হত্যাকান্ডের মাত্র ৫ দিন পরই প্রবাসী হামিদ হত্যা মামলাটির তদন্তভার জেলা ডিবি পুলিশের উপর ন্যাস্ত করা হয়েছে। বুধবার ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. রেজাউল ইসলাম সরাইল সদরের উচালিয়াপাড়া ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। এর আগে গত ৬ ফেব্রƒয়ারি সোমবার মামলাটি ডিবি পুলিশের কাছে হস্তান্তরের নির্দেশ দিয়েছেন জেলা পুলিশ সুপার। গত ৭ ফেব্রƒয়ারি মঙ্গলবার সরাইল থানা কর্তপক্ষ মামলার নথিপত্র জেলা ডিবি পুলিশকে বুঝিয়ে দিয়েছেন। লাশ উদ্ধারের দিন দিবাগত গভীররাতে সরাইল থানা পুলিশ অভিযান চালিয়ে ঘটনার সাথে সম্পৃক্ত থাকার অভিযোগে উচালিয়াপাড়া গ্রামের ৪ যুবককে গ্রেপ্তার করেছেন। ওই চার আসামি বর্তমানে জেলহাজতে রয়েছেন। এরইমধ্যে মামলার তদন্তের দায়িত্ব হস্তান্তরের নির্দেশ আসে।
পুলিশ ও স্থানীয় একাধিক সূত্র জানায়, গত ১ ফেব্রƒয়ারি বুধবার রাত ১১টায় বেরিয়ে গিয়ে ফিরে আসেননি উচালিয়াপাড়া গ্রামের বাসিন্দা সৌদী প্রবাসী আবদুল হামিদ। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকালে হামিদের বাড়ির উত্তর পাশের খালি জমিতে মিলে তাঁর লাশ। শুকনো জমিতে পড়েছিল হামিদের পানিতে ভেজা লাশ। হামিদের পড়নের সকল কাপড়ছোপড় ছিল ভেজা। লাশের পাশে রাখা ছিল হামিদের প্লাস্টিকের একজোড়া জুতা ও টুপি। পুলিশের অনুসন্ধানে হামিদের পড়নের শার্টের ও প্যান্টের দুই পকেটে পাওয়া গেছে কাঁদার টুকরা। পকেটে ছিল পানিতে ভেজা একটি ছোট এনালগ মুঠোফোন সেট। তখন পুলিশসহ অনেকেই বলাবলি করছিলেন, হামিদকে অন্য কোথায় পানিতে ছুবিয়ে মৃত্যু নিশ্চিত করে কৌশলে লাশটি বাড়ির পাশে রেখে গেছে দূর্বৃত্তরা। ২ ফেব্রƒয়ারি অজ্ঞাতনামা লোকদের আসামি করে হামিদের স্ত্রী রিনা বেগম সরাইল থানায় হত্যার পর গুমের চেষ্টার অভিযোগে একটি মামলা করেন। হামিদের এনালগ (কডিওয়ালা) মুঠোফোন সেটের ভেতরে থাকা সীমের সহায়তায় ওই রাতেই অভিযান চালিয়ে পুলিশ উচালিয়াপাড়া গ্রাম থেকে রতন মালাকার (৩২), মোফাচ্ছেল মিয়া (২০), শাহিন মিয়া (১৯) ও মারূফ মিয়া (২৭) নামের ৪ যুবককে গ্রেপ্তার করে আদালতের মাধ্যমে জেলহাজতে প্রেরণ করেছেন। প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে হত্যাকান্ড বিষয়ে তাদের কাছ থেকে গুরূত্বপূর্ণ তথ্য প্রাপ্তির কথা জানিয়েছিলেন মামলার তৎকালীন তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. জয়নাল। মূল রহস্য উৎঘাটন ও জড়িত অন্যান্যের সনাক্ত করতে আরো জিজ্ঞাসাবাদের জন্য ৪ আসামীর ৭ দিনের রিমান্ডের আবেদন করেছিলেন তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই মো. জয়নাল। রিমান্ড আবেদন পক্রিয়া চলমান অবস্থায় মামলাটি ডিবিতে হস্তান্তরের নির্দেশ আসে। গত মঙ্গলবার মামলার নথিপত্র বুঝে নিয়েছেন জেলা ডিবি পুলিশের উপপরিদর্শক মো. রেজাউল ইসলাম। তদন্তকারী কর্মকর্তা রেজাউল ইসলাম বলেন, মামলাটি তদন্তের দায়িত্ব পাওয়ার পরই বুধবার পিও ভিজিট করেছি। মামলার বাদীনি সহ অনেকের সাথে কথা বলেছি। তদন্তের মাধ্যমে প্রকৃত খুনিদের আইনের আওতায় আনার চেষ্টা করছি। প্রসঙ্গত: গত ১ ফেব্রƒয়ারি বুধবার রাত ১১ টায় ৪ সন্তানের জনক প্রবাসী আবদুল হামিদকে কে বা কাহারা মুঠোফোনে ডেকে নিয়ে যায়। ওই রাতে আর বাড়ি ফিরেনি হামিদ। পরের দিন বৃহস্পতিবার সকাল ৭ টার দিকে হামিদের বসতবাড়ির উত্তর পাশের খালি জায়গায় হামিদের লাশ পড়ে থাকতে দেখে শিশুরা। হামিদ উচালিয়াপাড়া গ্রামের প্রয়াত আবদুল আলীমের ছেলে।