শীত কমার সাথে সাথে ফসলের মাঠে মাঠে বোরো ধানের চারা রোপনে ধুম পড়েছে। এখন মাঠজুড়ে কৃষক-কৃষানী আর কৃষি শ্রমিকরা চারা উত্তোলন, রোপন নইতো জমি প্রস্তুতকরনের কাজে ব্যস্ত সময় পার করছেন। কয়েকদিনের মধ্যে ফসলের মাঠ ভরে যাবে সবুজের চারায়।
পৌষের শেষেই সাধারণত দিনাজপুর অঞ্চলে বোরো চারা রোপণ শুরু হলেও এবার অন্যান্যবারের চেয়ে কুয়াশা ও শীতের কারণে দেরীতে কেউ কেউ চারা রোপন করছেন। এবার কৃষক একটু সময় নিয়ে মাঠে নেমেছে। অল্প সময়ে বোরো চারা রোপণের মধ্য দিয়ে ফসলের মাঠ ভরে যেতে শুরু করেছে। এবার কৃষক আমন ধানের ভাল দাম পেয়েছে। আবহাওয়া অনুকূলে থাকলে এ বছর বোরো চাষও লক্ষমাত্রা ছাড়িয়ে যাবে। সার কীটনাশকের কোনো সংকট নেই বলে কৃষি বিভাগ জানায়।
দিন দিন তাপমাত্রা বাড়ায় বিভিন্ন গ্রামের ফসলের মাঠে দেখা গেছে কৃষকেরা কেউবা জমিতে পানি দিচ্ছেন, কেউবা হাল চাষ করছেন আবার কোনো কৃষক জমিতে কোদাল নিয়ে জমির আইল বাঁধছেন। যেন যারা মাঠে সোনা ফলাবে তাদের স্থবিরতা নেই।
বিরামপুরের আমবাড়ী বালুপাড়া গ্রামের কৃষক আছিম উদ্দিন জানান, তিনি অন্যান্যবার এ সময় বোরো চারা রোপণ করে ফেলেন। কিন্তু এবার শীতের কারণে হওয়ায় একটু দেরিতে চারা রোপণ শুরু করেছেন।
চিরিরবন্দরের নশরতপুর এলাকার রফিকুল ইসলাম জানান, ৫বিঘা জমিতে বোরো ধান চাষ করছেন। কুয়াশার কারণে দেরিতে মাঠে নেমেছেন। তবে সার কীটনাশক সঠিক সময় সরবরাহ ও দাম কম পাওয়ায় তিনি এই পিছিয়ে যাওয়াকে সমস্যা মনে করছেন না।
কাহারোলের বলেয়া গ্রামে দেখা যায়, ভোরেই কৃষকেরা দল বেধে মাঠে বোরো ধানের চারা লাগাচ্ছেন।
কাহারোল উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মল্লিকা রানী সেহানবীশ জানান, বোরো আবাদের কৃষি বিভাগের পক্ষ থেকে সার্বিক পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে। সুষম সার ব্যবহার, প্যাচিং পদ্ধতি ও লাইন করে ধান লাগালে বোরো ধানের ফলন বৃদ্ধিতে কৃষকদেরকে পরামর্শ দিচ্ছে কৃষি বিভাগ।
দিনাজপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্যমতে, চলতি মৌসুমে জেলায় ১ লাখ ৭১ হাজার ১২০ হেক্টর জমিতে বোরো চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে। লক্ষ্যমাত্রা পূরণে এবার ৯ হাজার ৪৩৭ হেক্টর জমিতে বীজতলা তৈরি করা হয়।