১৯৫২ সালের ভাষা আন্দোলন পরবর্তী দীর্ঘ সময়েও নির্মাণ হয়নি বরিশালের বাবুগঞ্জ উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার! যে কারণে প্রতি বছর ২১ ফেব্রুয়ারী এলেই উপজেলা পরিষদ ও উপজেলা প্রশাসন অস্থায়ী ভাবে নির্মিত শহীদ মিনার তৈরি করে তাতে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান। দীর্ঘদিন পরে বাবুগেঞ্জর কৃতী সন্তান কেমিকো ফার্মাসিটিক্যাল লিমিটেড এর চেয়ারম্যান প্রয়াত আলহাজ¦ এম এ কালামের নিজস্ব অর্থায়নে ২০১০ সালে দশ লাখ টাকা ব্যায়ে বাবুগঞ্জ ডিগ্রি কলেজ মাঠে একটি শহীদ মিনার স্থাপন করেন। সেটিই উপজেলার কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার হিসেবে ব্যবহার করা হত। দীর্ঘদিন উপজেলার কেন্দ্রীয় কোন শহীদ মিনার না থাকায়ও শহীদ মিনার নির্মাণে কোন জনপ্রতিনিধি কিংবা উপজেলা প্রশাসনের তৎপরতা দেখা যায়নি। সর্বশেষ শহীদ মিনার নির্মাণের প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুন নেছা খান সরকারী বরাদ্দে এটি নির্মানের ব্যাপারে উদ্যোগ গ্রহন করেন। সে লক্ষে গেল ২০২১-২০২২ অর্থবছরে টিআর এর বিনিময়ে বাবুগঞ্জ উপজেলা কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মানে ৬ লক্ষ টাকা বরাদ্দ প্রদান করেন। যার ৩ লক্ষ টাকা ২০২১-২০২২ অর্থবছরে উত্তোলন করেন এর প্রকল্প সভাপতি উপজেলা ওয়ার্কসার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক মোঃ সাহিন হোসেন। এদিকে শহীদ মিনার নির্মাণ ও স্থান নির্মানের ব্যাপারে সংরক্ষিত মহিলা আসনের সংসদ সদস্য লুৎফুন নেছা বেগম উপজেলা পরিষদের সাথে মত বিনিময় করেন। বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ কাজী ইমদাদুল হক দুলাল সে সময় উপজেলা পরিষদের সামনে বঙ্গবন্ধুর ম্যুরালের দক্ষিণ পাশে নির্মাণের ব্যাপারে স্থান নির্বাচন করেন। কিন্তু দীর্ঘদিন অতিবাহিত হলেও সেখানে শহীদ মিনার নির্মাণের কোন পদক্ষেপ গ্রহন করেননি উপজেলা পরিষদ। এ ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান আলহাজ¦ কাজী ইমদাদুল হক দুলাল বলেন উপজেলা পরিষদের জায়গায় কোন স্থাপনা নির্মাণ করতে হলে স্থানীয় সরকার মন্ত্রণালয়ের অনুমোদনের বিষয় রয়েছে। আমরা ইতি মধ্যেই শহীদ মিনার নির্মাণ ও এর স্থান নির্ধারণের জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়েছি। এটি সময়ের ব্যাপার। চলতি বছরই শহীদ মিনার নির্মাণ করা হবে। এ বিষয়ে প্রকল্পের সভাপতি ও ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাহিন হোসেন দাবী করেন উপজেলা চেয়ারম্যানের গাফেলতির কারণে কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ কাজ পিছিয়ে গেছে। তাঁর সদিচ্ছা থাকলে বহু আগেই এটি নির্মাণ হত। তিনি (উপজেলা চেয়ারম্যান) জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলহাজ¦ আবুল হাসানাত আব্দুল্লাহ্ শহীদ মিনার উদ্বোধন করবেন বলে সময় ক্ষেপণ করে এটি নির্মান কাজ পিছিয়ে নিয়েছে। যার ফলে চলতি বছরও কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণ পিছিয়ে যাচ্ছে এবং বরাদ্দও ফেরৎ যাওয়ার আশংখ্যা রয়েছে। ফলে আবারো ৫ কিলোমিটার দূরে গিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা নিবেদন করতে হবে উপজেলা প্রশাসন ও সংশ্লিষ্টদের। কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার নির্মাণের ব্যাপারে বাবুগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার নুসরাত ফাতিমার সাথে ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।