আক্রমণ ও বল দখলে আধিপত্য করা রিয়াল মাদ্রিদ সামর্থ্য দেখাল ফিনিশিংয়েও। ভিনিসিউস জুনিয়র, ফেদে ভালভেরদে, করিম বেনজেমারা মেলে ধরলেন নিজেদের। পাল্টা আক্রমণে ভীতি ছড়াল আল হিলাল। তাতে বেশ রোমাঞ্চ ছড়াল ক্লাব বিশ্বকাপের ফাইনাল। তবে শেষ দিকে ভালোভাবেই রক্ষণ সামাল দিয়ে শিরোপা জিতে নিল কার্লো আনচেলত্তির দল। রাবাতে গত শনিবার রাতে শিরোপা নির্ধারণী ম্যাচে ৫-৩ গোল জিতেছে রিয়াল। ক্লাব বিশ্বকাপে ইউরোপের সফলতম দলটির এটি পঞ্চম শিরোপা। রিয়ালের হয়ে জোড়া গোল করেন ভিনিসিউস ও ভালভেরদে, অন্যটি বেনজেমা। আল হিলালের প্রথম গোলটি করেন মুসা মারেগা। পরে জোড়া গোল করেন লুসিয়ানো ভিয়েতো। ২০১৪ সালে প্রথম শিরোপা জেতে রিয়াল। ২০১৮ সালে হ্যাটট্রিক করার পথে গড়ে সর্বোচ্চ শিরোপা জয়ের রেকর্ড। ছাড়িয়ে যায় ক্লাব বিশ্বকাপে বার্সেলোনার তিন ট্রফির কীর্তি। তৃতীয়বারের মতো কোচ হিসেবে এই শিরোপা জিতলেন কার্লো আনচেলত্তি। স্পর্শ করলেন স্প্যানিশ কোচ পেপ গুয়ার্দিওলাকে। ৬৬ শতাংশ সময় বল দখলে রাখা রিয়াল গোলের জন্য শট নেয় ১১টি, এর পাঁচটি ছিল লক্ষ্যে। এর প্রত্যেকটিই গেছে জালে। অন্য দিকে আল হিলালের আট শটের চারটি ছিল লক্ষ্যে। রাবাতে শুরু থেকে আল হিলালকে চেপে ধরে ইউরোপিয়ান চ্যাম্পিয়নরা। আক্রমণাত্মক ফুটবল উপহার দেওয়া দলটি শুরুর দিকেই পেয়ে যায় গোল। ত্রয়োদশ মিনিটে বেনজেমার বুদ্ধিদীপ্ত পাসে ডি-বক্সে বল পান ভিনিসিউস। চমৎকার ফিনিশিংয়ে বাকিটা সারেন তরুণ এই ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। পরের মিনিটেই সমতা প্রায় ফিরিয়ে ফেলেছিল সৌদি আরবের দলটি। আর্জেন্টাইন মিডফিল্ডার ভিয়েতোর শট বেরিয়ে যায় পোস্ট ঘেঁষে। ১৮তম মিনিটে ব্যবধান দ্বিগুণ করেন ভালভেরদে। লুকা মদ্রিচের নিচু ক্রস ঠিক মতো ক্লিয়ার করতে পারেননি আল মুয়াইওফ। পরে দুর্বল হেড করেন জাং হাইয়ুন-সু। বল পেয়ে যান ডি-বক্সে অপেক্ষায় থাকা অরক্ষিত ভালভেরদে। উরুগুয়ের এই মিডফিল্ডারের জোরাল শট ঠেকাতে পারেননি আলি আল-বুলাইহি। ঠিক সামনে দাঁড়িয়ে থাকা এক ডিফেন্ডারের জন্য বল দেখতেই পারেননি গোলরক্ষক। কিছুই করার ছিল না তার। ২৬তম মিনিটে প্রতি-আক্রমণ থেকে ব্যবধান কমান মারেগা। মোহাম্মদ কানোর চমৎকার পাস পেয়ে দ্রুত গতিতে এগিয়ে গিয়ে ডি-বক্সের মাথা থেকে জাল খুঁজে নেন মালির ফরোয়ার্ড। হাত ছোঁয়ালেও জালে যাওয়া ঠেকাতে পারেননি রিয়াল গোলরক্ষক আন্দ্রি লুনিন। ৪২তম মিনিটে দলকে আবার দুই গোলে এগিয়ে নেওয়ার সুযোগ হাতছাড়া করেন করিম বেনজেমা। ভালভেরদের চমৎকার ক্রসে বল পেয়ে শট লক্ষ্েয রাখতে পারেননি রিয়াল অধিনায়ক। দ্বিতীয়ার্ধের শুরুতেই আক্রমণে যায় রিয়াল, একটুর জন্য শট লক্ষ্েয রাখতে পারেননি টনি ক্রুস। তবে গোলের জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি ইউরোপের সফলতম দলটিকে। ৫৪তম মিনিটে ভিনিসিউসের দুর্দান্ত ক্রসে স্কোরলাইন ৩-১ করেন বেনজেমা। চার মিনিট পর দলকে তিন গোলে এগিয়ে নেন ভালভেরদে। দানি কারভাহালের নিখুঁত পাসে দারুণ ফিনিশিংয়ে বাকিটা সারেন উরুগুয়ের এই মিডফিল্ডার। প্রতি আক্রমণে মাঝে মধ্েয ভীতি ছড়ানো আল হিলাল ব্যবধান কমায় ৬৩তম মিনিটে। সৌদ আব্দুলহামিদের কাছ থেকে বল পেয়ে দূরের পোস্ট দিয়ে জাল খুঁজে নেন ভিয়েতো। ছয় মিনিট পর ভিনিউসের দ্বিতীয় গোলে স্কোর লাইন হয়ে যায় ৫-২। একটু আগে বদলি নামা দানি সেবাইয়োসের কাছ থেকে বল পেয়ে বাঁকানো শটে দূরের পোস্ট দিয়ে ঠিকানা খুঁজে নেন ব্রাজিলিয়ান ফরোয়ার্ড। ৭৯তম মিনিটে ব্যবধান কমান ভিয়েতো। সতীর্থের কাছ থেকে গোলমুখে বল পেয়ে ৩৬০ ডিগ্রি ঘুরে জাল খুঁজে নেন এই মিডফিল্ডার। দুই মিনিট পর ব্যবধান আরও কমানোর সুযোগ হাতছাড়া করেন মারেগা। বিপজ্জনক জায়গায় বল পেয়ে বিস্ময়করভাবে বাইরে মারেন এই ফরোয়ার্ড। বাকি সময়ে রিয়ালকে বেশ চাপে রাখে আল হিলাল। তবে রক্ষণ জমাট রেখে জয়ের হাসিতেই মাঠ ছাড়ে আনচেলত্তির দল।