ব্রাহ্মণবাড়িয়া-২ (সরাইল-আশুগঞ্জ) আসনের উপনির্বাচনের স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদের নির্বাচনী প্রচারণার প্রধানের দায়িত্বে থাকা মুসা মিয়াকে (৮০) গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার দিবাগত রাত আড়াইটার দিকে আশুগঞ্জ পূর্ব বাজার বিওসি ঘাট এলাকার নিজ বাসা থেকে তাঁকে গ্রেপ্তার করে গোয়েন্দা পুলিশ (ডিবি)।
১৩ জানুয়ারি আশুগঞ্জ উপজেলার দুর্গাপুরে দুদল গ্রামবাসীর সংঘর্ষের ঘটনায় পুলিশের ওপর হামলার একটি মামলায় মুসা মিয়াকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন আশুগঞ্জ থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আজাদ রহমান। তিনি বলেন, ওই মামলার এহাজারে ২০০ থেকে ৩০০ জন অজ্ঞাতনামা আসামি রয়েছে। তদন্তে মুসা মিয়ার সংশ্লিষ্টতা পাওয়ায় ডিবি পুলিশ তাঁকে গ্রেপ্তার করে থানায় হস্তান্তর করেছে। তাঁকে আজ ব্রাহ্মণবাড়িয়া আদালতে হাজির করা হবে।
গ্রেপ্তার মুসা মিয়া দলীয় রাজনীতিতে জড়িত নন বলে দাবি করেছেন তাঁর পরিবারের সদস্যরা। তাঁর ছোট মেয়ে সাথী আক্তার বলেন, ‘বুধবার রাত আড়াইটার দিকে দুটি মাইক্রোবাসে ডিবি পুলিশের সাত থেকে আটজন সদস্য আমার বাবাকে তুলে নিয়ে গেছেন। আমরা বললাম, কোথায় নিয়ে যান। তাঁরা বলেন ওপরের নির্দেশে তাঁকে আমরা থানায় নিয়ে যাচ্ছি।’
মুসা মিয়ার বড় মেয়ে ফাতেমা আক্তার বলেন, ‘আবার বাবা কোনো দল করেন না। পারিবারিক ও ব্যবসায়িক সম্পর্কের কারণে আমার বাবা আসিফের সঙ্গে চলাফেরা করে থাকেন। বাপ-দাদার আমল থেকে তাঁদের সঙ্গে আমাদের সম্পর্ক। এজন্য বাবা তাঁর (আসিফ) নির্বাচনে কাজ করছিলেন। আমার বাবা বৃদ্ধ, তবে সুস্থ মানুষ। এখন আমরা চিন্তিত।’
স্বতন্ত্র প্রার্থী আবু আসিফ আহমেদ আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও উপজেলা পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান। তিনি বলেন, ‘সুষ্ঠু নির্বাচন হলে আমি বিজয়ী হব। পুরো এলাকায় দিন দিন আমার সমর্থন বাড়ছে। এ অবস্থায় গত রাতে আমার নির্বাচনের প্রধান প্রচারক মুসা মিয়াকে ডিবি পুলিশ ধরে নিয়ে গেছে। এ ছাড়া গত রাত থেকে আমার শ্যালক শাফায়াত সুমনকে (৩৮) খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না। শাফায়াত আমার নির্বাচন পরিচালনার প্রধান সমন্বয়কারী।’
আসিফ আহমেদ বলেন, ‘এ অবস্থায় আমি কীভাবে সুষ্ঠু নির্বাচন আশা করতে পারি? আমি ঢাকায় নির্বাচন কমিশনের কাছে যাব। সরকার একজন ব্যক্তিকে জেতানোর জন্য যদি এমনটি করে থাকে, তবে নির্বাচন দিল কেন?’
একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিএনপির দলীয় প্রার্থী আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া বিজয়ী হয়েছিলেন। গত ১১ ডিসেম্বর তিনি দলীয় সিদ্ধান্তে জাতীয় সংসদ থেকে পদত্যাগ করায় আসনটি শূন্য হয়। আগামী ১ ফেব্রুয়ারি এ আসনে উপনির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। ৮ জানুয়ারিতে মনোনয়নপত্র যাচাই-বাছায়ের পর আটজনের মনোনয়নপত্র বৈধ ঘোষণা করা হয়। তাঁদের মধ্যে আওয়ামী লীগের তিনজন স্বতন্ত্র প্রার্থী তাঁদের মনোনয়নপত্র প্রত্যাহার করে নেন। পরে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়ান জাতীয় পার্টির দুবারের সাবেক সংসদ সদস্য জিয়াউল হক মৃধাও।
এখন পর্যন্ত নির্বাচনী মাঠে আছেন বিএনপির দলছুট পাঁচবারের সাবেক সংসদ সদস্য আবদুস সাত্তার ভূঁইয়া (কলার ছড়া), আশুগঞ্জ উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি আবু আসিফ আহমেদ (মোটরগাড়ি), জাপার কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম সহাসচিব আবদুল হামিদ ভাসানী (লাঙ্গল) ও জাকের পার্টির জহিরুল ইসলাম (গোলাপ ফুল)।