বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের বলেছেন, নিজের লোক, আত্মীয়স্বজন দিয়ে কমিটি করা চলবে না। ত্যাগী, দুঃসময়ে যারা রাজপথে ছিল তাদেরকে দিয়ে কমিটি করতে হবে। এ সময় তিনি নেতাকর্মীদের অনুরোধ করে বলেন, পকেট কমিটিতে পদ দেওয়ার পরে, পদ না থাকলে সালামও দেবে না। তাই মুখের দিকে চেয়ে নেতা বানাবেন না। কমিটিগুলো করে ফেলুন প্লিজ। বৃহস্পতিবার বিকেলে আওয়ামী লীগের ময়মনসিংহ বিভাগীয় প্রতিনিধি সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে ওবায়দুল কাদের এসব কথা বলেন। বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, তারা গণতন্ত্রের পথে কখনো চলে না। তারা যে কায়দায় আন্দোলন করতে চায়, তাদের সেই সাম্প্রদায়িক কায়দা, সন্ত্রাসী কায়দা, জঙ্গিবাদী কায়দার রাজনীতির জবাব দেবো। একমাত্র আওয়ামী লীগই দেশে গণতন্ত্রের চর্চা করে দাবি জানিয়ে তিনি বলেন, আমরাই গণতন্ত্রের চর্চা করি, বিএনপি করে না। দেশে অভ্যন্তরীণ গণতন্ত্রের চর্চাকারী একমাত্র দল আওয়ামী লীগ। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বলেন, আওয়ামী লীগ দুই মাসে মিটিং করে। প্রয়োজনে আমরা যৌথসভা করি, সহযোগী সংগঠনসহ। আগামীকালও (শুক্রবার) যৌথসভা রয়েছে। এর মধ্যে আমরা তিনটা সম্মেলন করে ফেলেছি। জেলা-উপজেলা পর্যায়ে সবগুলো সম্মেলন করেছি। বিএনপির উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, নিজেরা বিদেশিদের কাছে নালিশ করে, আওয়ামী লীগে গণতন্ত্র নেই। অথচ বিএনপির কেন্দ্রীয়ভাবেও কোনো সম্মেলন হয় না, মিটিং হয় না। দেশে তারা নাকি গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করবে, উদ্ভট কথা। ওবায়দুল কাদের বলেন, আওয়ামী লীগ প্রতিদিন কর্মসূচি দেবে। বিএনপিকে কী খালি মাঠ দেবো পরিবহন পোড়াতে? তাদেরকে কী রেলস্টেশন পোড়াতে দেবো, সবুজ গাছগুলো কেটে ফেলতে দেবো? এ সুযোগ আমরা দেবো না। আওয়ামী লীগ নেতা বলেন, শেখ হাসিনা ভোটচুরির জন্য ১ কোটি ২৩ লাখ ভুয়া ভোটার বানাননি। নিজ দলের কাউকে নির্বাচন কমিশনার বানাননি। শেখ হাসিনা গায়ের জোরে ইলেকশন কমিশন বানাননি। আইনের মাধ্যমেই ইলেকশন কমিশন গঠিত হয়েছে। ২০০৮ সালে বিএনপি বলেছিলো, আওয়ামী লীগ ৩০ সিটই পাবে না, উল্টো বিএনপি ২৯ সিট পেলো। পরে সংরক্ষিত মিলে ৩২ সিট। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নানা গুজবের বিরুদ্ধে সরব হলেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ও সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রী ওবায়দুল কাদের। নিজের মৃত্যুর গুজব ছড়ানো নিয়েও এ সময় কথা বলেন ওবায়দুল কাদের। বিএনপির উদ্দেশে সেতুমন্ত্রী বলেন, কী রকম নিষ্ঠুর, আওয়ামী লীগের জেনারেল সেক্রেটারিকে মেরে জানাজা পড়িয়েছে। আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদককে মেরে ফেলছে। আমি নাকি মরে গেছি এমন নিউজ হয়ছে! কি পরিমাণ গুজব অপপ্রচার। এটা কারা করে তা আপনারা জানেন। তারাই করে যারা সাম্প্রদায়িক রাজনীতির পৃষ্ঠপোষক। এ সময় ওবায়দুল কাদের দলীয় নেতাকর্মীদের উদ্দেশ্যে বলেন, এর বিরুদ্ধে জবাব দিতে হবে বলেও মন্তব্য করেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক। তিনি বলেন, এমনকি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনাকে নিয়েও গুজব অপপ্রচার করা হয়। এসব বিষয়ে নেতাকর্মীদের সতর্ক থাকতে হবে জবাব দিতে হবে। আওয়ামী লীগ নিয়ে অপপ্রচার হচ্ছে। অপপ্রচার রোধে সেল গঠন করুন, লোক নিয়োগ করুন। নেতাকর্মীদের পড়াশোনা করার তাগিদ দিয়ে ওবায়দুল কাদের বলেন, আপনারা পড়াশোনা করবেন, খরব দেখবেন, পত্রিকা পড়বেন। কারণ কি পরিমাণ যে গুজব অপপ্রচার হচ্ছে। এর বিরুদ্ধে সর্তক থাকতে হবে। আওয়ামী লীগের সভাপতিমন্ডলীর সদস্য বেগম মতিয়া চৌধুরীর সভাপতিত্বে প্রতিনিধি সভায় যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক ডা. দীপু মনি, সাংগঠনিক সম্পাদক মির্জা আজম, শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, সংস্কৃতিক বিষয়ক সম্পাদক অসীম কুমার উকিল, কার্যনির্বাহী সদস্য মারুফা আক্তার পপিসহ ময়মনসিংহ বিভাগের সকল সংসদ সদস্য এবং জেলা-উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতৃবৃন্দ উপস্থিত ছিলেন।