জেলার মুলাদী উপজেলা ও পৌর, গৌরনদী এবং আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি ঘোষনা করে এবার তৃণমূল পর্যায়ের নেতাকর্মীদের তোপের মুখে পরেছেন জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিব।
অনতিবিলম্বে ঘোষিত ওই কমিটিকে বিলুপ্ত করে ত্যাগী ও নির্যাতিতদের সমন্ময়ে নতুন কমিটি গঠণের দাবিতে ইতোমধ্যে সংবাদ সম্মেলন করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। একইসাথে ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে কমিটি বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে রোববার বেলা এগারোটার দিকে নগরীতে ঝাড়ু মিছিল ও তাদের কুশপুতুল দাহ করে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করেছেন বিএনপির নেতাকর্মীরা। পাশাপাশি কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই পদত্যাগপত্র পাঠিয়েছেন নতুন কমিটির এক সদস্য।
বিএনপির বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীদের অভিযোগ, সদ্য ঘোষিত মুলাদী উপজেলা ও পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কমিটিতে বিভিন্ন দলের সাথে জড়িত ব্যক্তি, একই পরিবারের একাধিক সদস্য, এলাকায় না থাকা নিস্কীয় দলছুট অযোগ্য ব্যক্তিদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে মাঠে থাকা নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে।
নগরীতে ঝাড়- মিছিল ও কুশপুতুল দাহ করার পূর্বে অনুষ্ঠিত প্রতিবাদ সভায় অন্যান্যের মধ্যে বক্তব্য রাখেন, আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির সাবেক সাধারণ সম্পাদক এইচএম আফজাল হোসেন, গৌরনদী উপজেলা বিএনপির সাবেক সহসভাপতি মঞ্জুর হোসেন মিলন, বিএনপি নেতা মাহবুবুল ইসলাম, গৌরনদী উপজেলা ছাত্রদলের আহ্বায়ক রুবেল গোমস্তা, ছাত্রদল নেতা শহিদুল ইসলাম, রাসেল হাওলাদার, যুবদল নেতা বাচ্চু সিকদার প্রমুখ।
বক্তারা বলেন, গৌরনদী উপজেলা আহ্বায়ক করা হয়েছে সৈয়দ সরোয়ার আলম বিপ্লবকে। যিনি একসময় জাতীয় পার্টির সাবেক মন্ত্রী রুহুল আমিনের এপিএস ও জাতীয় পার্টির নেতা ছিলেন। দীর্ঘদিন থেকে নিজ এলাকার বাহিরে থেকে রাজনীতিতে সে পুরোপুরি নিস্ক্রীয় রয়েছেন। প্রতিবাদ সভা শেষে বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মো. শহিদুল্লাহ ও সদস্য সচিব মিজানুর রহমান খান মুকুলের কুশপুতুল দাহ করেন। সবশেষে নগরীতে ঝাড়- মিছিল বের করা হয়।
এরপূর্বে শনিবার সন্ধ্যায় মুলাদী প্রেসক্লাবে উপজেলা বিএনপির পক্ষে সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন উপজেলা বিএনপির সাবেক যুগ্ন সম্পাদক ও বর্তমান কমিটির সদস্য আবিদুর রহমান শরীফ। তিনি বলেন, গত ৮ ফেব্রুয়ারী বরিশাল উত্তর জেলা বিএনপির আহ্বায়ক দেওয়ান মোহাম্মদ শহীদুল্লাহ ও সদস্য সচিব মিজানুর রহমান খান মুকুলের স্বাক্ষরিত অনুমোদিত মুলাদী উপজেলার ৬১ সদস্য বিশিষ্ট ও পৌর বিএনপির ৪১ সদস্য বিশিষ্ট আহ্বায়ক কমিটির তালিকা মধ্যরাতে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রচার করা হয়। ওই কমিটিতে মুলাদী উপজেলার ত্যাগী, সাংগঠনিক ও যোগ্য নেতাকর্মীদের বাদ দিয়ে অযোগ্য, দলছুট, বিভিন্ন দলের ব্যক্তি ও দেশে না থাকা নিস্কীয়দের গুরুত্বপূর্ণ পদে রাখা হয়েছে।
শহিদুল-মুকুলকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে তিনি আরও বলেন, অর্থ বাণিজ্যের মাধ্যমে ঘোষিত বির্তকিত কমিটি বাতিল করে ত্যাগী ও যোগ্য নেতাদের দিয়ে নতুন করে কমিটি গঠনের জন্য দলের হাইকমান্ডের কাছে জোর দাবি করছি। সংবাদ সম্মেলনে উপজেলা, পৌর ও বিভিন্ন ইউনিয়নের নেতৃবৃন্দরা উপস্থিত ছিলেন।
একইদিন বাণিজ্যের মাধ্যমে ঘোষিত পকেট কমিটি অনুমোদন করায় ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ ঘটাতে জেলা উত্তর বিএনপির আহ্বায়ক ও সদস্য সচিবের বিরুদ্ধে বিষোদাগার করে ঝাড়ু মিছিল করেছে মুলাদী উপজেলা ও পৌর বিএনপির পদবঞ্ছিত নেতাকর্মীরা।
পাশাপাশি কমিটি ঘোষণার কয়েক ঘন্টার মধ্যেই আগৈলঝাড়া উপজেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির সদস্য পদ থেকে পদত্যাগ করেছেন জেলা উত্তর যুবদলের সাবেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদুল ইসলাম টিটন। রাশেদুল ইসলাম টিটন মোল্লা বলেন, নিস্কীয় কর্মীদের গুরুত্বপূর্ণ পদে রেখে পকেট কমিটি গঠণ করে মাঠে থাকা নেতাকর্মীদের অবমূল্যায়ন করা হয়েছে। এজন্য আমি ঘোষিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষণা করে নিজ পদ থেকে পদত্যাগ করেছি।
ঘোষিত কমিটিকে অবাঞ্ছিত ঘোষনা করে পদবঞ্ছিত গৌরনদী উপজেলা যুবদলের সাবেক সাধারণ সম্পাদক রফিক চোকদারসহ একাধিক নেতারা বলেন, সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির গুরুত্বপূর্ণসহ অধিকাংশ পদে সংস্কারপন্থি নেতা জহির উদ্দিন স্বপনের নিস্কীয় সমর্থকদের অগ্রাধিকার দেওয়া হয়েছে। তাই এ পকেট কমিটি বিলুপ্ত করে অনতিবিলম্বে মাঠে থাকা নেতাকর্মীদের নিয়ে গ্রহণযোগ্য কমিটি গঠনের জন্য তারা দলের হাই কমান্ডের কাছে জোর দাবি করেন।