দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি দপ্তর কৃষি মন্ত্রণালয় ও কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর খুলনার নানা দিক নির্দেশনায় ও পৃষ্ঠপোষকতায় কৃষিক্ষেত্রে এক মহাবিপ্লব সংঘটিত করে চলেছেন। কোথাও থাকবে না একটুকু পতিত জমি সরকারের এমন নির্দেশনা বাস্তবায়নে, যে জমিতে যে ফসল উৎপাদন করা যায় এবং একই জমিতে একাধিক জাতের ফসল উৎপাদন করা যায় এমনই মেঘা প্রকল্প ও নানা ধরণের কৃষি ও কৃষকবান্ধব সহযোগিতা নিয়ে দিঘলিয়ার মাঠ পর্যায়ে কাজ শুরু করেছেন কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর।
সংশ্লিষ্ট সূত্র থেকে জানা যায়, দিঘলিয়া উপজেলা খুলনা শহর থেকে ভৈরব নদী দ্বারা জেলা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন ও ভৈরব ও আতাই নদী দ্বারা ত্রিখণ্ডিত একটা জনপদের নাম। খুলনা শহরের উত্তর কোলে অবস্থিত ২টিসহ ৬টি ইউনিয়ন নিয়ে দিঘলিয়া উপজেলা গঠিত। এ জনপদের মানুষ জীবন যাত্রার জন্য কাঁচা পাট ও পাট পাটজাত শিল্পের ওপর নির্ভরশীল ছিল। ৮০-দশকের পর থেকে পাট শিল্পে ধস নামায় ২০২১ সালের প্রথম দিক থেকে সকল পাটকল সরকারিভাবে বন্দ করে দেওয়ায় এ অঞ্চলের প্রায় অর্ধলক্ষ মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়ে। এ জনপদের মানুষ হঠাৎ করে কলকারখানা বন্দ করে দেওয়ায় এ অঞ্চলের মানুষের ব্যবসা বানিজ্যে চরম ধস নামে। বেকার হয়ে পড়ায় কিংকর্তব্য বিমুঢ় হয়ে পড়ে অধিকাংশ মানুষ। এ কর্মহীন মানুষের মাঝে অশার বাণী নিয়ে নানা প্রকল্প ও সুযোগ সুবিধা নিয়ে এ জনপদের মানুষের দারোস্থ হয় দিঘলিয়া উপজেলার খেটে খাওয়া মানুষের মাঝে। তারা কৃষি কাজে নানা মুখি স্বপ্ন দেখায় মানুষকে। যে স্বপ্ন দিঘলিয়াবাসীর জীবনে বাস্তব স্বপ্নে রূপ নিয়েছে। দিঘলিয়া উপজেলা কৃষি দপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা ও উপ সহকারী কর্মকর্তাগণের নরলস প্রচেষ্টায় আজ কর্মহীন কিংকর্তব্য বিমুখ মানুষের মাঝে বৈপ্লবিক পরিবর্তন এনে এক সুন্দর জীবনে এনে দাঁড় করিয়েছে।
আর দিঘলিয়া উপজেলার কৃষি খাতে এই বৈপ্লবিক পরিবর্তন সাধনের পিছনে যে মানুষটির কঠিন ও বাস্তবমুখি দিকনির্দেশনা ও পৃষ্ঠপোষকতা রয়েছে তিনি আর কেউ নয়। তিনি হলেন দিঘলিয়ার কৃতী সন্তান বাংলাদেশ সরকারের কৃষি মন্ত্রণালয়ের সচিব ওয়াহিদা আক্তার শীলা। তার পৃষ্ঠপোষকতা ও দিকনির্দেশনায় দিঘলিয়ার মানুষ ধান, গম, সরিষা, চুঁইঝাল, সবজী, ঘাস চাষ, ভুট্টা চাষে ব্যাপক সাড়া জাগিয়েছে। নানা জাতের ফুল, ফল ও বনজ গাছের নার্সারী তৈরি করে এলাকায় খ্যাতি অর্জন করেছে। আমের বাগান করে অনেকে সরকারিভাবে নানা পদক পেয়েছেন। এখানেই শেষ নয়। কৃষকদের জমিতে সেচ সুবিধা তরান্বিত করতে সেচ প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। মাছ চাষের পাশাপাশি সেচ সুবিধা তরান্বিত করতে খাল খনন করা হয়েছে এবং আগামীতে আরো কয়েকটা খাল বেদখল মুক্ত করে খনন কর্মসূচি বাস্তবায়নের অপেক্ষায়। তবে দিঘলিয়া উপজেলায় পান চাষ দীর্ঘদিনের একটা সম্ভাবনাময় ফসল। সেদিকে কঠোর দৃষ্টি আকর্ষণ পান চাষিসহ কৃষি বান্ধব সকল মহলের।
পাশাপাশি দিঘলিয়ায় মৎস্য চাষ, আম চাষসহ গাভী ও ষাঁড় পালন খুবই গুরুত্বপূর্ণ ও জনপ্রিয়তা লাভ করেছে। যুব সমাজ বর্তমানে গাভী ও ষাঁড় পালনে ঝুঁকে পড়ছে। দিঘলিয়ার দুধ ও দুগ্ধজাত পণ্য দেশ- বিদেশে রপ্তানি ও সমাধৃত হচ্ছে।