সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার প্রাক্তন এপিএস উপ-সচিব (অব.) ইঞ্জিনিয়ার মো. আবদুল মতিন খানের বিরুদ্ধে সম্প্রতি কুমিল্লার তিতাস, হোমনা উপজেলা ও পৌর বিএনপি বেশ কিছু অভিযোগ তুলেছেন। সোমবার তিতাস উপজেলার মাছিমপুর গ্রামের নিজ বাড়িতে এক সংবাদ সম্মেলনের মাধ্যমে এসব অভিযোগকে তিনি মিথ্যা, বানোয়াট, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত উল্লেখ করেন। এ সময় তিনি প্রতিটি অভিযোগ খ-ন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন। আগামী জাতীয় নির্বাচনের জন্য প্রস্তুতি গ্রহণ করছেন বলেও জানান। এ সময় হোমনা ও তিতাস উপজেলার শতাধিক বিএনপির নেতাকর্মী উপস্থিত ছিলেন।
সদ্য অবসরপ্রাপ্ত কর্মকর্তা সরকারি চাকুরিকালে ২০০১-২০০৬খ্রি. সময়ে সাবেক প্রধানমন্ত্রী বেগম খালেদা জিয়ার এপিএস থাকাকালে আওয়ামী লীগ নেতাদের সুযোগ সুবিধা দেওয়া, কলাকান্দি ইউনিয়ন বিএনপি সভাপতির বিরোধিতা ও স্থানীয় চেয়ারম্যানকে হত্যার পরিকল্পনা, জরুরী সরকারের সময় বেগম খালেদা জিয়ার বিরুদ্ধে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের নানা তথ্য সরবরাহ, বিএনপির সদস্য না হয়েও শহিদ জিয়া ও বেগম জিয়া, তারেক রহমান ও তার নিজের ছবি সংবলিত ইংরেজি নতুন বর্ষের শুভেচ্ছা জানানোকে নেতানেত্রী ও দলের অবমাননা, কাজ ও সুবিধা দেওয়ার কথা বলে বিভিন্নজনের কাছ থেকে কোটি কোটি টাকা অর্জন করে ব্যবসায় বিনিয়োগ এবং ঢাকার তেজগাঁও থানার এসি (ল্যান্ড) থাকাবস্থায় ঘুষ, দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদ গড়ে তোলার অভিযোগ উত্থাপন করা হয়েছে। এসব অভিযোগকে তিনি সম্পূর্ণ মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন, কাল্পনিক ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত আখ্যা দিয়ে বলেন, দলের চেয়ারপারসন বেগম খালেদা জিয়া, ভারপ্রাপ্ত চেয়ারপারসন তারেক রহমান তার সততা সম্পর্কে সম্যক অবহিত আছেন এবং নিজেকে সম্পূর্ণ সৎ হিসেবে অভিহিত করেন। এ ক্ষেত্রে কেউ যদি ঘোলা পানিতে মাছ শিকারের চেষ্টা করে তাহলে ব্যর্থ হবে।
অভিযোগকারীদের তিনি পাল্টা চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়ে বলেন, কেউ যদি এসব অভিযোগ সত্য প্রমাণ করতে পারে, তাহলে দেশের প্রচলিত আইনে যে কোনো বিচার তিনি মাথা পেতে নেবেন। আর যদি না পারেন- তাহলে কী হবে? এমন প্রশ্নও রাখেন। তিনি আরও বলেন, সরকারি চাকুরিকালে তিনি কোনো দুর্নীতি করে জেলে যাননি। সম্পূর্ণ রাজনৈতিক কারণে তার বিরুদ্ধে মামলা হয়েছিল। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে তিনি ১৪ বছর ওএসডি ছিলেন। ওই সময় তিনি কোনো প্রমোশন কিংবা পোস্টিংও পাননি। তার ব্যাচমেট অনেকে সচিব, বর্তমানে ক্যাবিনেট সচিব হয়েছেন, পুলিশের আইজি, অতিরিক্ত আইজি হয়েছেন।
সাবেক এই আমলা বলেন, দুর্নীতি প্রমাণের জন্য সর্বোচ্চ আদালত, দুদক ও এনবিআর কর্তৃক অভিযোগ প্রমাণিত হতে হবে। জরুরী সরকারের সময় তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি ও অবৈধ সম্পদের কোনো প্রমাণ পায়নি। যার সংবাদ তখন জাতীয় পত্রপত্রিকায় প্রকাশিত হয়েছে।
সংবাদ সম্মেলনে বেগম খালেদা জিয়ার সাবেক এপিএস ইঞ্জিনিয়ার আবদুল মতিন খান আরও বলেন, ‘আমি রাজনীতি করবো ও বিএনপির রাজনীতি করবো- এই ঘোষণাই কি এরূপ অভিযোগের উৎপত্তি? এটিকে তিনি মিলিয়ন ডলারের প্রশ্ন হিসেবেও উল্লেখ করেছেন। নিজেকে একজন বিএনপির ‘এক্সটেন্ডেড’ (সম্প্রাসারিত) পরিবারের সদস্য উল্লেখ করে বলেন, আমার জীবনে বিএনপিই প্রথম বিএনপিই শেষ। দল সুযোগ দিলে নির্বাচনের মাধ্যমে নির্বাচিত হয়ে জনগণের সেবক হিসেবে কাজ করার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।