ঘন কুয়াশায় ক্ষতিগ্রস্ত বগুড়ার বোরো ধানের বীজতলা। সময়মতো রোপণ করতে না পারায় বৈশাখের বৈরী আবহাওয়ায় নষ্ট হতে পারে ধান। আবার দেরিতে ফসল কাটলে বাজারে ভালো দাম না পাওয়ার শঙ্কায় কৃষক। সোমবার (৩০ জানুয়ারি) বগুড়ায় সরেজমিনে দেখা যায়, মাঘের মাঝপথে এসেও ধু-ধু করছে ফসলের মাঠ। অথচ এ সময় কচি ধানের সবুজে ছেয়ে যেত কৃষকের ক্ষেত। তবে তীব্র কুয়াশায় বীজতলা নষ্ট হওয়ায় দিশেহারা বগুড়ার কৃষক। চলতি বোরো মৌসুমে জেলায় ৯ হাজার ২১৮ হেক্টর জমিতে বোরো বীজতলা তৈরির লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করে কৃষি বিভাগ। লক্ষ্যমাত্রা অর্জিত হলেও টানা শৈত্যপ্রবাহে ঘন কুয়াশা আর রোদ না থাকায় রোগাক্রান্ত হয় বীজতলা। কোথাও হলুদ বর্ণ, কোথাও শুকিয়ে লাল হয়েছে ধানের চারা। বাধ্য হয়ে আবারও নতুন করে বীজতলা তৈরি করছেন অনেকে। এতে কৃষকের খরচ বাড়ছে। কৃষকরা জানান, ৫০ কেজি ধান লাগিয়েছি। তার মধ্যে ২০ কেজি ধান নষ্ট হয়ে গেছে। তাই আবার লাগাতে হচ্ছে। এতে খরচও বেড়ে গেছে। চারা নষ্ট হয়ে জমিতে সময়মতো রোপন করতে না পারায় দেরিতে ফসল ফলবে। কালবৈশাখী ঝড়ের আগে ঘরে তুলতে না পারলে মাঠে পাকা ধান নষ্ট হতে পারে। এদিকে আগে ভাগে বাজারে তুলতে না পারলে ভালো দাম না পাওয়ার শঙ্কায় দিন কাটছে কৃষকের। এক কৃষক বলেন, কত দিনে ধান লাগানো শেষ হবে তা নিয়ে এখনও নিশ্চিত না আমরা। আমরা যদি দেরি করে ধান রোপণ করি, তাহলে ফসল উৎপাদনও দেরিতে হবে। মৌসুমের শেষে ধানের দাম কমে যায়। তাতে দেখা যাবে আমরা কাক্সিক্ষত দাম পাবো না। তবে বীজতলা কিছুটা নষ্ট হলেও এতে বোরো মৌসুমের লক্ষ্যমাত্রায় কোনো প্রভাব পড়বে না বলে দাবি করেছেন বগুড়া কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের অতিরিক্ত উপপরিচালক এনামুল হক। তিনি বলেন, মৌসুমের দেরি করেও কিছু জাতের ধান চাষ করা যায়। যেমন, বীণাধান-১৪ ও বীণা-২৫। আমরা এধরনের ধান গবেষণার মাধ্যমে পেয়েছি। আমরা সেগুলো কৃষক পর্যায়ে বিতরণ করছি। উল্লেখ্য, চলতি মৌসুমে ১ লাখ ৮৭ হাজার ৬৫০ হেক্টর জমিতে বোরো ধান চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করেছে কৃষি বিভাগ।