চলমান আন্দোলনে জনগণকে সম্পৃক্ত করতে শনিবার সারাদেশের ন্যায় বগুড়ার নন্দীগ্রাম উপজেলার প্রতিটি ইউনিয়নে পদযাত্রা করবে বিএনপি। একই দিন ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশের ঘোষণা দিয়েছে ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ। দুইদলের এই পাল্টাপাল্টি সমাবেশ ঘিরে নন্দীগ্রামে রাজনৈতিক উত্তেজনা বিরাজ করছে। তবে সমাবেশকে কেন্দ্র করে পুলিশও সতর্ক অবস্থায় রয়েছে।
তথ্যনুসন্ধানে জানা যায়, পাঁচটি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা নিয়ে গঠিত নন্দীগ্রাম উপজেলা। এই উপজেলার ২ লাখ মানুষের বসবাস। এরমধ্যে প্রায় একলাখ মানুষ বিভিন্ন রাজনীতি দলের সাথে জড়িত রয়েছে। আর এই উপজেলায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় রয়েছেন মাত্র ৭৫ জন পুলিশ। শনিবার একদিনে বিএনপি-আওয়ামী লীগের সমাবেশ রয়েছে। তবে সমাবেশকে ঘিরে যদি দু’দলের মধ্যে সংঘর্ষ ঘটে, তাহলে এই পুলিশ দিয়ে রক্ষা করতে পারবে কি? এমনই মনে করছেন নন্দীগ্রামের সূধি সমাজ।
শনিবার উপজেলা বিএনপির উদ্যোগে প্রতিটি ইউনিয়নে পদযাত্রা করবে। তাদের পদযাত্রা সফল করতে দফায় দফায় মিটিং করছেন দলীয় নেতৃবৃন্দ। পদযাত্রায় বাধা দিলে তা মোকাবেলা করতে প্রস্তুতিও নেয়া হয়েছে বলে একাধিক সূত্রে জানা গেছে।
পাশাপাশি একই দিন ইউনিয়ন পর্যায়ে শান্তি সমাবেশ সফল করতে ব্যাপক প্রস্তুতি গ্রহণ করেছে নন্দীগ্রাম আওয়ামী লীগ। প্রতিটি ইউনিয়নেই জেলা ও উপজেলা আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা উপস্থিত থাকবেন। এমন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে ইউনিয়ন পর্যায়ে বড় ধরনের সংঘাতের আশঙ্কা করছেন নন্দীগ্রামবাসী।
এরআগে গত বছরের ৩১ আগস্ট কেন্দ্রীয় কর্মসূচির অংশ হিসেবে মুনসুর হোসেন ডিগ্রী কলেজ মাঠে সমাবেশ আহবান করে উপজেলা বিএনপি। একই সময়ে ১০০ গজ দূরে বাসস্ট্যান্ড এলাকায় বঙ্গবন্ধু চত্বরে উপজেলা শ্রমিকলীগ শোকাবহ আগস্ট উপলক্ষে শোকসভার আয়োজন করে। একপর্যায়ে বিএনপি-আওয়ামী লীগের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে। এতে ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারন সম্পাদক আবু রায়হানকে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আহত করে বিএনপির নেতা কর্মীরা।
আবারো একদিনে বিএনপির ইউনিয়ন পর্যায়ে পদযাত্রা ও আওয়ামী লীগের শান্তি সমাবেশ ঘিরে তৃণমূল নেতাকর্মীদের মধ্যে দেখা দিয়েছে এক ধরনের উত্তেজনা। নন্দীগ্রামবাসী আশঙ্কা করছেন পাল্টাপাল্টি কর্মসূচি ঘিরে আবারও সংঘর্ষ ঘটতে পারে।
উপজেলা বিএনপির সভাপতি আলাউদ্দিন সরকার বলেন, ইতোমধ্যে নন্দীগ্রাম দলীয় কার্যালয়ে প্রতিটি ইউনিয়নে পদযাত্রা সফল করতে মিটিং করেছি। পদযাত্রা সফল করতে যা যা করার দরকার করা হবে। তবে আমরা কোন সংঘাত চাই না।
এবিষয়ে নন্দীগ্রাম উপজেলা আওয়ামী লীগের সাধারন সম্পাদক মো. আনিছুর রহমান জানান, শান্তি সমাবেশ সফল করতে প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে। বিএনপি পদযাত্রার নামে বিশৃঙ্খলাসহ সন্ত্রাসী কর্মকা- চালালে তাদের প্রতিহত করা হবে।
জানতে চাইলে নন্দীগ্রাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, নন্দীগ্রাম থানাসহ একটি তদন্ত কেন্দ্রে ৭৫ জন পুলিশ সদস্য রয়েছে। তাদের উপজেলার পাঁচটি ইউনিয়নে দায়িত্বভাগ করে দেয়া হবে। দুইদলের সমাবেশ ঘিরে পুলিশ সজাগ রয়েছে। কেউ বিশৃঙ্খলা করার চেষ্টা করলে আইনগত ব্যবস্থা নেয়া হবে।