চট্টগ্রামের হাটহাজারীস্থ আঞ্চলিক কৃষি গবেষণা কেন্দ্রের গবেষণা মাঠ এবং উদ্ভিদ রোগতত্ত্বের ল্যাব গবেষণা কার্যক্রম পর্যবেক্ষন শেষে গতকাল বুধবার বিভিন্ন শ্রেণী-পেশার সমন্বয়ে এক মতবিনিময় সভায় প্রধান অতিথি হিসেবে বাংলাদেশ কৃষি গবেষণা ইনস্টিটিউট এর (বিএআরআই) মহাপরিচালক ড. দেবাশীষ সরকার বলেন, নিরাপদণ্ডবিষমুক্ত কৃষি পণ্য উৎপাদনে কৃষিবান্ধব উন্নত জাত-প্রযুক্তির সম্ভারে দেশের খাদ্য উৎপাদনে ভুমিকা রাখবেন বিজ্ঞানীরা। উন্নত টেকশই জৈব-বালাই ব্যবস্থাপনায় উদ্ভিদের বালাই দমন, আধুনিক মানসম্পন্ন স্প্রীড ব্রিডিং এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট কাঙ্খিত বৈশিষ্টের উদ্ভাবন, উন্নত সেচ, সার, মাটি ব্যবস্থাপনা উদ্ভাবনে বিজ্ঞানীদের আরো নিরলসভাবে কাজ করতে হবে। মানসম্পন্ন বীজ-চারা উৎপাদনের টেকসই জাত-প্রযুক্তি উদ্ভাবন করা আজ বড় প্রয়োজন যা বিজ্ঞানীদের জন্য বড় চ্যালেঞ্জ। কৃষির এই প্রকট সমস্যা দূরীকরণে বিজ্ঞানীদের গবেষণা আরো জোড়ালো করার জন্য তিনি আহবান জানান।
ড. মো. সামছুর রহমান, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সভাপতিত্ত্বে ড. মো. মনিরুজ্জামান, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা এবং আনিকা তাবাসসুম, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সঞ্চালনায় মতবিনিময় সভায় বিজ্ঞানভিতিক এবং কেন্দ্রের বিভিন্ন দিক নিয়ে উপস্থাপনা করেন ড. মো. মশিউর রহমান, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। আরো বত্তব্য রাখেন ড. মো. আমীন সাবেক মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ড. মো. এস এম ফয়সল, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ড. মো. জামাল উদ্দিন, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, ড. মুহাম্মদ তোফাজ্জল হোসেন রনি, ঊর্ধ্বতন বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা, মো. রাশেদ সরকার, বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তাসহ প্রমুখ। ড. সরকার এ সময় নভেল বেসিলাস ফরমোলেশান দিয়ে বেগুনের ঢলে পড়া রোগ দমন, ক্রপ মিউজিয়াম, কৃষিতত্ত্বের মাঠ, কেনালা জাতীয় বরি সরিষা-১৮, মাল্টা, আইসি ব্লকের বিভিন্ন মাতৃবাগান এবং বিভিন্ন পরীক্ষাকার্য পর্যবেক্ষন করেন। তিনি আরো বলেন, ফলের পুষ্টি গুণাগুণ বজায় রেখে বিজ্ঞানীদের গবেষণা করতে হবে। কলম চারা উৎপাদনের মাধ্যমে নতুন ফলের জাত দেশ ব্যাপী কৃষকের কাছে কৃষি সম্প্রসারণ ও গবেষণার পারস্পরিক সহযোগিতায় সহজ ভাবে পৌছে দিতে হবে। মতবিনিময়ের পর তিনি কেনোলা জাতীয় বারি সরিষা-১৮ জাতের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে মাঠ দিবসে প্রধান অতিথির আসনে বক্তব্য রাখেন। প্রকল্প পরিচালক ড. ফেরদৌসী বেগম, মুখ্য বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে মুল প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন ড. মো. মোক্তাদির আলম, প্রধান বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তা। প্রকল্প পরিচালক ড. বেগম জানান, কেনালা জাতীয় বরি সরিষা-১৮ জাতটিতে ইরোসিক অ্যাসিড নেই বল্লেই চলে। সাধারন সরিষার জাতগুলোতে শতকরা ২২-৩০ ভাগ ইরোসিক অ্যাসিড রয়েছে যা বিভিন্ন রোগের জন্য বড় কারণ বলে গবেষণায় প্রতীয়মান হয়েছে। কিন্তু বারি সরিষা-১৮ জাতটিতে ইরোসিক অ্যাসিড মাত্র শতকরা ১.০৬ ভাগ। নতুন উদ্ভাবিত বারি সরিষা-১৮ জাতটি চট্টগ্রাম অঞ্চলে জনপ্রীয় হয়ে উঠবে বলে তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করেন। এ সময় হাটহাজারী উপজেলা কৃষি অফিসার আল মামুন সিকদার, বিশিষ্টজন, সাংবাদিক নেতৃবৃন্দসহ ৮০ জন কৃষক উপস্থিত ছিলেন।