মাদকাসক্তির মতোই ইন্টারনেট আসক্তি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অনাগ্রহী করে তুলছে। ইন্টারনেট আসক্ত শিক্ষার্থীদের পরীক্ষার বিষয়ে অনেক বেশি উদ্বিগ্ন করে তুলছে। শুধু তাই নয়, শিক্ষার্থীদের মধ্যে নিঃসঙ্গতা একাকীত্বের অনুভূতি ও আশঙ্কাজনক হারে বেড়ে যাচ্ছে। ফলে শিক্ষা ক্ষেত্রে ইন্টারনেট আসক্ত শিক্ষার্থীদের অ্যাকাডেমি ফলাফল খারাপ হচ্ছে। কাজেই ডিজিটাল টেকনোলজির মাত্রাতিরিক্ত ব্যবহার শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণকর না হয়ে ক্ষতি সাধন করছে। ইন্টারনেটের কারণে সারা বিশ্ব এখন হাতের মুঠোয়। এর মধ্যে যেমন সৃজনশীল কাজ রয়েছে তেমনি যৌনতার বিষয়ও রয়েছে। গান, নাটক, ম্যুভি ক্লিক করলেই মোবাইলের পর্দায় ভেসে উঠে। ফলে শিক্ষার্থীরা পাঠ্যবই বাদ দিয়ে সারাক্ষণ নানা বিনোদনে ব্যস্ত হয়ে পড়েছে। অপরাধ বিষয় নানা মুভি দেখে অপরাধেও কেউ কেউ জড়িয়ে পড়ছেন। উচ্চশিক্ষা ক্ষেত্রে সৃজনশীল পাঠ্য নিয়ে শিক্ষার্থীরা ব্যস্ত হলেও তাদের মধ্যে পরীক্ষা ভীতি তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছেন মনোবিজ্ঞানীরা। মাদকের মরণ ছোবল থেকে রক্ষার জন্য অভিভাবকরা এখন অনেকটা সচেতন হলেও ইন্টারনেট আসক্তি নিয়ে সেভাবে ভাবছেন না। মাঝে মধ্যে অতিরিক্ত ইন্টারনেট ব্যবহারের বিষয়ে ধমক দিলেও ততোটা শক্ত অবস্থান নেন না। অতিরিক্ত ইন্টারনেট আসক্তির কারণে চোখে দেখার সমস্যাও তৈরি হচ্ছে। মনোবিজ্ঞানীরা বলছেন, যে শিক্ষার্থী সারা দিনে রাতে ১২ ঘণ্টা ইন্টারনেট ব্যবহার করে তাকে এক কথায় বলা যায় সে ইন্টারনেটে আসক্ত। স্ক্রিনের দিকে তাকিয়ে থাকার কারণে চোখের পীড়া দেখা দেয় নিদ্রাহীনতাসহ নানা অসুস্থতায় আক্রান্ত হয়। ফলে ইন্টারনেট আসক্তি থেকে ফিরিয়ে আনার ব্যাপারে মনোবিজ্ঞানীরা শিক্ষার্থীদের প্রতি যত্নশীল হতে বলছেন। মাদকাসক্ত থেকে ফিরিয়ে আনতে যেমন মোটিভেশন করে আক্রান্ত ব্যক্তি কোথায় যাচ্ছে, কার সাথে মিশছে তা পর্যবেক্ষণ করে নিজেরা সচেতন হচ্ছেন, তেমনি শিক্ষার্থী সারা দিন রাত ঘরে বসে কি করছে, কি নিয়ে ব্যস্ত তা পর্যবেক্ষণ করতে হবে। প্রয়োজনে মনোবিজ্ঞানীর কাছে নিয়ে সচেতন করতে হবে। বিশ্বব্যাপী শিক্ষার মান খারাপ হওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের ইন্টারনেট আসক্তিকে দায়ী করছেন গবেষকরা। তাদের দাবি, ইন্টারনেট আসক্তি শিক্ষার্থীদের পড়াশোনায় অনীহার প্রধান করুন। এর ফলে বাড়ছে একাকীত্ব, যা হতাশাগ্রস্ত করছে শিক্ষার্থীদের। এ নেতিবাচক প্রভাব পড়ছে গোটা শিক্ষার ওপর। গত দু’দশকে ইন্টারনেটে ব্যাপক পরিবর্তন এসেছে। আগের চেয়ে অনেক বেশি মানুষ অনলাইনে কাজ করছেন, মিডিয়াস্ট্রিসিং করছেন এবং সোশাল মিডিয়ায় সময় কাটাচ্ছেন। তবে ইন্টারনেটের নেতিবাচক দিক গুলো নিয়ে এখনই সচেতন হওয়া জরুরি। মাত্রারিক্ত কোনো কিছুই ভালো নয়। তাই প্রয়োজনে ইন্টারনেট ব্যবহার করতে হবে। তবে তা কোনো অবস্থায় নেশায় পরিণত করা ঠিক নয়। তাই প্রয়োজন জরুরি সচেতনতা।