রাজশাহীর তানোরে আদালতের নির্দেশ মানছেন না মুন্ডমালা পৌর সভার মেয়র সাইদুর রহমান। তিনি আদালতের দেয়া ১৪৪ ধারা ভঙ্গ করে ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি জবর দখল করে পাকা রাস্তা নির্মান অব্যহত রেখেছেন।
এঘটনায় এলাকায় চরম উত্তেজনা বিরাজ করছে, ফলে যেকোন সময় রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষ ঘটার আশঙ্কা করছেন এলাকাবাসী। এলাকাবাসী ও অভিযোগ সুত্রে জানা গেছে, তানোর উপজেলার মুন্ডমালা পৌরসভার পাঁচন্দর মৌজার জে-এল নং ৭০, আরএস খতিয়ান নং ১৯৩।
আর এস দাগ নং ৪৬১১, পরিমান ১২.৩৬ একর রকম ধানী। ওই সম্পত্তি চাপাই নবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আমনুরা কিসমতুল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি। ওই সম্পত্তির (ফসলী জমির) মাঝ দিয়ে ১০/১২ ফুট চওড়া এবং লম্বায় ৫শ' ফুট জায়গার উপর দিয়ে জোরপূর্বক পাকা রাস্তা নির্মান কাজ শুরু করেন মুন্ডমালা পৌর মেয়র সাইদুর রহমান।
এঘটনায় গত ২২জানুয়ারী আমনুরা কিসমতউল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের ৩জন যুগ্ন মতোয়াল্লীর পক্ষে চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আমনুরা মিয়াপাড়ার মৃত হাসিমুদ্দীন মিয়ার পুত্র জিয়াউর রহমান বাদি হয়ে মুন্ডমালা পৌর সভার মেয়র সাইদুর রহমান ও মুন্ডমালা উত্তর পাড়া গ্রামের আবদুস সামাদের পুত্র নাদিম হোসেনকে আসামি করে জেলা রাজশাহীর অতিরিক্ত জেলা ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে ১৪৪ ধারায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা নম্বর, ১৩৬পি/ ২০২৩।
আদালত গত ২৪ জানুয়ারী মামলাটি আমলে নিয়ে শোনানী শেষে তানোর থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) কে শান্তি শৃংখলা বজায় রাখতে ঘটনাস্থলে স্থিতাবস্থা বজায় রাখার পাশাপাশি প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহন আদেশ প্রদান করেন। কিন্তু মেয়র সাইদুর এসবের তোয়াক্কা না করে এবং আদালত ও আইনকে বৃদ্ধাঙ্গলী দেখিয়ে রাস্তা নির্মান কাজ অব্যহত রেখেছেন।
শুক্রবার বিকালে গিয়ে সরেজমিন ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা গেছে, তানোর মুন্ডমালা সড়কের মাহালীপাড়া নামকস্থান থেকে দক্ষিনে বাগমারা পাড়া যাওয়ার জন্য আমনুরা কিসমতউল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের ফসলী জমিতে নির্মান সামগ্রী রেখে ওই সম্পত্তির মাঝ দিয়ে ১২ফুট চওড়া করে পাকা রাস্তা নির্মান কাজ অব্যহত হয়েছে।
ওই রাস্তা নির্মান করা হলে কিসমতুল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের প্রসস্থ্য ১২ফুট ও লম্বায় প্রায় ৫শ' ফুট সম্পত্তি (ফসলী জমি) পড়বে যার পরিমান দাঁড়াবে প্রায় ১বিঘা। বর্তমান বাজারে যার মুল্যে প্রায় ৩০ লাখ টাকারও বেশী।
এবিষয়ে আমনুরা কিসমতউল্লাহ ওয়াকফ এস্টেটের মতোয়াল্লী চাঁপাইনবাবগঞ্জ সদর উপজেলার আমনুরা মিয়াপাড়ার মৃত মহাসিন আলী মিয়ার পুত্র রফিকুল ইসলাম বলেন, এই রাস্তা নির্মানে তার প্রায় ১ বিঘা জমি রাস্তার উপর পড়বে।
তিনি বলেন, আমাদেরকে না জানিয়েই এবং আইনকে তোয়াক্কা না করে এবং প্রশাসনকে বৃদ্ধঙ্গুলী দেখিয়ে জোরপূর্বক ভাবে আমাদের ওয়াকফ এস্টেটের সম্পত্তি (৩ ফসলী জমি)'র মাঝ দিয়ে রাস্তার কাজ শুরু করেছেন মেয়র সাইদুর রহমান। এখন দেখছি আদালতকেও মানছেন না প্রভাবশালী মেয়র সাইদুর রহমান।
এব্যাপারে তানোর অফিসার ইনচার্জ ওসি কামরুজ্জামান মিয়া বলেন, আদালতের আদেশ বাস্তবায়নের জন্য মুন্ডমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জকে দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে।
এবিষয়ে মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে মুন্ডমালা পুলিশ তদন্ত কেন্দ্রের ইনচার্জ ইন্সপেক্টর মনিরুল ইসলাম বলেন, আদালতের আদেশ জারি করা হয়েছে। নির্মান কাজ চলছে কিনা জানিনা বলেও জানান তিনি।
এব্যাপারে মুঠো ফোনে যোগাযোগ করা হলে মুন্ডমালা পৌর সভার মেয়র সাইদুর রহমান ঘটনার সত্যতা স্বীকার বলেন, আমি আদালতের আদেশের কপি পেয়েছি, ধার্য্য তারিখে আদালতের জবাব দেয়া হবে। রাস্তা নির্মান কাজ অব্যহত রেখেছেন এমন প্রশ্নের জবাবে মেয়র বলেন এটা গ্রামের মানুষ বলতে পারবে বলেও জানান তিনি।