মহামান্য হাইকোর্টের নির্দেশে কাপ্তাই হ্রদের অবৈধ দখলদারীদের উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসন। রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের নির্দেশে মঙ্গলবার (৩১ জানুয়ারী) দুপুরে শহরের আসামবস্তী এলাকা থেকে উচ্ছেদ অভিযান শুরু করেন, রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাজমা বিনতে আমিন। শহরের আসামবস্তী ব্রাহ্মণটিলা, আসামবস্তী ব্রীজ সংলগ্ন কাপ্তাই হ্রদ দখল করে গড়ে উঠা অবৈধ বাজারের দোকান পাঠ উচ্ছেদ অভিযান করেন।
অভিযানে ব্রাহ্মণটিলা এলাকায় ৩টি কাচাঘর, ও নির্মাণাধীন একটি ভবন ভেঙ্গে দেয়া হয়। পরে আসামবস্তী ব্রীজ এলাকা অভিযান পরিচালনা শুরু করে ৪টি দোকান ভাঙ্গার পর স্থানীয় ব্যবসায়ীদের মালামাল সরিয়ে নেয়ার অনুরোধ করলে আজ রাত পর্যন্ত সময় নির্ধারণ করে দেয়া প্রশাসন। আগামী সকাল ১০টায় আবারো উচ্ছেদ অভিযান শুরু হবে বলে জানান উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা।
এদিকে রাঙ্গামাটি শহরের বিভিন্ন এলাকায় বিলবোর্ড স্থাপন করেছে রাঙ্গামাটি জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মিজানুর রহমান ও পুলিশ সুপার মীর আবু তৌহিদ। বিল বোর্ডে সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের নির্দিশনা দেয়া হয়। নির্দেশনায় বলা হয়, এতদ্বারা সর্বসাধারণের অবগতির জন্য জানানো যাচ্ছে যে, মহামান্য সুপ্রিম কোর্ট, হাইকোর্ট বিভাগের দায়রকৃত রিট পিটিশন নং-১১৮৮৫/২০২২ এর বিগত ১৭/১০/২০২২ খ্রিস্টাব্দের নোটিশের প্রেক্ষিতে রাঙ্গামাটি পার্বত্য জেলায় অবস্থিত কাপ্তাই হ্রদের সকল প্রকার অবৈধ ভবন/স্থাপনা নির্মাণ নিষিদ্ধ করা হলো। কাপ্তাই হ্রদের তীরে গড়ে উঠা অবৈধ স্থাপনা উচ্ছেদের অভিযানের প্রক্রিয়া চলমান থাকবে বলে জানান জেলা প্রশাসক।
এদিকে সদরসহ জেলাজুড়ে কাপ্তাই হ্রদের জায়গা দখল করে গড়ে তোলা হয়েছে অসংখ্য অবৈধ স্থাপনা। এসব স্থাপনা গড়ে তোলা হয়, শুস্ক মৌসুমে হ্রদের পানি কমে গেলে ভেসে উঠা জায়গায় ভরাট করে পাকা স্থাপনা এবং পাকা পিলার ও গাছের খুঁটি গেড়ে কাঁচা স্থাপনা নির্মাণ দিয়ে। এ ছাড়াও বৈধ-অবৈধ জায়গার নিজ নিজ বাড়িঘরের সামনে পেছনে ব্যাপক হারে দখল করা হচ্ছে হ্রদের জায়গা। কেবল রাঙ্গামাটি শহর এলাকায় কাপ্তাই হ্রদের পাড় দখল করে নির্মাণ করা হয়েছে, কয়েক হাজার অবৈধ স্থাপনা। এসব স্থাপনা নির্মাণের ফলে রাঙ্গামাটিতে দিন দিন বেড়ে উঠছে প্রচুর অপরিকল্পিত ও পরিবেশ বিরোধী বস্তি। এসব দখলদারদের ত্যাগ করা মল-মূত্রসহ নিক্ষেপ করা ময়লা-আবর্জনা ও বর্জ্যে দূষিত হচ্ছে কাপ্তাই হ্রদের পানি ও আশেপাশের পারিপার্শ্বিক পরিবেশ। ভরাট হয়ে যাচ্ছে হ্রদের তলদেশ। ফলে কাপ্তাই হ্রদ ও পানি দিন দিন ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়ছে।