উন্নয়নের কর্মযজ্ঞে এগিয়ে যাচ্ছে রেল বললেও যেন যাত্রীদের দুর্ভোগের কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে ট্রেন। দীর্ঘ দিন ধরে ট্রেন চলাচল বন্ধ রাখাসহ বিভিন্ন রেলপথগুলো অচলাবস্থা ও নিরাপত্তার অভাবে বিপাকে পড়ছেন যাত্রীরা। দেশের পূর্বাঞ্চলের অনেক রেলপথেই ট্রেন চলাচল বন্ধ রয়েছে। তবে জানা গেছে ইঞ্জিন সংকটসহ নানা সমস্যার কারণে দীর্ঘ দিন ধরে ট্রেন চলাচল সাময়িক বন্ধ রাখা হয়েছে। কিন্তু এ বিষয়ে সংশ্লিষ্ট রেলওয়ে কর্তৃপক্ষের কাছে জানতে চাইলে কবে থেকে ওই রেলপথ গুলো পুনরায় আবার চলবে সে বিষয় কেউ কিছু বলতে পারছেনা। প্রতি বছর রেলওয়ে শ্রমিক-কর্মচারীর চাকরি শেষ হওয়ার পর অবসরে যাওয়ায় শূন্য পদের সংখ্যা বেড়েই চলেছে। যার ফলে দৈনন্দিন দাপ্তরিক কাজে চলছে অচলাবস্থা। এসব শূন্য পদের শ্রমিক-কর্মচারীর বিপরীতে কোনো নিয়োগ না দেয়ায় হযবরল অবস্থা বিরাজ করছে। তারপরেও যেন এ নিয়ে কারো কোনো নেই মাথা ব্যথা। বর্তমানে নির্বাহী প্রকৌশলী পদে কর্মকর্তারা অতিরিক্ত দায়িত্ব পালন করছেন ঢাকা থেকে। রেলওয়ের একটি হাসপাতাল থাকলেও ফার্মেসি নেই বলে অধিকাংশ সময়েই বন্ধ থাকে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। তারা আরো বলেন, ওইসব অঞ্চলের প্রধান প্রকৌশলীর বরাবরে একাধিকবার শূন্য পদের বিষয়ে প্রতিবেদন পাঠানো হলেও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কার্যকরী কোনো পদক্ষেপ নেয়া হয়নি। কবে নাগাদ এসব শূন্য পদগুলো পূরণ হবে, তা নিশ্চিত করে বলতে পারছেন না রেলওয়ে বিভাগের সংশ্লিষ্ট কোনো কর্মকর্তা। নিরাপত্তা ও সেবা নিয়ে অসন্তুষ্ট রেল-যাত্রীরা। ট্রেনের যাত্রীগণ বেপরোয়া অপরাধীদের কারণে নিশ্চিন্তে ভ্রমণ করতে পারছেন না। যেমন: গামছা পার্টি, অজ্ঞান পার্টি, মলম পার্টি, পকেটমার ও মাদক পাঁচারকারী চক্রের কারণে। প্রায়ই দুর্বৃত্তদের হাতে ট্রেনের সাধারণ যাত্রীরা প্রাণ হারাচ্ছেন। দিন দিন এসব ঘটনা বৃদ্ধিই পাঁচ্ছে। সংঘবদ্ধ-চক্র নগদ টাকা, মোবাইল, স্বর্ণের চেইন ও গুরুত্বপূর্ণ জিনিসপত্র লুট করে আবার যাত্রীদের চলন্ত ট্রেন থেকে ফেলে হত্যা করছে। যদিও এর কোনো সঠিক হিসাব দিতে পারেননি স্থানীয় রেলওয়ে কর্তৃপক্ষ। এসব অত্যাচার সহ্য এবং নানা ধরনের উদ্যোগ, উৎকণ্ঠা নিয়েই যাত্রীদের ট্রেনে ভ্রমণ করতে হচ্ছে। এছাড়াও মেইল ও লোকাল ট্রেন বন্ধ হওয়া, টিকিট কালোবাজারি, হয়রানির কারণে যাত্রী কমছে। এজন্য সবার সহযোগিতাও প্রয়োজন। এদেশের উন্নত রেল ব্যবস্থা গড়ে তুলতে ও যাত্রী-সেবার মান বৃদ্ধি করতে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী ও রেলমন্ত্রনালয়ের প্রতি দৃষ্টি আকর্ষণের আহ্বান করছি, সঠিক প্রকল্পের মাধ্যমে কাজগুলো সুন্দরভাবে মহা-পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করা হোক। তাহলে হয়তো বাংলাদেশের রেলপথের চেহারা বদলে যাবে এবং রেল-যাত্রীরা কিছুটা হলেও এ দুর্ভোগ থেকে মুক্তি পাবে।