তি দেওয়া হয়েছে। এ খানে প্রষাসনের পক্ষ থেকে কারোর উপর হামলার ঘটনা ঘটেনি।